বান্দরবানে ২ শিশু পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মো. আবু বক্কর (৪৬) পূর্বের নাম মংশৈপ্রু ত্রিপুরা ও মো. হাসান (২৫) প্রকাশ হুজুর নামে দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। আটককৃত মংশৈপ্রু ত্রিপুরার বাড়ি জেলা সদরের টাংকির পাহাড় বাসস্ট্যান্ড এলাকার। সে ওই এলাকার কৃপা মনি ত্রিপুরার ছেলে। সুমনের বাড়ি কুমিল্লা জেলার দাউকান্দি উপজেলার গৌরিপুর ইউনিয়নের মোল্লা বাড়ি গ্রামের। তার বাবার নাম গিয়াস উদ্দিন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ সময় চার শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধারকৃত শিশুরা হল, বেতছড়ামুখ পাড়ার বাসিন্দা সাউচিং মারমার মেয়ে নুসিংউ মারমা (১০), অংথোয়াইচিং মারমার মেয়ে মেসিংপ্রু মারমা (১৩), হেডম্যান পাড়ার বাসিন্দা সাচিংপ্রু মারমার ছেলে মংথুইহ্লা মারমা (৯) ও উহ্লাঅং মারমার মেয়ে মাসিংশৈ মারমা (১০)। তারা সবাই রোয়াংছড়ি উপজেলার।
পুলিশ ও স্থনীয়রা জানায়, রোববার সন্ধ্যার দিকে ৪ শিশুকে বৌদ্ধ ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করে ঢাকার একটি মাদরাসায় ভর্তির কথা বলে পাচার করার চেষ্টা করছে দুই ব্যক্তি এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা শহরে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় ট্রাফিক মোড় এলাকার একটি কম্পিউটার দোকান থেকে আবু বক্কর প্রকাশ মংশৈপ্রু ত্রিপুরা ও সুমন খিয়াং নামে দু‘জনকে আটকের চেষ্টা করলে পুলিশের টের পেয়ে পালিয়ে যায় সুমন খিয়াং। পরে মংশৈপ্রু ত্রিপুরাকে আটক করে পুলিশ। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ শহরের বাজার এলাকার আবাসিক হোটেল ‘অতিথি’ থেকে ৪ শিশুকে তাদের অভিভাবকসহ উদ্ধার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের মতে শহরের ইসলামপুর এলাকা থেকে মো. হাসান নামে আরো এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চার শিশুকে তাদের অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে, অভিযুক্ত পাচারকারী মংশৈপ্রু ত্রিপুরা বলেন, ২০০০ সালে তিনি মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার মুসলিম নাম আবু বক্কর। তার বাড়ি গ্রামের বাড়ি রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলি উপজেলার কিস্ত পাড়া। কিন্তু বর্তমানে বান্দরবান শহরের বাসস্ট্যান্ড নতুন নওমুসলিম পাড়ায় বসবাস করছেন।
শিশুদের অভিভাবক অংথোয়াই চিং মারমা ও উহ্লাঅং মারমা বলেন, লেখাপড়া শেখানোর কথা বলে প্রতিটি শিশুর জন্য এককালীন ৬ হাজার টাকা করে চাইছিল এ প্রতারক চক্রটি। ঢাকার মাদরাসায় নাকি বাংলা-ইংরেজি সববিষয়ে লেখাপড়া শেখানো হবে এবং যে যার ধর্ম পালন করতে পারবে। কিন্তু মাদরাসায় মুসলিম ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া করে। আমাদের শিশুরা কি শিখবে এ নিয়ে সংশয় থাকায় বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে পুলিশকে জানিয়েছি।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, লেখাপড়ার কথা বলে মূলত শিশুদেরকে পাচারের উদ্দেশ্যেই নেয়ার চেষ্টা করছিল। চার শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। আটক পাচারকারীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু পাচার আইনে মামলার হয়েছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।