২৮ নভেম্বর, ২০২৪ | ১৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  যারা ক্লাসে ৭০% উপস্থিত থাকবে না তাদের পরিক্ষায় অংশগ্রহন করতে দেওয়া হবে না- শাহাজাহান চৌধুরী   ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান

বাড়ছে অসন্তোষ, ভাসানচরে সমাধান দেখছে কক্সবাজারবাসী

কক্সবাজার সময় ডেস্কঃ মিয়ানমারে সহিংসতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঢলে নানামুখী সঙ্কটে পড়ছেন কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ অঞ্চলের স্থায়ী বাসিন্দারা। ফলে অনুপ্রবেশ শুরুর দুই মাসের মাথায় এসে এসব এলাকার বাঙালিদের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে অসন্তোষের, যা গণক্ষোভে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা করছে প্রশাসন।

আবার রোহিঙ্গা-বাঙালি দ্বন্দ্বে সংঘাতের আশঙ্কাও আছে প্রশাসনের মধ্যে। সার্বিকভাবে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি এখন নেতিবাচক দিকে যাচ্ছে বলে মনে করছেন কক্সবাজারের মানুষ। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফেরত পাঠানো অথবা নোয়াখালীর ভাসানচরে নিয়ে যাওয়াকেই সমাধান ভাবছেন কক্সবাজারের বাসিন্দারা।

উখিয়া-টেকনাফের স্থানীয় প্রশাসন রোহিঙ্গা-বাঙালি দ্বন্দ্ব তৈরি এবং এর কারণ উল্লেখ করে সম্প্রতি সরকারের উচ্চপর্যায়ে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.নিকারুজ্জামান বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে আমরা নিয়মিত রিপোর্ট পাঠাচ্ছি। দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য যতটুকু সম্ভব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

উখিয়ার ইউএনও জানান, উখিয়ায় বাঙালি আছে প্রায় ৩ লাখ। রোহিঙ্গা আছে প্রায় ৬ লাখ। তবে বাস্তবে আরও কিছু বেশি। বাঙালির তুলনায় রোহিঙ্গা বেড়ে যাওয়াকে বড় সমস্যা মনে করছেন এই কর্মকর্তা।

আর টেকনাফ উপজেলায় ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে বাঙালি আছে ২ লাখ ৬৪ হাজার ৩৮৯ জন। রোহিঙ্গা আছে ২ লাখ ২০ হাজারের মতো।

টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন সিদ্দিক বলেন, বাঙালি এবং রোহিঙ্গা টেকনাফে প্রায় সমান হয়ে যাচ্ছে। সব কারণ মুখে বলা যাবে না, তবে এটা অ্যালার্মিং। প্রশাসন বাঙালিদের মধ্যে হতাশা ও দ্বন্দ্ব তৈরির ক্ষেত্রে কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে আছে, যানবাহনের ভাড়া ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া এবং রোহিঙ্গাদের কম মজুরিতে বিভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়া।

উখিয়ার ইউএনও নিতারুজ্জামান বলেন, পণ্যের দাম সহনীয় করতে মোবাইল কোর্ট চালুর উদ্যোগ আমরা নিচ্ছি। রোহিঙ্গাদের জন্য স্থানীয় দিনমজুররা বেকার হতে বসেছেন। এটা নিয়ে কি করা যায় সেটা আমরা দেখছি।ছবি: সোহেল সরওয়ার-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

টেকনাফের ইউএনও জাহিদ হোসেন সিদ্দিক জানান, গরিব লোকজনকে ত্রাণের আওতায় আনা হচ্ছে। এছাড়া রোহিঙ্গারা যাতে কোন পেশায় জড়াতে না পারে, সেটাও দেখছে প্রশাসন।

পুলিশ সূত্রমতে, রোহিঙ্গাদের দোকান বসাতে না দেওয়া, বনের গাছ কাটতে না দেওয়া, জমি দখল করে ঘর তৈরিতে বাধা দেওয়া এসব নিয়ে সংঘাত এখন উখিয়া-টেকনাফে নিয়মিত ঘটনা। গত ২৩ দিনে পুলিশ ২৩টি ঘটনা রেকর্ড করেছে যার মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তা রোহিঙ্গাদের হাতে আহত হওয়ার ঘটনাও আছে।

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাহমুদুল হক চৌধুরী বলেন, অসন্তোষ বাড়ছে। গণঅসন্তোষ একসময় গণক্ষোভে পরিণত হবে। এতে যে সংঘাত সৃষ্টি হবে, সেটা সামলানো দায় হয়ে পড়বে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কমিটির উপদেষ্টা আদিল চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফেরত পাঠানোই সংকটের একমাত্র সমাধান। তবে সেটা যদি এই মুহূর্তে সম্ভব না হয়, তাদের দ্রুত ভাসানচরে নিয়ে যেতে হবে। তাদের সংরক্ষিত এলাকার মধ্যেই রাখতে হবে। এর বাইরে অবাধ বিচরণের সুযোগ তাদের দেওয়া যাবে না। আর সরকারের উচিৎ ফেরত পাঠানোর বিষয়ে এই মুহূর্তে পদক্ষেপ আরও জোরালো ও দৃশ্যমান করা। দলমত নির্বিশেষে সবার উচিৎ সরকারের পাশে দাঁড়ানো।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।