কক্সবাজার সময় ডেস্কঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কৌশল কী, তা জানতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিএনপি নির্বাচন ঠেকাতে চায়, না অংশ নেবে; সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেলে আওয়ামী লীগের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সহজ হবে বলে মনে করছেন দলটির নীতি-নির্ধারকরা।এছাড়া, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলার রায়-পরবর্তী পরিস্থিতে তাদের পরিকল্পনা জানাও আওয়ামী লীগের জন্যে খুবই গুরত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন দলটির নীতি-নির্ধারকরা।
ক্ষমতাসীন দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের মতে, খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের পর বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান কী হতে পারে, তা জানতে পারলে সরকার ও আওয়ামী লীগের পক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হবে। আর তাই তাদের কৌশল জানা এই মুহূর্তে সরকারের জন্যে গুরুত্বের বিষয় হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, বিএনপির কৌশল জানতে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাকে কাজে লাগানো হয়েছে। ইতোমধ্যে গোয়ন্দা সংস্থার বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যরা বিএনপির কৌশল জানতে দলটির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। এছাড়া বিভিন্ন অভিযোগে ইতোমধ্যে বিএনপির যেসব নেতাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, তাদের কাছ থেকেও তথ্য বের করে আনার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কৌশল জানতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতারাও চেষ্টা করছেন। বিএনপির নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে, এমন নেতারা এই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।পাশাপাশি টক শো-তে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপির নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করছেন।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্র জানায়, একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেওয়ার অবস্থানে থাকলে, তাদের ওপর এক ধরনের মনোভাব দেখানো হবে, অংশ না নিলে আরেক ধরনের মনোভাব গ্রহণ করা হবে। এজন্য বিএনপির কৌশল জানা আওয়ামী লীগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির প্রতি দুই ধরনের মনোভাব আগে থেকেই নিয়ে রেখেছে ক্ষমতাসীনরা। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অবস্থানে বিএনপি থাকলে কৌশলী ভূমিকা অর্থাৎ নরম পদক্ষেপে এগুবে সরকার। আবার নির্বাচনে না গিয়ে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন ঠেকানোর পথে হাঁটলে সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থান নেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের। তবে ক্ষমতাসীন দলের নীতি-নির্ধারকরা মনে করেন, খালেদা জিয়া দণ্ডিত হলে বিএনপি নির্বাচন ঠেকানোসহ বয়কট করারই ঘোষণা দিতে পারে। আর তখনই কঠোর পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ক্ষমতাসীনদের জন্য সহজ হয়ে উঠবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘আমরা আশা করি, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে। তবে এর বাইরে বিকল্প কিছু ভাবলে দলটির পরিণতি ভয়াবহ হবে।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি নিশ্চয়ই সে পথে হাঁটবে না। দলটি গণতান্ত্রিক আচরণ করলে একটি রাজনৈতিক দল যেসব গণতান্ত্রিক সুযোগ-সুবিধা পায় সরকারের কাছে, বিএনপিও তার সবই পাবে।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিএনপির আচার-আচরণই নির্ভর করবে বিএনপি কতটুকু গণতান্ত্রিক সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার যোগ্য। তারা গণতন্ত্র হত্যার চক্রান্ত করলে উপযুক্ত জবাব পাবে।’ গণতন্ত্র রক্ষায় সহযোগিতা করলে প্রাপ্য সুবিধা পাবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।