কক্সবাজার সময় ডেস্কঃ খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শিগগিরই কর্মসূচি ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২০ দলীয় জোট। পাশাপাশি জোটের শরিক দলগুলো বিএনপির কর্মসূচিতে দলীয় ব্যানারে অংশ নেবে।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের বৈঠক শেষে একাধিক শরিক নেতা এ কথা নিশ্চিত করেন। বৈঠকটি ৫টায় শুরু হয়ে মাগরিবের আজানের আগে শেষ হয়।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক শরিক নেতা জানান, বৈঠকের শুরুতেই লন্ডন থেকে তারেক রহমান টেলিফোনে নেতাদের উদ্দেশে কথা বলেন। তিনি জোটের ঐক্য আরও জোরদার করার আহ্বান জানান।
সূত্র জানায়, শরিক দলগুলোর নেতারাই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কথা জানান। পরে তিনি সায় দেন।
বৈঠকের পরপরই নেতারা ব্যানার-ফেস্টুনের অর্ডার দেওয়া শুরু করেন বলে জানান কয়েকজন নেতা।
বৈঠকে অংশ নেওয়া এক শরিক নেতার সন্দেহ, ভেতরে-ভেতরে সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে পারে বিএনপি। তিনি মির্জা ফখরুলসহ অন্য কয়েকজন নেতার মনোভাবে এ সন্দেহ পোষণ করেন। যদিও এ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সভায় সর্বসম্মতিক্রমে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তার প্রথমটি হচ্ছে: সম্পূর্ণ মিথ্যা, সাজানো মামলায় জাল একটি নথির উপর ভিত্তি করে জোটের নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলার রায় দিয়ে পাঁচ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। জোটের নেতারা বৈঠক এতে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছেন। একইসঙ্গে খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়ার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন। ‘
‘২০ দলীয় জোটের সভায় বিএনপি যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, সেই কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করা হয়েছে। এবং অদূর ভবিষ্যতে ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে কর্মসূচি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নেতারা। তিনি দিনের যে কর্মসূচি (বিক্ষোভ, অবস্থান ও অনশন) আছে, এতে শুধু একাত্মতা ঘোষণাই নয়, অংশগ্রহণের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জোট নেতারা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রীর রায়কে কেন্দ্র করে সারাদেশে অসংখ্য নেতাকর্মী গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীও রয়েছেন। তাদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান ও দাবি জানানো হয়েছে। ৮ তারিখের দেশনেত্রীর রায়ের পর যারা আহত হয়েছেন তাদের প্রতি সহানুভূতি জানানো হয়েছে।’
২০ দলীয় জোটের ঐক্য আরও প্রসারিত করার জন্য অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলা হবে জানিয়ে তিনি বলেন,‘সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বক্তব্য রেখেছেন। তার আহ্বান এসেছে জনগণের জোট তৈরি করার একটা প্লাটফর্ম তৈরি করা, আর খালেদা জিয়া শেষ সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় ঐক্যের কথা বলেছেন, জোটের নেতারা এই বক্তব্য সমর্থন করেছেন। ‘
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সব দলকে কাজ করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। শেষে ২০ দলীয় ঐক্যজোট এই স্বৈরাচারী সরকারের গণতন্ত্রবিরোধী যে কর্মকাণ্ড, তার তীব্র নিন্দা করেছে। এবং আসন্ন নির্বাচন যেন সব দলের অংশগ্রহণে হতে পারে, এজন্য নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সহায়ক সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন পরিচালনায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানো হয়েছে।
‘এবং অবিলম্বে খালেদা জিয়াসহ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গ্রেফতার করা নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করা হয়েছে। সব মিথ্যা মামলা, রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।’
২০ দলীয়ে জোটের নেত্রী কারাগারে সেক্ষেত্রে জোটের প্রধান কে— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জোটনেত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে থাকুক বা যেখানেই থাকুক, তিনিই জোটের নেত্রী। তিনিই ২০ দলের নেত্রী। এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নাই। সমন্বয়ক হিসেবে আমি কাজ করেছিলাম। এখনও করছি।’
খালেদা জিয়ার জামিন প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আইনগত প্রক্রিয়া কত দূর এগিয়েছে সঠিক বলতে পারছি না, সার্টিফাইড কপি এখনও পাওয়া যায়নি।’
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।