মামলা, নাশকতা, দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড, দুর্নীতি প্রভৃতি অভিযোগে দুই শতাধিক ব্যক্তির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বিএনপি-জামায়াতের শতাধিক নেতা রয়েছে। পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, দেশের সব বিমানবন্দর ও সীমান্ত চেকপোস্টে এসব ব্যক্তিদের নামের তালিকা ঝুলছে। তারা যেন দেশত্যাগ করতে না পারে সে জন্য প্রতিটি স্থানে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
মাসখানেক আগে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় বলে পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের আটক করতে নতুন করে দিকনির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
পুলিশ সদর দপ্তরের একজন ডিআইজি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ আমরা কার্যকর করছি। যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আছে তারা যেন দেশত্যাগ করতে না পারে সে জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক আছে। ’
সূত্র জানায়, যেসব ব্যক্তির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তাদের ছবিসহ জীবনবৃত্তান্ত ও পাসপোর্ট নম্বর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সীমান্ত এলাকার চেকপোস্টগুলোতে দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার কারণও উল্লেখ করা আছে। বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের নামই বেশি। এ ছাড়া কিছু বিতর্কিত ব্যক্তির নাম রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার তালিকার ব্যক্তিদের মোস্ট ওয়ানটেড হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগের মামলাই বেশি।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, মাসখানেক আগে নতুন করে অন্তত দুই শ ব্যক্তির ওপর দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তারা যেন দেশ ছেড়ে যেতে না পারে সে জন্য বিমানবন্দর ও সীমান্ত এলাকায় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে বিমানবন্দরগুলো নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার তালিকায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, ডক্টর খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা শফিক রেহমান, যুবদলের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, সাবেক সংসদ সদস্য আসিফা আশরাফী পাপিয়া, খায়রুল কবীর খোকন, রেহেনা আক্তার রানু, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মীর সরাফত আলী সপু, ফজলুল হক মিলন, সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আজিজুল বারী হেলাল প্রমুখ রয়েছেন।
এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- আমির মকবুল আহমাদ, ঢাকা মহানগর আমির মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক তাসনিম আলম, সাবেক সংসদ সদস্য হামিদুর রহমান আযাদ, শামসুল ইসলাম ও ডাক্তার আবদুল্লাহ আবু তাহের।
ইমিগ্রেশন পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার তালিকা অনেক দীর্ঘ। এসব ব্যক্তির ব্যাপারে ইমিগ্রেশন সতর্ক রয়েছে। তালিকায় বিতর্কিত ব্যবসায়ী, ব্যাংকার, রাজউক-তিতাসসহ বেশ কয়েকটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড ও দুর্নীতির অভিযোগ আছে। হলমার্ক গ্রুপের চার কর্মকর্তা, সোনালী ব্যাংকের ১২ কর্মকর্তা, ডেসটিনি গ্রুপের ১২ কর্মকর্তাসহ ৫৭ জন এ তালিকায় রয়েছেন।
এরআগে, বৃহস্পতিবার সকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমানকে যুক্তরাজ্যে যেতে দেওয়া হয়নি। জানা যায়, তার ওপরও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।