২৮ নভেম্বর, ২০২৪ | ১৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  যারা ক্লাসে ৭০% উপস্থিত থাকবে না তাদের পরিক্ষায় অংশগ্রহন করতে দেওয়া হবে না- শাহাজাহান চৌধুরী   ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান

বিনা রশিদে নেয়া মাসে ‘৪০ লাখ টাকা’ জমা হয় কোন খাতে !

Passport Officer-3 coxs bazar

নতুন পাসপোর্ট করার জন্য রাষ্ট্রয়ত্ব সোনালী ব্যাংকে নির্দিষ্ট হারে ফি জমা দিয়ে রশিদসহ আবেদনপত্র জমা দিতে গেলেই ঘটে বিপত্তি। আবেদনের সাথে সংযুক্ত প্রয়োজণীয় কাগজপত্র সঠিক থাকার পরেও প্রতি পাসপোর্ট আবেদন ফরমের সাথে আরো অতিরিক্ত দেড় হাজার টাকা দিতে হয়। কাগজপত্র ভুঁয়া বা রোহিঙ্গা হলে বেড়ে যায় উৎকুচের হার।
উচ্চমান সহকারী আবু হানিফ মোস্তফা কামাল কিংবা দালাল চক্রের মাধ্যমে নেয়া হয় এ অর্থ। তাও আবার বিনা রশিদে। এই হচ্ছে কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নিত্য দিনের চালচিত্র। দৈনিক বৈধ ও অবৈধ নতুন সাধারণ বা জরুরী অথবা হালনাগাদ করার পাসপোর্ট ফরম জমা পড়ে শতাধিক। এ হিসেবে সরকারী ছুঠিদিন বাদে প্রতি মাসে ২০কর্মদিবসে অবৈধ ভাবে ঘুষ হিসেবে নেয়া হচ্ছে ৪০ লাখ টাকা। জনমনে প্রশ্ন এ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার কিংবা উন্নয়ন খাতে জমা না হয়ে কোন খাতে জমা হচ্ছে।
কক্সবাজার পাসপোর্ট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেনের ঘটনা নতুন নয়। ২০০৯ সালের জুন মাসে যাত্রা করা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের অধীনে এ দপ্তরের দুর্নীতি চলে আসছে ধারাবাহিক ভাবে। কক্সবাজার অঞ্চলের অধিবাসীদের ওই সময় হাতে লেখা পাসপোর্ট প্রদান এর মাধ্যমে কার্য্ক্রম অব্যাহত রাখে। পরবর্তীতে “মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ও ভিসা প্রকল্প’’ এর আওতাভুক্ত হয় ২০১১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট চালু করা হয়। এর পর থেকে কক্সবাজার অঞ্চলের অধিবাসীদের পাসপোর্ট সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।
কক্সবাজার জেলায় বিদেশ গমনেচ্ছুক শত শত যুবক, যুবতী, বৃদ্ধ নারী পুরুষ নতুন পাসপোর্ট করার আবেদন ফরম জমা দিতে যান। সরকারী নিয়মানুযায়ী বাংলাদেশের বৈধ নাগরিক পাসপোর্টের আবেদন করতে পারবে। এই পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্টের আবেদনপত্র গ্রহন ও নিষ্পত্তিকরণ কাজ করা হয়। জরুরী ও সাধারণ দুই ধরনের পাসপোর্ট তৈরির আবেদন ফরম জমা নেয়া হয়। জরুরী পাসপোর্ট পুলিশ প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে ১১ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হয়। সাধারণ: পুলিশ প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে ২১ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হয়। কিন্তু এখানে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে সরকারী নিয়মনীতি সম্পূর্ণ বিপরীত কর্মকান্ড।
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে অর্ধশত দালাল চক্র। এসব দালালদের দালালিপনা মজবুত করতে কথিত সমিতিও রয়েছে। অবৈধ আয়ের জন্য অফিসের কর্মকতা ও কর্মচারীরাই দালাল সৃষ্টি করেছে। এছাড়া কিছু আনসার ও কয়েকজন নিম্নপদস্থ কর্মচারীও সরাসরি দালালিতে জড়িত রয়েছে এখানে।
কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের তিনজন কর্মকর্তা যথাক্রমে সহকারী পরিচালক শরিফুল ইসলাম, উপ-সহকারী পরিচালক শওকত কামাল ও উচ্চমান সহকারী আবু হানিফ মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্টর আবেদন ফরম গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। মোটা অংকের টাকা নিয়েই চুক্তি ভিত্তিক ভুয়া আইডি কার্ড, জন্ম নিবন্ধন সনদ ও চেয়ারম্যান সনদ সম্বলিত আবেদন ফরম জমা করতে সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করার একাধিক তথ্য প্রমাণ সহ অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৈধ হোক আর অবৈধ হোক ফরম জমা করতে গেলেই ১৫০০ টাকা বিনা রশিদে জমা দিতে হচ্ছে সেখানে। কথিত চ্যালেন ফি (দালালদের উদ্ভাবিত সাংকেতিক নাম) হিসেবে ধরা হয়। আসলে সরকারী ভাবে এর কোন অস্থিত্ব নেই। কর্মকর্তারও তা স্বীকার করেন না।
কয়েকজন ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, আমরা সরকারকে নির্ধারিত ফি ব্যাংকে জমা দিয়ে পাসপোর্ট ফরম জমা দিতে যাই। কিন্তু বিনা রশিদে দেড় হাজার টাকা জিম্মি করেই আদায় করা হয়।
চ্যানেল ফি’র নামে দেড় হাজার টাকা না দিলেই ফরমে বিভিন্ন খোত বের করা হয়। ভুল ধরা হয় একাধিক তথ্যে। টাকা দিলেই সব ভুল মাপ। এটা কোন ধরনের সরকারী নিয়ম।
সহকারী পরিচালক শরিফুল ইসলাম আর উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ শওকত কামাল এর মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্ধ আর চেয়ার দখল নিয়ে রশি টানাটানি দীর্ঘদিন ধরে চলছে। দুই কর্মকর্তার বিরোধ নিয়ে ফায়দা লুটছে উচ্চমান সহকারী আবু হানিফ মোস্তফা কামাল ও সংঘবদ্ধ দালাল চক্র।
এব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য অফিসের টিএন্ডটি ফোনে একাধিবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সহকারী পরিচালক শরিফুল ইসলাম ফোন রিসিভ করেননি। একই ভাবে উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ শওকত কামাল ও উচ্চমান সহকারী আবু হানিফ মোস্তফা কামাল ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার রিং করার পরেও রিসিভ না করার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।