২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি

বেড়েই চলেছে ধর্ষণ

দেশব্যাপী হঠাৎ বেড়ে গেছে ধর্ষণের ঘটনা। ধর্ষকের লোলুপ দৃষ্টি থেকে বাদ যাচ্ছে না শিশু ও বৃদ্ধরাও। এমনকি রেহাই পাচ্ছেন না বাকপ্রতিবন্ধী বা ভবঘুরে পাগলও।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে চরম নৈতিক অবক্ষয়, আকাশ সংস্কৃতি, মাদকের বিস্তার, বিচারহীনতা, বিচার প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা ও বিচারের দীর্ঘসূত্রতা।

গত মার্চে ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে মাদ্রাসার প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে। পরে থানায় অভিযোগ করলে প্রিন্সিপালের পরিকল্পনায় ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যার চেষ্টা করে তার অনুসারীরা। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় নুসরাত। এছাড়াও ৬ মে এক নার্সকে চলন্ত বাসে ধর্ষণ করে নির্মমভাবে হত্যা করে বাসচালক ও সহকারীরা।

চলতি মাসে নারায়ণঞ্জের একটি মাদ্রাসা এবং হাইস্কুলে একাধিক ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকের বিরুদ্ধে। রাজধানীতেও ছাদ দেখানোর কথা বলে শিশু সায়মাকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ইতিমধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে।

গা শিউরে ওঠার মতো এমন ধর্ষণের খবর প্রতিনিয়তই গণমাধ্যমে উঠে আসছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পত্রিকার খবরের বাইরেও প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা ঘটছে।

শিশুর সংখ্যাই বেশি

প্রতিদিনই খবরের কাগজ উল্টালেই ধর্ষণের একাধিক খবর। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টার শিকার হয়েছে ৩৯৯টি শিশু। ছয়টি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত ৪০৮টি সংবাদ বিশ্নেষণ করে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) এ তথ্য তুলে ধরেছে। অন্যদিকে একই সময়ে সারা দেশে ৪৯৬টি শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম (বিএসএএফ)। ১৫টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সম্প্রতি ‘শিশু অধিকার লঙ্ঘন’ শীর্ষক এ উপাত্ত প্রকাশ করে সংস্থাটি।

সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনা তুলে ধরা হল। জুলাই মাসের সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের ঘটনাটি হল রাজধানীর ওয়ারিতে সাত বছরের শিশু সায়মাকে ধর্ষণের পর হত্যার বিষয়টি। এ ঘটনায় ৭ জুলাই নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থেকে অভিযুক্ত হারুনকে গ্রেফতার করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার সদস্যরা। আসামির জবানবন্দিতে জানা গেছে, ৫ জুলাই বিকালের দিকে ছাদ দেখানোর কথা বলে সায়মাকে ছাদে নিয়ে যায় হারুন। এরপর সে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করলে সায়মা চিৎকার দেয়। এ সময় সে সায়মার মুখ চেপে ধরে এবং ধর্ষণ করে। পরে সায়মাকে হত্যা করে ফ্ল্যাটের একটি ঘরে লাশ রেখে পালিয়ে যায় হারুন।

আর গত মাসের সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে ৬ মে। সেদিন রাতে ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার বাহেরচর গ্রামে যাওয়ার উদ্দেশে স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন বাহেরচর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে ঢাকার কল্যাণপুরে অবস্থিত ইবনেসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্টাফ নার্স শাহিনূর আক্তার তানিয়া।

পরে মেয়েটিকে একা বাসে পেয়ে বাসের চালক নূরুজ্জামান, হেলপার লালনসহ আরও একজন বাজিতপুর উপজেলার বিলপাড় গজারিয়া নামক স্থানে চলন্ত বাসে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে ড্রাইভার, হেলপারসহ অন্যরা তাকে গলায় ওড়না প্যাঁচিয়ে হত্যা করে। সংশ্লিষ্টদের বিচারিক কার্যক্রম চলছে। ওইদিনই সাভারের আশুলিয়ায় একই পরিবারের মা, মেয়েসহ ৩ নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক ভণ্ড পিরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

চলতি সপ্তাহে মাদারীপুরে দিপ্তী আক্তার নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার পর মুখ পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। নিখোঁজের দু’দিন পর শনিবার শহরের পাকদী এলাকার একটি পুকুর থেকে ওই ছাত্রীর বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। খবর পেয়ে ১৪ জুলাই সকালে নিহতের স্বজনরা মাদারীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করে। একই দিন বরিশালে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে দুই বন্ধুকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

১২ জুলাই নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় বাইতুল হুদা ক্যাডেট মাদ্রাসার ১২ ছাত্রীকে নিপীড়নের অভিযোগে গ্রেফতার মাদ্রাসা অধ্যক্ষ আল আমিন দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। পৃথক দুটি মামলায় উল্লেখ আছে- মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালে একাধিক ছাত্রীকে মূলত পানিপানের প্রলোভনে ঘরে ডেকে নিতেন আল আমিন। এছাড়া বইপত্র গোছানোসহ নানা ইস্যুতে ছাত্রীদের নিজের ঘরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করতেন।

এসব ঘটনার সময় আল আমিনের স্ত্রী বাসায় থাকতেন না। মূলত তার অবর্তমানেই এসব অনৈতিক কাজ হতো। মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন ছাত্রীর ছবি তুলে সেই ছবির মাথা কেটে অন্য দেহে পর্নোগ্রাফি ছবির সঙ্গে যুক্ত করতেন আল আমিন। আর এসব ছবি দেখিয়ে ওই ছাত্রীদের ব্ল্যাকমেইলিং করা হতো।

১০ জুলাই কুমিল্লার র‌্যাব ১১, সিপিসি-২ এর একটি দল ডাক্তার নামধারী সিরিয়াল ধর্ষক মীর হোসেনকে গ্রেফতার করে

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।