প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ হয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। প্রায় সবাই উইকেট বিলিয়ে আসায় ঢাকা টেস্ট পঞ্চম দিন পর্যন্ত নিতে পারেনি স্বাগতিকরা। চতুর্থ দিনের খেলা শেষের আগেই দ্বিতীয় টেস্টে ৩২৮ রানে হেরে পাকিস্তানের কাছে সিরিজও খুইয়েছে মুশফিকুর রহিমের দল।
শনিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১ উইকেটে ৬৩ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। ম্যাচ বাঁচাতে পুরো দুটি দিন কাটিয়ে দিতে হতো তাদের। অথবা আরও ৪৮৭ রান করে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে হতো তাদের। এর কোনোটিরই ধারে কাছে যেতে পারেননি তামিম ইকবাল-সাকিব আল হাসানরা।
প্রতিরোধ গড়তে আগের টেস্টেই দ্বিশতক করা তামিম ইকবালের দিকে তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দিনের শুরুতেই তার উইকেট হারিয়ে বড় একটা ধাক্কা খায় স্বাগতিকরা।
ইমরান খানের অফস্টাম্পের অনেক বাইরের একটি বল তাড়া করতে গিয়ে উইকেটরক্ষকের গ্লাভসবন্দি হয়ে ফিরে যান তামিম। এরপর মাহমুদউল্লাহকেও ফিরিয়ে দেন ইমরান।
প্রথম ইনিংসে অপরাজিত ৮৯ রানের চমৎকার ইনিংস খেলা সাকিব হতাশ করেছেন দ্বিতীয় ইনিংসে। মোহাম্মদ হাফিজের বল উড়িয়ে সীমানা ছাড়া করতে গিয়ে ওয়াহাব রিয়াজের ক্যাচে পরিণত হন ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট করতে থাকা এই অলরাউন্ডার।
টেস্টে সিরিজটা ব্যাট হাতে ভালো কাটেনি অধিনায়ক মুশফিকের। শনিবার সিরিজে দ্বিতীয়বারের মতো শূন্য রানে ফিরেন এই ব্যাটসম্যান। এই টেস্টে পাকিস্তানের সেরা বোলার ইয়াসির শাহর বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি।
দ্বিতীয় সেশনের প্রথম দুই ওভারে একটি করে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই ফিরে যান সৌম্য সরকার। ওয়াহাব রিয়াজের বলে উইকেটরক্ষকের গ্লাভসবন্দি হন তিনি।
টানা একাদশ টেস্টে শতক করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান ভিভ রিচার্ডসের পাশে বসেন মুমিনুল হক। কিন্তু নিজের ইনিংস খুব একটা বড় করতে পারেননি তিনি। শচিন টেন্ডুলকারকে ছাড়ানো অর্ধশতকের পরপরই ইয়াসিরের শিকারে পরিণত হন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
অন্য প্রান্তে শুভাগত হোম চৌধুরী থাকলেও রান তোলার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিতে চেয়েছিলেন তাইজুল ইসলাম। তার প্রচেষ্টা খুব একটা সফল হয়নি। লেগস্পিনার ইয়াসিরের বলে সামি আসলামকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি।
মুমিনুলের বিদায়ের পরই খেলা পঞ্চম দিনে নিয়ে যাওয়ার আশা শেষ হয়ে যায় স্বাগতিকদের। মোহাম্মদ শহীদকে নিয়ে এরপর পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছেন কেবল শুভাগত।
শুভাগতকে বোল্ড করে বাংলাদেশ সফরে পাকিস্তানের একমাত্র জয়টি নিশ্চিত করেন জুনায়েদ খান।
বাংলাদেশ সফরে শেষ ম্যাচে এসে জয় পেল পাকিস্তান। এই জয়ে ১-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে তারা। এর আগে ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে ও ১-০ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ৫৫৭/৮ ইনিংস ঘোষণা, (হাফিজ ৮, সামি ১৯, আজহার ২২৬, ইউনুস ১৪৮, মিসবাহ ৯, শফিক ১০৭, সরফরাজ ২১*, ওয়াহাব ৪, ইয়াসির ০; তাইজুল ৩/১৭৯, শহীদ ২/৭২, শুভাগত ২/৭৬, সাকিব ১/১৩৬) এবং ১৯৫/৬ ইনিংস ঘোষণা, (হাফিজ ০, সামি ৮, আজহার ২৫, ইউনুস ৩৯, মিসবাহ ৮২, শফিক ১৫, সরফরাজ ১৮*; শহীদ ২/২৩, মাহমুদউল্লাহ ১/৮, শুভাগত ১/১৮, সৌম্য ১/৪৫, তাইজুল ১/৫৬)
বাংলাদেশ: ২০৩ (তামিম ৪, ইমরুল ৩২, মুমিনুল ১৩, মাহমুদউল্লাহ ২৮, সাকিব ৮৯*, মুশফিক ১২, সৌম্য ৩, শুভাগত ০, তাইজুল ১৫; ইয়াসিন ৩/৫৮, ওয়াহাব ৩/৭৩, জুনায়েদ ২/২৬, হাফিজ ১/১৩) এবং ২২১ (তামিম ৪২, ইমরুল ১৬, মুমিনুল ৬৮, মাহমুদউল্লাহ ২, সাকিব ১৩, মুশফিক ০, সৌম্য ১, শুভাগত ৩৯, তাইজুল ১০, শহীদ ১৪*; ইয়াসির ৪/৭৩, ইমরান ২/৫৬, হাফিজ ১/৩, ওয়াহাব ১/৩৬, জুনায়েদ ১/৪৫)
ম্যাচ সেরা: আজহার আলি
সিরিজ সেরা: আজহার আলি
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।