বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দলের ‘ভিশন ২০৩০’ নামের রূপকল্প ঘোষণা করেছেন। আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে আমন্ত্রিত দেশি-বিদেশি অতিথি ও দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সম্পাদকদের উপস্থিতিতে বিএনপির রূপকল্প ঘোষণা করা হয়।
বিকেল সাড়ে চারটায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমন্ত্রিত অতিথিরা আসন গ্রহণ করলেও খালেদা জিয়া সভাস্থলে আসেন ২০ মিনিট পর। খালেদা জিয়ার সভাস্থলে প্রবেশের সময় ছাত্রদলের কর্মীরা সভাস্থলে প্রবেশের জন্য হট্টগোল বাধিয়ে দেন। এরপর বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা পরিস্থিতি শান্ত করেন। যদিও সভাস্থলে ছাত্রদলের জন্য নির্ধারিত আসন বরাদ্দ ছিল না।
এর আগে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে বিএনপির গণমাধ্যম শাখার (প্রেস উইং) কর্মীদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝি হয়। গণমাধ্যমকর্মীরা একটি জায়গায় আসন গ্রহণ করেন। পরে সেখান থেকে তাঁদের উঠিয়ে দিয়ে আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথিদের বসার জায়গা করে দেওয়া হয়। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীরা এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে হট্টগোল বেধে যায়। পরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে অতিরিক্ত আসনের ব্যবস্থা করেন।
পরে দলের ‘ভিশন ২০৩০’ বিষয়ে ছাপানো পুস্তিকা বিতরণের সময়ও হট্টগোল বাধে। গণমাধ্যমকর্মীরা পুস্তিকা পাওয়ার জন্য নিজের আসন ছাড়লে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তখন বিএনপির কর্মীরা পুস্তিকা না দিয়ে চলে যান। এতে অনেক গণমাধ্যমকর্মী পুস্তিকাটি পাননি। এরপর বিকেল ৪টা ৫০ মিনিট থেকে শুরু করে সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া একটানা দুই ঘণ্টা ‘ভিশন ২০৩০’ উপস্থাপন করেন। দু-একটি উপধারা ছাড়া সব ধারা তিনি পড়ে শোনান। মোট ৩৭টি বিষয়ের ওপর ২৫৬টি উপধারা রয়েছে।
রূপকল্প ঘোষণাকালে খালেদা জিয়া দেশের মাথাপিছু আয় পাঁচ হাজার ডলারে উন্নীত করার কথা বলতে গিয়ে ভুল করে ৫০০ ডলারে উন্নীত করার কথা বলেন। এ সময় দলের নেতা-কর্মীরা বিষয়টি দলীয় প্রধানের নজরে আনলে তিনি বিষয়টি শুধরে নেন। রূপকল্প ঘোষণার পর অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হলে গণমাধ্যমকর্মীরা প্রশ্ন করার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এতে সাড়া পাওয়া যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে বিদেশি কূটনীতিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাপান, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, চীন, পাকিস্তান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া ও কাতারের প্রতিনিধিরা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, তরিকুল ইসলাম, জমির উদ্দিন সরকার, মাহবুবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম মিয়া, এম কে আনোয়ার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নজরুল ইসলাম খান।
দলের ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে ছিলেন আবদুল্লাহ আল নোমান, শাহজাহান ওমর, আবদুল মান্নান, এ জে মোহাম্মদ আলী, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, খন্দকার মাহবুব হোসেন, রুহুল আমিন চৌধুরী, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, সেলিমা রহমান প্রমুখ। এ ছাড়া চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাদের মধ্যে ছিলেন আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালি, তাজমেরী এস এ ইসলাম ও অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া।
বিএনপি জোটের শরিক দলের নেতাদের মধ্যে ছিলেন আন্দালিব রহমান পার্থ, শফিউল আলম প্রধান, সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহীম, জেবেল রহমান, ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মুফতি ওয়াক্কাস, মোস্তফা জামাল হায়দার, মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মনি, এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান, আজহারুল ইসলাম এবং সাঈদ আহমেদ।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।