আজ মহান স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতার ৪৯তম বার্ষিকী। বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবের দিন, পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন দেশবাসীকে। সেই ঘোষণার আলোকেই মরণপণ লড়াই এবং রক্তসমুদ্র পাড়ি দিয়ে বীর বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে জাতীয় ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন– স্বাধীনতা। সেই স্বাধীনতার আজ ৪৯ বছর।
সুদীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দুইশ’ বছরের ব্রিটিশ-বেনিয়া শাসনের অবসানের পর ২৪ বছর ধরে চলে বিজাতীয় ভাষাভাষী গোষ্ঠীর শাসন-শোষণ ও আগ্রাসন। ’৪৭-এর দেশভাগের পর পাকিস্তানি শাসকদের নানা কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বাঙালির সংগ্রামের চেতনার উন্মেষ ঘটতে থাকে। মাতৃভাষার দাবিতে ’৪৮ সাল থেকে শুরু করে ’৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারির রক্তদান, সংগ্রাম-আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে রায়, ’৫৬-তে এসে সংবিধানে রাষ্ট্রভাষা বাংলার স্বীকৃতি আদায়, ’৬২-এর শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, ’৬৬-এর ৬ দফার মধ্য দিয়ে বাঙালির মুক্তির সনদ ঘোষণা, ’৬৯-এর ছাত্রদের ১১ দফা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের বিদায় এবং ’৭০-এ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারাবাহিকতায়ই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এসেছে স্বপ্নের স্বাধীনতা।
করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে এ বছর বাতিল করা হয়েছে স্বাধীনতা দিবসের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান। এবারের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সব ধরনের জনসমাগম ও অনুষ্ঠান আয়োজন থেকে সবাইকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (২৫ মার্চ) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব বিষয় উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে আমরা এবারের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ভিন্নভাবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জনসমাগম হয় এমন ধরনের সব অনুষ্ঠান আয়োজন থেকে সবাইকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনসহ সব জেলায় শিশু সমাবেশ ইতোমধ্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই কারণে আমরা মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জনসমাগম না করে টেলিভিশনের মাধ্যমে সম্প্রচার করেছি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এবারের স্বাধীনতা দিবস এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে উদযাপিত হচ্ছে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গোটা বিশ্ব এখন বিপর্যস্ত।’
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য দল এবার কর্মসূচি বাতিল করেছে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে ট্রাম্প বাংলাদেশের ৪৯তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও জনগণকে তাঁর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি হামিদকে পাঠানো এক বার্তায় বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের পক্ষ থেকে আমি বাংলাদেশের ৪৯তম স্বাধীনতা বার্ষিকী উপলক্ষে এবং ২০২১ সালে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের আগে আপনারা যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছেন, তখন আপনাকে ও দেশের জনগণকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’
সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।