মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগি সংস্থা (জাইকা) ১১ হাজার কোটি টাকার সমমূল্যের ১৪৩ দশমিক ১২৭ মিলিয়ন ইয়েন ঋণ সহায়তা প্রদান করবে।
এ জন্য রবিবার (৩০ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে দু’দেশের মধ্যে একটি ঋণ চুক্তি ও বিনিময় নোট স্বাক্ষরিত হয়েছে।
চুক্তিতে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ ও জাইকার চিফ রিপ্রেজেনটেটিভ হিতোয়েশি হিরাতা। বিনিময় নোটে স্বাক্ষর করেন মনোয়ার আহমেদ ও জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোয়েশি ইজুমি।
৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকার এই প্রকল্পে জাপান মোট ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা পর্যায়ক্রমে ঋণ সহায়তা দেবে।
অনুষ্ঠানে মনোয়ার আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে জাপান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও কর্মকর্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন আমাদের জন্য প্রয়োজনীয় দুইটি বিষয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে প্রকল্পগুলো বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিশেষ মনিটরিংয়ের কারণে জাপানের সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পগুলো নির্দিষ্ট সময়ের আগেই শেষ হবে বলে তিনি জানান।
রাষ্ট্রদূত হিরোয়েশি ইজুমি বলেন, আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে বিশেষ করে দেশটির অবকাঠামো ও প্রযুক্তিখাতে সহায়তা দিতে পেরে জাপান গর্বিত। বাংলাদেশের প্রতি আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
হিতোয়েশি হিরাতা বলেন, মাতারবাড়ি এলাকায় বিদ্যুৎ শিল্প হাব গড়ে উঠছে। সেগুলোতে সহায়তা দিচ্ছে জাইকা। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে একদিকে যেমন বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ হবে, অন্যদিকে দক্ষ জনশক্তি গড়ে উঠবে।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিদ্যুতের অব্যাহত চাহিদা পূরণের জন্য প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলায় মাতারবাড়ি ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিকাল কোল-ফায়ার্ড পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ চলছে। প্রকল্পের ডিপিপি একনেক ২০১৪ সালের ১২ আগস্ট অনুমোদন হয়। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত।
প্রকল্পে জাপান যে ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা পর্যায়ক্রমিক ঋণ সহায়তা দেবে, এর মধ্যে ৩৫তম, ৩৭তম, ৩৮তম ও ৩৯তম ইয়েন লোন প্যাকেজের আওতায় যথাক্রমে ৪১ হাজার ৪৯৮ মিলিয়ন,৩৭ হাজার ৮২১ মিলিয়ন ১০ হাজার ৭৪৫ মিলিয়ন ও ৬৭ হাজার ৩১১ মিলিয়ন ইয়েনের ঋণচুক্তি সই হয়েছে। বর্তমান প্যাকেজসহ প্রকল্পের জন্য মোট ৩ লাখ ৫০২ মিলিয়ন জাপানিজ ইয়েনের ঋণচুক্তি সই হয়েছে।
সহজ শর্তের এই ঋণের সুদহার শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ (অবকাঠামো),পরামর্শ সেবা হিসেবে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ এবং ফ্রন্ট এন্ড ফি বাবদ শূন্য দশমিক ২ শতাংশ হারে দশ বছরের গ্রেড প্রিরিয়ডসহ ৩০ বছরে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
উল্লেখ্য, দ্বিপাক্ষিক পর্যায়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী দেশ জাপান। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত জাপান সরকার বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য সহায়তা প্রদান করেছে। চলতি অর্থবছরে জাপান সরকার ৪০তম ওডিএ লোন প্যাকেজভুক্ত পাঁচ প্রকল্পের জন্য মোট ২৭৫ বিলিয়ন ৭৮৬ মিলিয়ন ইয়েন (আনুমানিক ২১ হাজার ২০০ কোটি টাকা) ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছে। বাসস
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।