২৪ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২১ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি   ●  মেরিন ড্রাইভে ইয়াবাসহ নারী আটক   ●  সড়ক দখল করে নৈরাজ্য সৃষ্টি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়ার অভিযোগে কক্সবাজারে আ.লীগের ৯১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

মাত্র দেড় লাখ টাকা সহযোগিতা পেলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন পঙ্গু লেদু মিয়া

বিশেষ প্রতিবেদকঃ শিশু বয়সে গাছ থেকে পড়ে আঘাত পাওয়ার পরও কাজ করতে হয়েছে প্রতিদিন। বিধবা মাকে নিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রামে টিকতে ব্যাথা তাড়াতে খাওয়া হয়েছে একের পর এক এন্টিবায়োটিক। অতিরিক্ত ব্যাথার ঔষুধ খেতে গিয়ে ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে গেছে কোমরের দু’টি হিপ জয়েন্ট। তাই টগবগে যুবক বয়সেও লোহার এঙ্গেলে ভর করেই তার পথচলা।
চিকিৎসকদের দেখানো কৃত্রিম হিপ জয়েন্ট স্বাভাবিক ভাবে চলার স্বপ্ন দেখাচ্ছে তাকে। ইতোমধ্যে পঙ্গু হাসপাতালে গিয়ে লাগানো হয়েছে বাম পায়ের কৃত্রিম হিম জয়েন্ট। দেশ বিদেশের হৃদয়বান মানুষের সহযোগিতায় বিগত মাস ছয়েক আগে প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয়ে এটি সম্ভব হয়। কিন্তু অপর হিপ জয়েন্টটি লাগাতে গিয়ে টাকার অভাবে বিগত ২৫দিন ধরে পঙ্গু হাসপাতালে অসহায় দিন কাটাচ্ছে তরুণটি।
দ্বিতীয় অপারেশনে তার প্রয়োজন আড়াই লাখ টাকা। নানা সহায়তায় এক লাখ টাকা হাতে এলেও বাকি দেড় লাখ টাকা যোগাড়ে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। তাই সমাজের বিত্ত ও চিত্তবানদের কাছে তার স্বাভাবিক পথ চলায় সহায়তা করতে অনুরোধ করেছেন তিনি।
বলছিলাম কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের পূর্ব পোকখালীর পিতৃহীন মো. লেদু মিয়ার (৩০) কথা। চাল-চুলোহীন লেদু মিয়া মৃত জাফর আলম ও বিধবা আনচারু বেগমের এক মাত্র ছেলে। তিনি বর্তমানে ঢাকার জাতীয় পঙ্গু হাসপাতালের ৩য় তলায় ই.এফ.পি ৬০ নম্বর বেডে ভর্তি রয়েছে।
তিন সন্তানের জনক লেদু মিয়া জানান, জন্মের দু’বছরের মাথায় পিতাকে হারিয়ে প্রাইমারীর গন্ডিটাই পার হওয়া সম্ভব হয়নি। বিধবা মাকে নিয়ে শিশু বয়সেই বাড়ি-ভিটাহীন জীবন যুদ্ধে নামতে হয়। এলাকায় অন্যের বাড়িতে নারকেল পারতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে আঘাত পায় ৭-৮ বছর বয়সে। তৎক্ষনাত তেমন ব্যথা অনুভূত না হলেও ধীরে ধীরে এটি বাড়তে থাকে। ভারী কাজ করা কষ্ট কর হওয়ায় চাকুরি নেয়া হয় একটি দোকানে। মাকে সেবা করতে বউ আনার পর পুরোনো ব্যথাটি তীব্র হয়। দোকানে হিসাবের কাজ করতে গিয়ে বসে থাকা ও ব্যথানাষক এন্টিবায়োটিক খেতে গিয়ে শুকিয়ে বিকল হয়ে যায় হিপ জয়েন্ট দুটি। সমস্যা দেখা দেয় লিভার এবং কিডনিতেও। এটি বিগত ১০ বছর আগের ঘটনা। স্বাভাবিক চলাফেরা কষ্টকর হওয়ায় ছেড়ে দিতে হয় চাকুরিটি।
তিনি জানান, তখন থেকেই ক্রাসে ভর করে চলে হাটা-চলা। নানা প্রচারণার মাইকিং, অন্যের অনুগ্রহের উপর চলছে স্ত্রী, তিন সন্তান ও বৃদ্ধা মাকে নিয়ে চলমান সংসারটি। একসময় নিজ আয়ের উপর নির্ভর করে চলা জীবনে অন্যের অনুগ্রহ নেয়া খুবই বেদনাদায়ক। তাই নিজের উপর নির্ভরশীল হতে সবার সহযোগিতায় কৃত্রিম হিপ জয়েন্ট গুলো লাগাতে চাচ্ছি। গত রমজানে সবাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন বলেই বাম পায়ে হিপ জয়েন্ট সফলভাবে বসানো সম্ভব হয়েছে।
একযুগ আগেও কর্মঠ তরুণ হিসেবে চাকুরী করা লেদু মিয়া বলেন, এখন ডান পায়ের অপারেশনে প্রায় ২ লাখ টাকার দরকার। কিন্তু হতদরিদ্র বাড়ি-ভিটেহীন হিসেবে একার পক্ষে এত টাকা যোগাড় করা সম্ভব নয়। ইতোমধ্যে এক লাখ টাকা যোগাড় হলেও বাকি আছে আর মাত্র দেড় লাখ টাকা। তাই সমাজের হৃদয়বান ব্যক্তি ও প্রবাসী ভাইরা ইচ্ছে করলে আমার পঙ্গুত্বের অবসান হতে পারে। তাই শেষ বারের মতো অন্যের অনুগ্রহ কামনা করেন লেদু মিয়া।
তিনি বলেন, চাইলে পঙ্গু হাসপাতালে এসে আমার সব কিছুর খোঁঁজ নিয়ে সহযোগিতা করতে পারেন দানবীররা। দূরের কেউ হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক বা ইমুতে যোগাযোগ করতে পারেন। ১৭ কোটি মানুষের দেশে মাত্র দেড় লাখ মানুষ একটি করে টাকা দিলেও চিকিৎসাটি করে আমি স্বাভাবিক জীবনের ফিরতে পারি। ছোট ছোট তিনটি বাচ্চা ও বৃদ্ধা মাকে নিজের আয়ের টাকায় তিন বেলা খাবার মুখে তুলে দিতে পারব। আমার ইমু ও বিকাশ নাম্বার ০১৮১২৯৫১৪৫০ (পার্সোনাল)। এ্যাকাউন্ট নাম্বার ১৫৬২৪, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লি. ঈদগাহ্ শাখা, কক্সবাজার।
পোকখালী ইউপি চেয়ারম্যান রফিক আহমদ বলেন, লেদু মিয়া এতিম ও ভুমিহীন। কিন্তু ছেলে হিসেবে সৎ। গত জুনমাসে সবার সহযোগিতায় বাম পায়ে কৃত্রিম হিপ জয়েন্ট লাগানো হয়েছে। স্বাভাবিকতা ফেরাতে ডান পায়ের অপারেশন করাতে আবারো ভর্তি হয়েছে হাসপাতালে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো সহযোগিতা দিয়েছি। সবাই সবার স্থান থেকে এগিয়ে এলে তার জীবনটা দ্রুত একটা গতি পাবে বলে আমার বিশ্বাস।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।