২২ এপ্রিল, ২০২৫ | ৯ বৈশাখ, ১৪৩২ | ২৩ শাওয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  টেকনাফে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ডাকাতদলের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১   ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার   ●  পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি’১৮ ব্যাচের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন   ●  উখিয়া সমাজসেবা কর্মচারীর নামে বিধবা ভাতা’র টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

মানবতায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ : আপন ভুমিতে আমি প্রজা!

picsart_1480519685411

১৯৯২-৯৩ সালের কথা।কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং শরনার্থী শিবির।রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গার আবাসস্থল।ওই শিবিরের ইনচার্জ ছিলেন তাবলীগ আমির।ধর্মভীরু ব্যক্তি। রোহিঙ্গাদের মাঝেও ইসলামের দাওয়াত দিয়ে বেড়াতেন। রোহিঙ্গাদের অসহায়ত্বের কথা নিজেও শুনে যথাসাধ্য সহযোগিতায় এগিয়ে যেতেন।নিজের মাসিক বেতন – ভাতা ও অন্যান্য প্রাপ্ত সুবিধা রোহিঙ্গাদের মাঝে বন্টন করে দিতেন অনায়াসেই। রোগাক্রান্ত রোহিঙ্গা নারী পুরুষ ও শিশুদের মাঝে চিকিৎসা সহায়তায় আর্থিক সুবিধা দিয়েছেন অগুনিত। মানবতাবোধ সর্বদা জাগ্রত ছিল তৎকালীন ক্যাম্প ইনচার্জ এর মনেপ্রানে।আল্লাহপ্রেমী ওই সরকারি আমলা আমাদের উখিয়ায় নেই। কিন্তু কৃতকর্মের কারণে তাকে আজ স্নরণ করছি।যে রোহিঙ্গার নানা অভাব অনটন আর চরম ক্রান্তিকাল সময়ে পাশে ছিলেন সেই ক্যাম্প ইনচার্জের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গারা “কথিত ধর্ষণের অভিযোগ তুলে “আন্দোলন করেন।আন্দোলনের মুখে ওই আল্লাহপ্রেমী মানবতাবাদী ক্যাম্প ইনচার্জ জঘন্যতম অপবাদের কারণে অসহায়বোধ করে কুতুপালং শরনার্থী শিবিরের দায়ীত্ব থেকে ইস্তফা দিয়ে নিজের মান ইজ্জত নিয়ে বদলী হন। এই হল রোহিঙ্গা মানবতার প্রতিদান।কুতুপালং রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবিরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কর্তব্যরত পুলিশ ও ব্যাটেলিয়ন আনসার বাহিনী রয়েছে। প্রতি দিবারাত্রি ডিউটিকালে সামপ্রতিক সময়ে সন্ধ্যায় ৩/৪জনের আনসার দল ক্যাম্প অভ্যান্তরে গাঁজা সেবনের গন্ধ পান। থমকে যান, আবিস্কার করেন গাঁজা সেবনের আস্তানা। দেখতে পান ৮/১০ জন রোহিঙ্গা গাঁজা সেবনে মশগুল।আনসার সদস্যরা সংখ্যায় কম।প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেন নি।উলটো গাঁজা সেবীদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে যান। জিম্মি করে রাখা হয় আনসার সদস্যদের। নিরুপায় আনসার সদস্যরা নিরাপত্তার কথা ভেবে ফোন করে ঘটনার জানান দেন পুলিশ ব্যারাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছার আগেই “ফিনিস ” গাঁজা বেপারী সেবন আস্তানার মালিক নিজের স্ত্রীকে শরীরের বিভিন্ন অংশে কামড়িয়ে রক্তাক্ত জখম করে আর প্রচার করে আনসার সদস্যরা রোহিঙ্গা নারীকে ধর্ষণ চেষ্টায় রক্ষাক্ত জখম করেছে। রোহিঙ্গা অপরাধীর কথিত অভিযোগের দেশপ্রেমিক আনসার সদস্যদের তাৎক্ষণিক ক্লোজ করা হয়। এই হচ্ছে রোহিঙ্গা মানবতার প্রতিদান।কথিত মানবতার সুফল ভোগী রোহিঙ্গা মানবের দানবীয় কর্মকান্ড শেষ নেই। এরা লোভী,এরা ভোগী,এরা ব্যবসায়ী।
জাতিসংঘের মানবাধিকার ও শরনার্থী বিষয়ক সনদ মতে শরণার্থী মর্যাদা অপরিসীম এবং আর্ন্তজাতিক ভাবে স্বীকৃত। আপন দেশের শাসক রাজার কথিত শাসন ব্যবস্থায় প্রজারা রাষ্ট্রীয় নাগরিক অধিকার বঞ্চিত। অত্যচারী রাজার এক গুয়েমী মনোভাবে যেমন
খুশি তেমন শাসনের ফলে অমানবিক লাঞ্চনা ও বঞ্চনার শিকার প্রজা। শাসক যন্ত্রের চাপিয়ে দেওয়া কথিত আইনে দুঃশাসনে মানবিক বিপর্যয়ে প্রজারা শারিরীক, সামাজিক
, অর্থনৈতিক নিগৃহের শিকার হয়ে হতাশায় মুছঁড়ে পড়ে।
কথিত শাসন ব্যবস্থায় বিধি-নিষেধে নানা দৈন্যদশা-দূর্ভোগ ও প্রতিকূল পরিবেশ পেরিয়ে মুক্তিকামী প্রজাদের মাঝে অনেকেই শাসকদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠে। কিন্ত কুলিয়ে উঠতে না পেরে আত্মহত্যায় মুক্তি মেলে। অনেকেই আপন
ভুমি ছেড়ে নিকটস্থ প্রতিবেশী দেশের সীমানা শিকল
টপকিয়ে অনিশ্চিত যাত্রায় পা বাড়ায়, শুধু স্বাভাবিক
জীবন যাপনের প্রত্যাশায়। যাত্রাপথে নানা দুদর্শায় পড়ে
খেয়ে না খেয়ে, রোগ শোকে ভোগে অকালে জীবন প্রদীপ নিভেও যাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায় প্রজারা নাগরিক
অধিকার বঞ্চিত হলে চিন্তা চেতনা লোপ পায়।
অন্ন, বস্ত্র ও চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হয়। শাসক রাজার
বিধি-নিষেধে প্রজাদের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা স্থমিত হয়ে পড়ে।
নানা ঘাত-প্রতিঘাত জেল-জুলুম হজম করে সামাজিক
ও অর্থনৈতিক দেওলিয়ায় ব্যক্তি ও বাকঁ স্বাধীনতায় আঘাত হানলে স্বাভাবিক জীবনের হাল ছাড়েন না প্রজারা।একটু প্রশান্তির আশায় নিজেদের অভয় দিয়ে প্রতিবেশী দেশের সীমানা প্রাচীর ভাংতেও দ্বিধা করেন না। সারা বিশ্বের সকল দেশের শাসনকর্তা জাতিসংঘ। দূর্বল দেশেরপ্রতি সবল দেশের হুমকি বা আঘাতের পদচিহ্ন কিংবা জোরালো কন্ঠের অত্যচারী রাজার হুংকার দমনে
জাতিসংঘের ভেটোয় কার্যকর ভূমিকা রাখে। প্রতিটি দেশে শরণার্থী পুণর্বাসনে তহবিল রয়েছে। আর্ন্তজাতিভাবে শরণার্থী মর্যাদা গুরুত্বের সাথে নজরদারী
করে। জাতিসংঘ ঘোষিত সার্কুলারে বিশ্বের যেকোন দেশে অত্যাচারের শিকার শোষিত প্রজারা সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে প্রশান্তির খুঁজে প্রতিবেশী সহ যেকোন দেশে আশ্রয় নিতে পারে। যেকোন দেশ ও শাসনকর্তা আন্তর্জাতিক শরণার্থী
রুলস অনুসরণ করে দেশ কর্তৃক বিতাড়িত কিংবা স্বেচ্ছায় অন্য দেশে গমণ করা প্রজাদের আশ্রয় দিয়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার বাহবা নেয়। কোনো দেশ থেকে
বিতাড়িত প্রজাদের আশ্রয় দেয় এবং পুণর্বাসন করে সে দেশের অত্যাচারী রাজার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লংঘনের ফিরিস্তি তুলে জোর গলায় মানবতার-মানবিকতার
দোহায় দিয়ে বিজ্ঞাপন ছাড়ে! শরণার্থী মর্যাদা বিশ্বব্যাপী বিদ্যমান। আপন ভূমকে ভালবাসা সে দেশের রাষ্ট্রীয় আইন মানা ইবাদত। দেশ প্রেম ঈমানের
অঙ্গ। ভাবতে বড় অবাক লাগে। অন্তরে কষ্টের ছেঁদ ধরেছে। শরণার্থীরা শরণার্থী মর্যাদা পাবে। যে দেশে আশ্রয় নিকনা কেন? সে দেশের রাষ্ট্রীয়
বিধি বিধান মেনে নিরহ পশুর মত বসবাস ও জীবন যাপন করাও ইবাদত। কিন্তু আমার দেশে উল্টো। আর্ন্তজাতিক স্বীকৃত মতে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের
শরণার্থীরা রাজার হালে বসবাস করছে। আর্থিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত অনৈতিক ভাবে সু-সংগঠিত। ১৯৭৮ সালে মিয়ানমার থেকে প্রথম রোহিঙ্গা নামের শরণার্থীরা
অনুপ্রবেশ করে এদেশে (বাংলাদেশ)। স্বল্প সময়ে তৎকালীন সরকারের আন্তরিক সদিচ্ছায় যথারীতি প্রত্যাবাসনও সম্পন্ন করে। কিন্তু সরকারী সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে আইন শৃংখলা বাহিনীর নজরদারী ফাঁকি দিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামে (পটিয়া, চন্দনাইশ, বান্দবানের লামা-আলী কদম, থানছি, নাইক্ষ্যংছড়ি,
কক্সবাজারের রামু, মহেশখালী, উখিয়া ও টেকনাফ এবং উত্তর চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া, রাঙ্গামাটি) দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে অবস্থান নেয়
কিছু রোহিঙ্গা পরিবার। যথারীতি স্থায়ী বসবাস গেড়ে। সময় ক্রমে এদেশে রোহিঙ্গা নারী বিবাহ ও এদেশীয় নারী রোহিঙ্গাদের বিয়ে সাদি করে শিকড় গজায়।
বাড়তে থাকে রোহিঙ্গার বংশ বিস্তার। আর ওই সব রোহিঙ্গাদের কথিত দেশ
প্রেমিক নামধারী কিছু কায়েমী স্বার্থবাজ, দূর্লোভী প্রকৃতির লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগীতা করে রোহিঙ্গাদের এদেশে স্থায়ী করণে সহযোগীতা করে আসছে। ফলে রোহিঙ্গারা রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে
প্রতিষ্ঠিত হয়ে জড়িয়ে পড়ছে বেআইনি বহুমূখীঅপকর্মে। এমন কি এ দেশের প্রচলিত আইনত কানুন ও এলাকার শালিস ব্যবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে
এ দেশে অবস্থান নিয়ে আমার প্রতিবেশী বন্ধু প্রতীম দেশ মিয়ানমারের (তৎকালীন বার্মা) বিরুদ্ধে স্বঘোষিত যুদ্ধ ঘোষনা করে অবৈধ অস্ত্রধারী সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) প্রতিষ্ঠার বেআইনি সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আরাকান মুজাহিদ, আরএসও, রোহিঙ্গা গে¬াবাল রিসার্স, ওয়ামী সহ বিভিন্ন ছন্দ নাম ধারণ করে মানবতার দোহাইয়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণ সহ অবৈধ কর্মকান্ড পরিচালনা করতে দূর্গম পাহাড়ি জায়গায় আস্তানা
গড়ে তোলে। মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর ক্যাম্প লক্ষ্য করে স্বশস্ত্র হামলা ও চালায় বহুবার। বাংলাদেশ অভ্যন্তর থেকে মিয়ানমার সীমানা অতিক্রম
করে সে দেশে ঢুকে কোননা কোন ভাবে স্বশস্ত্র ঘটনা ঘটিয়ে পুণরায় বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। এসব ঘটনায় মিয়ানমার জান্তা সরকার প্রতিবেশী বাংলাদেশকে দোষারূপ করে ঘটনার জন্য দায়ী করে চরম ক্ষুব্ধ হয়ে একাধিকবার রণ প্রস্তুতিও গ্রহণ করে। পাঠকগণ একটু ভেবে দেখুন রোহিঙ্গারা মানুষরূপী দানব! তারা মিয়ানমারে সংখ্যালঘু। এর পরেও সেদেশের রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা মানেনা তারা। মগ রাজার অত্যাচারের কাল্পনিক কিচ্ছা তুলে বাংলাদেশে অবৈধ ভাবে অনুপ্রবেশ
করে রোহিঙ্গারা।এদেশে মানবতার ফিরিস্তি তুলে আশ্রিত রোহিঙ্গারা পুর্বের মত নানা অপরাধ প্রবনতায় মেতে উঠবে নি:সন্দেহ।ফলে আমরা বাংগালী চরম এক উদ্ধেগ উৎকন্ঠায় রয়েছি। দীর্ঘ ২৫ বৎসর লালিত সমস্যার সমাধান তো হয়নি উপরন্তু নানা বৈদেশিক. সদেশীয় সুবিধাবাদী চক্র ও রোহিঙ্গাদের প্রতেক্ষ্য ও পরোক্ষ ভাবে ষড়যন্ত্রের শিকার।রোহিঙ্গা কেন্দ্রীক সমস্যা ঝিঁইয়ে রাখার প্রধানতম হাতিয়ার মিয়ানমারে নাশকতা সৃষ্টি করে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করা।মিয়ানমারের রোহিং অঞ্চলে বসবাস করা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিদের বার বার এপার বাংলায় অনুপ্রবেশের মোক্ষম পথ সৃষ্টি করা।সাথে মানবতার অস্ত্র বহনতো আছেই।বলতে গেলে আপন নিবাসে নিরাপত্তাহীন এপার বাংলার শান্তপ্রিয় দেশপ্রেমিক জনতা। আপনদেশে নিজেরাই(আমি) পরবাসী।লিখক : সংবাদকর্মী, উন্নয়ন সংগঠক ।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।