বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে আওয়ামী লীগ।
ক্ষমতাসীন দলটি বলেছে, বাংলাদেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার পরিস্থিতিই বরং বহুগুণে খারাপ। বাংলাদেশের তুলনায় প্রতিদিন গড়ে দ্বিগুণ মানুষ হত্যা করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে কথা না বলে যুক্তরাষ্ট্রকে নিজের দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করার কথাও বলা হয়েছে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে।
রোববার দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া প্রতিবেদন আমরা প্রত্যাখান করছি। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে বলবো নিজেদের রাষ্ট্রের মানবাধিকারের ওপর সবিনয়ে নজর দিন।
২০১৬ সালের বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এতে বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়। এই প্রতিবেদনের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানতেই আওয়ামী লীাগের পক্ষে ওই সংবাদ সম্মেলন আয়োজিত হয়।
হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেলে মানবাধিকার পরিস্থিতি অনেকাংশে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ভালো। তাদের দেশে প্রতিবছর পুলিশের গুলিতে ১১’শ লোক মারা যায়। যার অধিকাংশ সংখ্যালঘু। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ‘কালো মানুষের জীবনও মূল্যবান’- এই শিরোনামে আন্দোলন গড়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ভালো সফলতা পেয়েছে। তাদের দেশে পুলিশের গুলিতে অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে। আর বাংলাদেশে পুলিশের গুলিতে তখনই কেউ মারা যায়, যখন সন্ত্রাসীরা পুলিশের উপর হামলা করে পাল্পা গুলি করে।
নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের দেওয়া বক্তব্যকে তার নিজের মতামত বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের এই মুখপাত্র। তিনি বলেন, এটি তার ব্যক্তিগত মতামত। এটি সরকারের বক্তব্যও নয়, আওয়ামী লীগেরও নয়।
অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, অর্থমন্ত্রী অনেক সময় অনেক কথা বলেন। দেখবেন, কয়েকদিন পর আবার এই কথা তিনি নিজেই পরিবর্তন করবেন, নিজের বক্তব্যের সঙ্গে নিজেই দ্বিমত প্রকাশ করবেন। তাছাড়া দলে থেকেও যে কেউ তার মতামত দিতে পারে। এটাই আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ।
তিনি বলেন, ড. ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণ সম্মানের সঙ্গে ভিক্ষাদান করা। এটি চালু হয়েছে পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিদেশি বেনিয়াদের সহায়তায়। এ ক্ষুদ্রঋণ হচ্ছে ১০ টাকা ঋণ দেওয়ার বিনিময়ে ২০ টাকা আদায় করা আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চালু করেছেন ক্ষুদ্র অনুদান। ক্ষুদ্র অনুদান হচ্ছে দেশের মানুষ ১০ টাকা জমাবে আর সঙ্গে সরকার তাকে আরও ১০ টাকা দেবে।
সংবাদ সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ূয়া, আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।