আতিকুর রহমান মানিকঃ কক্সবাজার জেলাব্যাপী প্রধান প্রজনন মৌসূমে মা ইলিশ সংরক্ষনে ২২ দিনের কর্মসূচী শেষ হয়েছে। এসময় ২৮৪ বার অভিযান পরিচালনা করে জব্দ ও নষ্ট করা হয়েছে প্রায় ৬৩ লক্ষ টাকা মূল্যের নিষিদ্ধ জাল। জেলা প্রশাসন, মৎস্য অধিদপ্তর ও কোস্টগার্ডের যৌথ অভিযানে এসব জাল জব্দ করা হয়। মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ১ অক্টোবর মা ইলিশ সংরক্ষন কার্যক্রম শুরু হয়ে ২২ অক্টোবর শেষ হয়। জেলার অাপামর জেলে সম্প্রদায়, ফিশিংবোট মালিক, বরফকল মালিক, জ্বালানী তৈল সরবরাহকারী, মৎস্য আড়তদার, মৎস্য বিক্রেতা ও বিভিন্ন বাজার কমিটির সদস্যগন সরকারগৃহীত উক্ত কর্মসূচী বাস্তবায়নে সহযোগীতা করেছেন। উপরোক্ত ২২ দিনব্যাপী মৎস্য আহরণে বিরত থাকা দরিদ্র জেলেদের জন্য বিশেষ ভিজিএফ কর্মসূচীর মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা হিসাবে জেলার ৮ উপজেলায় ১০, ৫০০ জন নিবন্ধিত জেলে পরিবারের জন্য ২১০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে।
কক্সবাজারে প্রধান প্রজনন মৌসূমে মা ইলিশ রক্ষায় মৎস্য অধিদপ্তরের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগের সাথে সমন্বয় করে উপরোক্ত কর্মসূচী পালিত হয়। জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, উপরোক্ত ২২ দিনে জেলার ৮ উপজেলায় মোট ১৪ টি মোবাইল কোর্ট, ২৭০ টি অভিযান, ২৫২ বার অবতরনকেন্দ্র পরিদর্শন, ৪৫৩ বার মাছঘাট পরিদর্শন, ৫৩২ বার আড়ৎ পরিদর্শন ও ৮৯৪ বার বাজার পরিদর্শন করা হয়েছে। এসময় প্রায় ৩ লক্ষ ৩০ হাজার মিটার বিভিন্ন প্রকার নিষিদ্ধ জাল জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে, যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৬৩ লক্ষ টাকা। এ ছাড়াও ৭ জেলেকে আটক করে ২১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। মা-ইলিশ সংরক্ষন অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে মহেশখালী উপজেলা এবং উত্তর কুতুবদিয়া থেকে বাঁশখালী গন্ডামারা এলাকার মধ্যবর্তী সাগরে অবস্হিত ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর টহল জাহাজ মোতায়েন ছিল। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (সদর) ডঃ মঈন উদ্দীন আহমদ জানান, মৎস্য অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ কোষ্টগার্ড’র যৌথভাবে স্হাপিত চেকপোস্ট বাঁকখালী নদী মোহনায় নির্ধারিত ২২ দিন সার্বক্ষনিক প্রহরায় ছিল। এ ছাড়াও জেলার ৯ টি কোস্টগার্ড স্টেশনের সাথে স্হানীয় মৎস্য অধিদপ্তরীয় কর্মকর্তা মধ্যে সমন্বয় করে উপকূল ও মোহনাঞ্চলে নিবিড় মনিটরিং থাকায় ২২ দিন ব্যাপী কর্মসূচী চলাকালে কোন ফিশিং বোট মৎস্য আহরণে সাগরে যেতে পারেনি। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ডঃ মোঃ আবদুল আলীম জানান, মৎস্য ও প্রানীসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এম পি, সচিব মোঃ মাকসুদুল হক খান, মৎস্য অধিদপ্তরের আতিরিক্ত মহা পরিচালক এবং কেন্দ্রীয় মনিটরিং কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী শেখ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, মৎস্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ পরিচালক মোঃ লতিফুর রহমান ও মৎস্য মান নিয়ন্ত্রন বিভাগের উপ পরিচালক ডঃ ছালেহ আহমদ প্রমুখ কক্সবাজারে উপরোক্ত কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ জানান, সোমবার দিবাগত রাত বারটায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর ফিশিং বোটগুলো সাগরে গেছে, এখন রূপালী ইলিশের জন্য অপেক্ষা।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।