মিয়ানমার সরকারের রাষ্ট্রীয় পরামর্শক অং সান সুচি কর্তৃক গঠিত আরাকানের সহিংসতা তদন্ত কমিশনের ৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল রবিবার কুতুপালং নতুন রোহিঙ্গা বস্তি পরিদর্শন করেন। এসময় প্রতিনিধিদল নতুন আশ্রয় নেওয়া অর্ধশতাধিক নির্যাতিত নারী ও পুরুষের সাথে পৃথক পৃথক সাক্ষাৎকার গ্রহন করেন। সাক্ষাৎকালে প্রতিনিধিদল রোহিঙ্গাদের কথার সাথে একমত পোষণ করেনি। এছাড়াও মিয়ানমার ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে কোন কথা বলেনি তদন্ত কমিশন। প্রতিনিধিদলের সফরকালে ক্ষুব্ধ রোহিঙ্গারা মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের আর্ন্তজাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন।
২টার দিকে মিয়ানমার তদন্ত কমিশন কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তি পরিদর্শনকালে ব্যানার সহকারে শত শত রোহিঙ্গা কমিশনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এসব অপরাধে জড়িতদের চিহ্নিত করে আন্তর্জাতির অপরাধ আদালতের মাধ্যমে বিচারের আহবান জানান। আলোচনায় অংশ নেওয়া রোহিঙ্গারা জানান, আরাকানের বিভিন্ন স্থানে সহিংস ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলেও তদন্ত কমিশন একবারও রোহিঙ্গারা মিয়ানমার ফিরে যাবে কিনা জানতে চায়নি। এবং তাদের নির্যাতনের কথাগুলো বোঝার চেষ্টা করেনি।
তদন্ত কমিশনের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন কমিশনের সদস্য সচিব জ্য মিন প্য, কমিশনের সদস্য ড. অং থুন তেথসহ ৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলের সাথে ছিলেন কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ মো. শামসুদ্দোজা, উখিয়ার সহকারি কমিশনার(ভূমি) নুরুদ্দিন মুহাম্মদ শিবলী, উখিয়া থানার ওসি মো. আবুল খায়েরসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাগণ।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের ৯ অক্টোবর নিরাপত্তা বাহিনীর একটি চৌকি আক্রান্তের ঘটনায় অপারেশন ক্লিয়ারেন্স এর নামে প্রায় ৪ মাসব্যাপী রাখাইন প্রদেশের মংডু, বুচিডং, আকিয়াবসহ বিভিন্ন রোহিঙ্গা অধ্যুষিত পাড়া ও গ্রামগুলোতে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ব্যাপক তান্ডব চালানো হয়। এর প্রেক্ষিতে সীমান্ত পেরিয়ে প্রায় ৯০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এসব রোহিঙ্গাদের বাস্তব অবস্থা জানতে এই তদন্ত কমিশনের উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শন।
এদিকে বিকেল ৪টায় কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধিদল কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। ২১মার্চ উখিয়া বালুখালী এবং টেকনাফের লেদা নতুন রোহিঙ্গা বস্তি পরিদর্শন করবেন জানা গেছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।