মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর চলছে নীরব নির্যাতন। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিকমহল যখন চাপ সৃষ্টি করে আসছে তখন বিশ্ববাসীর চোখের আড়ালে মুসলিম অধ্যুষিত আরাকান প্রদেশের গ্রামগুলিতে হত্যা, নারী নির্যাতন ও চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে নিয়মিত। আর এসব ঘটনায় উগ্র বৌদ্ধ রাখাইনরা ছাড়াও সরকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে স্থানীয় নাগরিকরা।
শনিবার রাতে মঙব্রা থানার রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে আশ্রিত ১৪ বছর বয়সী হাবিবুল্লাহ নামক এক কিশোরকে উগ্র রাখাইনরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এর আগে ২ মার্চ, রাছিদং থানার রাজারবিল গ্রামের কবির আহাম্মেদের এগার বয়সী মেয়ে জোবায়দাকে বাড়ির কাছে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে সরকারি সীমান্তরক্ষীবাহিনী (বিজিপি) গুলি করে আহত করে। সে আহত অবস্থায় মংদু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আরেক ঘটনায়, ৪ মার্চ বুছিদং থানার পুদুপ্রাং গ্রামে প্রবেশ করে বিজিপি সদস্যরা গণহারে নারীদের ওপর নির্যাতন করলে মহিলারা জড়ো হয়ে প্রতিবাদ শুরু করে। একপর্যায়ে বিজিপি ২০ থেকে ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে সরে পড়ে। পরবর্তীতে তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করে ফিরে আসে এবং গ্রামের মুসলমান পরিবারগুলোর ওপর আরেক দফা নির্যাতন চালায়।
গত ৫ মার্চ মংডুর দক্ষিণের গরাখালী গ্রামের ৬ জন লোককে বিজিপি ধরে নিয়ে যায় এবং প্রত্যেকের কাছ থেকে পাঁচ লাখ কিয়াট (মিয়ানমার মূদ্রা) মুক্তিপণ আদায় করে তারা।
এ প্রসঙ্গে রোহিঙ্গা এডুকেশন ডেভলপমেন্টের সাধারণ সম্পাদক জমির উদ্দিন বলেন, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ও মানবাধিকারের পক্ষে জাতিসংঘের প্রস্তাব পাশ হবার পর থেকেই নতুন করে তাদের উপর অত্যাচার নেমে আসে।
তিনি জানান,এসব অত্যাচারের বিরুদ্ধে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ করে প্রতিকারতো পাওয়াই যায় না উল্টো তাদের ধরে ব্যাপক নির্যাতন করা হয় যাতে কেউ নালিশ করার সাহস না পায়।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘ একটি প্রস্তাব পাশ করে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ফেরত দেয়া ও তাদের সকল প্রকার মানবাধিকার রক্ষার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি অনুরোধ জানায়। এরই সূত্র ধরে, মিয়ানমার জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে স্থায়ী নাগরিকত্বের সুবিধা দিয়ে সাদা কার্ড দেয়া হয়।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।