রোহিঙ্গারোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তের জন্য দেশটিতে সত্য অনুসন্ধানকারী দল পাঠাচ্ছে জাতিসংঘ। শুক্রবার (২৪ মার্চ) জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কাউন্সিল ইউএনএইচআরসি জেনেভায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিন সর্বসম্মতিক্রমে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয় বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে মিয়ানমারে চালানো অভিযান মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল।
শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে অনুমোদিত হওয়া ওই প্রস্তাবে বলা হয়, দোষীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ওই তদন্ত শুরু হবে। সেপ্টেম্বরে তদন্তকারীরা মৌখিকভাবে তদন্তের তথ্য জানাবে আর আগামী বছরের একই সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেবে। চীন, ভারত, কিউবাসহ কয়েকটি দেশ ওই প্রস্তাব থেকে বিচ্যুত থেকেছে।
উল্লেখ্য, গত বছর অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এলাকায় সন্ত্রাসীদের সমন্বিত হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর তার দায় চাপানো হয় রোহিঙ্গাদের ওপর। আর তখন থেকেই শুরু হয় সেনাবাহিনীর দমন প্রক্রিয়া। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের দাবি,এরপর থেকেই রাখাইন রাজ্যে ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। জাতিসংঘ এরইমধ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে জাতিগতভাবে নির্মূল করার অভিযোগ এনেছে। তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডেরও অভিযোগ তোলা হয় দুই দফায়। এবারের সংঘর্ষে রাখাইন রাজ্যের মৃতের সংখ্যা ৮৬ জন বলে জানিয়েছে তারা। জাতিসংঘের হিসাব মতে,এখন পর্যন্ত ঘরহারা হয়েছেন ৩০ হাজার মানুষ। পালাতে গিয়েও গুলি খেয়ে মরতে হচ্ছে তাদের। ২০১২ সালে মিয়ানমার সরকারের মদদপুষ্ট উগ্র জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধদের তাণ্ডবে প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা নিহত হন। ঘর ছাড়তে বাধ্য হন ১ লাখেরও বেশি মানুষ।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।