২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি

চকরিয়ায় ফের আলোচনায় পৌরসভার কাউন্সিলর মুজিব

মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জায়গা দখল চেষ্ঠা ও বসতঘরে অগ্নিসংযোগের হুমকির অভিযোগ!

চকরিয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সেলিনা চৌধুরী।

এম.জিয়াবুল হক,(চকরিয়া): চকরিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর মুজিবুল হক মুজিবের বিরুদ্ধে স্থানীয় এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ভোগ-দখলীয় জায়গা জোরপূর্বক জবর-দখলে নেওয়ার চেষ্টা, বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগের হুমকি, মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পৌরসভার নামার চিরিঙ্গা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মরহুম জহিরুল ইসলাম চৌধুরীর সহধর্মীনি সেলিনা চৌধুরী গতকাল রোববার সকালে চকরিয়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত এসব অভিযোগ করেন।

সেলিনা চৌধুরী অভিযোগ করেন, এসবের প্রতিবাদ করায় প্রতিনিয়ত হুমকি দেওয়া হচ্ছে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে। এমনকি মুক্তিযোদ্ধার বিধবা স্ত্রীসহ পরিবার সদস্যদের বিরুদ্ধে থানায়ও সাধারণ ডায়েরী রুজু করা হয়েছে মিথ্যা অভিযোগ এনে। অবশ্য মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের পক্ষ থেকেও থানায় পাল্টা সাধারণ ডায়েরী রুজুর পর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে কাউন্সিলর মুজিব তার লোকজন। এতে আরো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এই মুক্তিযোদ্ধার পরিবার। এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধার পরিবারটি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে মায়ের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ছোট ছেলে আবরার নাবিল।

সেলিনা চৌধুরী অভিযোগ করেন, কয়েকবছর আগে তাঁর স্বামী মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল ইসলাম চৌধুরী মারা যান। আবার বড় ছেলে রণি চৌধুরী থাকেন ফ্রান্সে। মেঝ ছেলে খাইরুল ওয়ারা রবিন সরকারী চাকরি নিয়ে ব্যস্ত। বাড়িতে থাকেন ছোট ছেলে কলেজ পড়–য়া আবরার নাবিল। তাছাড়া প্রায় সময় তিনি (সেলিনা চৌধুরী) থাকেন সিলেটে বাপের বাড়িতে। এই সুযোগে পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও একসময়ের শিবির ক্যাডার বর্তমানে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী মো. মুজিবুল হক তাদের পরিবারের সহায়-সম্পদ জবর-দখলে নেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেছেন।
সেলিনা চৌধুরীর অভিযোগ-কাউন্সিলর মুজিবের অপচেষ্টার অংশ হিসেবে গত ২৮ সেপ্টেম্বর মুষলধারে বৃষ্টিপাতের সময় ভোররাতে পরিকল্পিতভাবে একে একে চারটি ভাড়া বাসায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। তারও আগে আরেকটি বসতবাড়িতে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। এসব আগুন লাগার পেছনে কাউন্সিলর মুজিবের হাত রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘পৌরশহরের বায়তুশ শরফ সড়ক¯’ তাঁর স্বামীর বংশ পরম্পরায় বাউন্ডারিসহ বৈধভাবে ভোগ-দখলীয় এবং স্বামীর নামীয় খতিয়ানভুক্ত (বিএস খতিয়ান-৫৩২, বিএস দাগ-৬৩৩) ১৭ শতাংশ জায়গা রয়েছে। ওই জায়গায় একপাশে দোকানঘর নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ-দখলে রয়েছি। বাকী জায়গায় ২০১৩ সালে দোকান-ঘর নির্মাণ করার সময় তখন আমার স্বামী মারা যান। এ কারণে ওইসময় আর কাজে হাত দিইনি। সেই জায়গায় অতিসম্প্রতি দোকান-ঘরের সংস্কারকাজ করতে গেলে মুজিবুল হক সদলবলে হামলে পড়ে সেখানে। তার (মুজিব) সশস্ত্র বাঁধার মুখে আমরা আজ এগুতে পারিনি। তার ওপর আমাদের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ এনে সাধারণ ডায়েরী রুজু করেছেন। বিষয়টি জানার পর থানার ওসিকে গিয়ে আসল ঘটনা অবহিত করি এবং আমি বাদী হয়ে কাউন্সিলর মুজিবের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরী রুজু করি।’

সেলিনা চৌধুরী বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হয়েও আজ তার কাছে অসহায়। আমি কেন তার বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছি, এনিয়ে সে (মুজিব) আমার বাড়িতে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের নিয়ে গিয়ে ভিটে ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দিয়ে এসেছেন। সে একসময়ের শিবির ক্যাডার হয়েও কিভাবে আওয়ামী লীগের মতো একটি দলে সে  পেয়েছে তা আমার বোধগম্য হ”েছনা। সে না-কি এখন উপজেলা যুবলীগের বড় নেতা। এ সুবাদে সে গরীব মানুষের জায়গা দখল করে নিয়ে রাতারাতি শতকোটি টাকার সহায়-সম্পদের মালিক বনে গেছেন।’

তিনি বলেন, ‘ভিটেছাড়া করতে ইতোপূর্বে পর পর দুইবার আমাদের বসতবাড়িতে রাতের আঁধারে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনাও সংঘটিত করেছেন কাউন্সিলর মুজিবুল হক। এমনকি আমাদের জায়গাকে পরিকল্পিতভাবে ময়লা-আবর্জনার ডিপোতে পরিণত করেছেন।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত পৌরসভার কাউন্সিলর ও চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মো. মুজিবুল হক। তিনি বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা না নেমে আমাদের পৈত্রিক জায়গায় কাজ করায় আমি বাঁধা দিয়েছি এবং থানায় জিডি করেছি। তাই আমার বিরুদ্ধে এসব উল্টাপাল্টা অভিযোগ করছেন মুক্তিযোদ্ধার পরিবার।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।