২১ এপ্রিল, ২০২৫ | ৮ বৈশাখ, ১৪৩২ | ২২ শাওয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার   ●  পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি’১৮ ব্যাচের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন   ●  উখিয়া সমাজসেবা কর্মচারীর নামে বিধবা ভাতা’র টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ   ●  ‘পটভূমি পরিবর্তনের জন্য সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য’ – সরওয়ার জাহান চৌধুরী

রিক্সাওয়ালা থেকে টাকাওয়ালা!

১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমানের আমলে নোয়াখালী জেলা থেকে এসেছিলেন তাদের পিতা রবিউল হোসেন প্রকাশ আনসার। তারপর তিনি যোগ দেন আনসার বাহিনীতে। বিয়ে করেন মিয়ানমারের এক রোহিঙ্গা নারীকে। তার দুই সন্তানের মধ্যে একজন জাহাঙ্গীর আলম প্রকাশ ইয়াবা রাজা জাহাঙ্গীর। বাবা রবিউল আনসার বাহিনী’র চাকরি হারানোর পর থেকে জাহাঙ্গীর রিক্সা চালিয়ে সংসার চালাতো। দেশে আসা সেই ভয়ানক মাদক ইয়াবা পাচার করে হয়েছেন আংগুল ফুটে কলা গাছ। এরপর দেশে চলে মানবপাচারের রমরমা ব্যবসা সেই অবৈধ কার্যক্রমেও জড়িয়ে পড়ে সে। তারপর নাম আসে বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে জাহাঙ্গীরসহ ৭৭ মানবপাচারকারীদের গডফাদার হিসেবে চিহ্নিত করে ক্রস ফায়রের নির্দেশ দেয়া হয়।
এদিকে জাতীয় দৈনিক সমকালসহ দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানাযায়, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে’র দালালদের তালিকায় রয়েছে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রবিউল হোসেন প্রকাশ আনসারের পুত্র ও জাহাঙ্গীরের ছোট ভাই মোহাম্মদ আলম শাহিন প্রকাশ ইয়াবা সম্রাট শাহিনের নাম। স্থানীয়রা হতবাক হয়ে বলেন, দু’এক বছর আগেও যাদের পরিবারে ছিল অভাব অনটন আর সেখনে এখন মোটরবাইক নিয়ে চলে জাহাঙ্গীর-শাহিনরা। তবে এত অপরাধের সাথে জড়িত থাকার পরও এখনো ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে মানবপাচারের দুই গডফাদার জাহাঙ্গীর আলম ও তার ছোট ভাই মোহাম্মদ আলম শাহিন। ধরা ছোয়ার বাইরে থাকায় প্রতিদিন চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অপকর্ম। চলছে বিভিন্ন মাদক ও দেশের যুবসমাজ ধব্বংসকারী ইয়াবার রমরমা ব্যবসা। এই সব অপকর্ম সাধারন মানুষের কাজ থেকে আড়াল করতে নাকি ছাত্রদলে যোগ দিয়েছেন এই ইয়াবা স¤্রাট। স্থানীয় সুত্র বলছে, তার বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম এলাকার ইয়াবা ‘রাজা’ হিসেবে পরিচিত। তার বয়ে কথা বলতে চাইনা এলাকার অনেকে। হ্নীলার ইয়াবা সিন্ডিকেটের মধ্যে সবচেয়ে বড় সিন্ডিকেট ইয়াবা রাজা জাহাঙ্গীর ও তার ছোট ইয়াবা সম্রাট শাহিনের। এই সিন্ডিকেট বিভিন্নভাবে এলাকার যুবকদের কাজে লাগিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা’র রমরমা ব্যবসা। দুই ভাইয়ের বড় সিন্ডিকেট বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি এলাকাবাসির। জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বিগত ২০১৫ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত শীর্ষ দুই  উপকূল দিয়ে সাগরপথে অবৈধভাবে মানব পাচারে জড়িত ৭৭ জন গডফাদারের মধ্যে ২৪ নম্বরে আছে ইয়াবা স¤্রাট শাহিনের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলমের নাম।
এদিকে প্রশাসনের একাধিক সুত্রে জানাযায়, ইতোমধ্যে আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে তালিকাভুক্ত গডফাদারসহ ৫ জন নিহত হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক তৈরি করা তালিকায় ৭৭ জনই সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের বাসিন্দা। এ তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো পর এদের মধ্যে তালিভুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশও করা হয়েছিল। মানব পাচারকারী চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি আইনশৃংঙ্খলা বাহিনী। বরং তারা মানব পাচারকারীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেই কাজ করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললেও তারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। পরিস্থিতির কারণে অনেকে আত্মগোপন করেছে বলেও জানান স্থানীয়রা।
এদিকে আরেকটি সুত্র বলছে, মানবপাচার ও ইয়াবা ব্যবসায়ীরা তাদের অপকর্ম আড়াল করতে নাকি যোগ দিচ্ছে হ্নীলা ইউনিয়ন শাখা ছাত্রদলে। তবে পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি মানবপাচারে জড়িতরা বিভিন্ন সংগঠনের আড়ালে গা ঢাকা দেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রায় অসম্ভ হয়ে পড়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তারা।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।