২৯ নভেম্বর, ২০২৪ | ১৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  যারা ক্লাসে ৭০% উপস্থিত থাকবে না তাদের পরিক্ষায় অংশগ্রহন করতে দেওয়া হবে না- শাহাজাহান চৌধুরী   ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান

রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে বাংলাদেশের পাশে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া: জোকো উইদোদো

এএইচ সেলিম উল্লাহ,(সম্পাদক): রোহিঙ্গাদের প্রতি ইন্দোনেশিয়ার জনগণের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো বলেছেন, নিজ দেশে রোহিঙ্গাদের উপর হওয়া নিপীড়ন অমানবিক। ভিন দেশে আশ্রিত জীবন কখনো সুখকর নয়। নিজ দেশে ফেরাটাই প্রশান্তির। তাই রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবসনে ইন্দোনেশিয়া বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। প্রত্যাবাসন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মাঝে সব ধরনের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে ইন্দোনেশিয়া।
কক্সবাজারে উখিয়ার জামতলী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোববার সরেজমিন রোহিঙ্গা পরিস্থিতি ঘুরে দেখে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গারা যতদিন বাংলাদেশে থাকবে, ততদিন ইন্দোনেশিয়া ত্রাণ, চিকিৎসাসহ মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে। এসময় তিনি কয়েকজন রোহিঙ্গা নারী ও শিশুর সঙ্গে আলাপ করেন। তাদের মুখ থেকে রাখাইনে সহিংসতার বিবরণ শোনেন এবং চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের তিনি মর্যাদার সঙ্গে নিরাপদ প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার আশ্বাসও দেন।
এরপর তিনি, ইন্দোনেশিয়া সরকারের অর্থায়নে স্থাপিত মেডিক্যাল ক্যাম্প, স্কুল, ত্রাণ কেন্দ্র এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রি বিতরণ করেন।
২৮ জানুয়ারি বেলা ১টার দিকে তিনি বিমান যোগে কক্সবাজার পৌছান। সেখান থেকে সোজা চলে যান রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন ফার্স্ট লেডি ইরিয়ান জোকো উইদোদোসহ একাধিক মন্ত্রী। প্রেসিডেন্টের গাড়ী বহরে ছিল ত্রিশটি গাড়ী। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের আগমন উপলক্ষে নিñিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরী করে প্রশাসন। কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে শুরু করে মেরিন ড্রাইভ রোড় হয়ে কোট বাজার ও উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ছিল। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে দোকান পাট ও বন্ধ ছিল গাড়ী চলাচল। প্রেসিডেন্টের সাথে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান আলী, শরনার্থী সচিব আবুল কালাম, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক আলী হোসেন, নজেলা পুলিশ সুপার ড. একে এম ইকবাল হোসেনসহ প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ক্যাম্প ত্যাগ করেন।
সূত্র মতে, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে রয়েছে মিয়ানমারের বেশ সুসম্পর্ক। ইন্দোনেশিয়াই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জোট আসিয়ানে মিয়ানমারকে সদস্য করেছিল। তাই রোহিঙ্গা সংকটকালে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি হতে পাওে এমন কোনো শব্দ উচ্চারণ করেনি ইন্দোনেশিয়া। তবে বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম জনগোষ্ঠীর দেশ হওয়ায় ইন্দোনেশিয়ার অভ্যন্তরে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের পক্ষে প্রবল জনমত রয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট উইদোদোর বাংলাদেশ সফর আয়োজনের প্রথমদিকে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে যাওয়ার কোনো কর্মসূচি ছিল না। তবে শেষ পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ার অভ্যন্তরে জনমতের চাপের কথা বিবেচনা করে তিনি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে যান। এতে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাকার্তা তার প্রথমদিকের অবস্থানে খানিকটা পরিবর্তন করেছে বলেও মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মানবাধিকার বিষয়ক তৃতীয় কমিটির ভোটেও ইন্দোনেশিয়া রোহিঙ্গাদের পক্ষে ভোট দিয়েছে।
এদিকে, ইন্দোনেশিয়া থেকে কোনো রাষ্ট্রপতি ২০০৩ সালের পর বাংলাদেশ সফর করেননি। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সময়ে বিভিন্ন উপলক্ষে একধিকবার ইন্দোনেশিয়া সফর করেছেন। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরে রোহিঙ্গা সংকট অধিক গুরুত্ব লাভ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে শনিবার ঢাকায় পৌঁছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান। রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। বৈঠকে পাঁচটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
জোকো উইদোদো বিকেলে ঢাকার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার ত্যাগ করেন। রাতে ঢাকায় ফিরেই জাকার্তার উদ্দেশ্যে তার বাংলাদেশ ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
গত বছর ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের পাশবিকতার শিকার হয়ে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।