২৯ নভেম্বর, ২০২৪ | ১৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  যারা ক্লাসে ৭০% উপস্থিত থাকবে না তাদের পরিক্ষায় অংশগ্রহন করতে দেওয়া হবে না- শাহাজাহান চৌধুরী   ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান

রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব নিশ্চিতে কাজ করছে বাংলাদেশঃ রাষ্ট্রপতি

এএইচ সেলিম উল্লাহ,(সম্পাদক): রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, বিশ্ব সম্প্রদায়ের চাপের মুখে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার দিয়েই স্বদেশে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে। এজন্য একটু ধৈয্য ধরতে হবে। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের জন্য একটা নিরাপদ অবস্থান তৈরী করার পর মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে কাজ করছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি স্বাক্ষর করা সমঝোতা স্মারক অতিসহসা এর বাস্তবায়ন শুরু হবে এবং রাখাইনে পূর্ণ নাগরিক অধিকার নিয়ে রোহিঙ্গারা অবস্থান করবেন এমনটাই আশা করছেন রাষ্ট্রপতি।

বিকেলে কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৫ ব্লক পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। এরপর তিনি নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, কূটনৈতিক সফলতায় রোহিঙ্গা ফেরতে সই হওয়া সমঝোতা স্মারক ধীরে ধীরে কার্যকর হবে। এতে মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে আহার, স্বাস্থ্যসহ সব ধরণের সুযোগ পাবে রোহিঙ্গারা। এটাই নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের মতো বাংলাদেশসহ বিশ^ নেতৃবৃন্দের কামনা।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন কালে রাষ্ট্রপতি পাশবিকতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নারী-শিশু ও পুরুষদের সাথে কথা বলেন। রোহিঙ্গারা আশ্রিত দেশের প্রধানকে কাছে পেয়ে নিজেদের বেদনার কথা তুলে ধরেণ। সরকার প্রধানের পর রাষ্ট্রপ্রধান তাদের দেখতে আসায় রোহিঙ্গারা শোকরিয়া জ্ঞাপন করে রাষ্ট্রপতির দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
এসময় ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এমপি, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন, পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেনসহ সেনা ও নৌবাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তাগণ রাষ্ট্রপতির সাথে ছিলেন।
এর আগে রাষ্ট্রপতিকে বহনকারি হেলিকপ্টারটি বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে ইনানী সৈকত এলাকায় সেনাবাহিনীর হেলিপ্যাড বে-ওয়াচে অবতরণের পর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা তাকে অভ্যর্থনা দেন। দু’দিনের সফরে রাষ্ট্রপতি কক্সবাজার এসেছেন। সোমবার বাংলাদেশ নেভির আয়োজনে ‘আইওএনস মাল্টিলাটেরাল মেরিটাইম সার্চ এন্ড রিসার্চ এক্সারসাইজ (আইএমএমএসএআরইএক্স) অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন তিনি। ইনানীস্থ তারকা হোটেল রয়েল টিউলিপ সী-পার্লে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে ইনানী পৌছালে অভ্যর্থনার পর মহামান্য রাষ্ট্রপতি তারকা হোটেল রয়েল টিউলপে সাময়িক বিশ্রাম নেন। সেখান থেকে বিকাল ৩টা ২৫ মিনিটের দিকে সড়ক পথে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। ওখানে ডি-৫ ব্লক পরিদর্শন শেষে শরণার্থীদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। সন্ধ্যায় তিনি হোটেলে ফিরে আসেন।
তিনি আরো জানান, সোমবার বাংলাদেশ নৌবাহিনী আয়োজিত নৌবাহিনীর প্রতিনিধি সম্মেলন ‘আইওএনস মাল্টিলাটেরাল মেরিটাইম সার্চ এন্ড রিসার্চ এক্সারসাইজ (আইএমএমএসএআরইএক্স) উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ৯টি পর্যবেক্ষক দেশসহ ২৩ দেশের নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ, নৌপ্রধান, সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মেরিটাইম বিশেষজ্ঞগণ এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন। সোমবার বিকাল ৪ টায় ইনানীর একই হেলিপ্যাড থেকে আবারো হেলিকপ্টার যোগে ঢাকা ফিরে যাবেন তিনি।


রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেয়ার পর কক্সবাজারে এটি তাঁর দ্বিতীয়বারের মত সফর। রাষ্ট্রপতির এ সফরকে ঘিরে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে পর্যটন নগরীর বীচ এলাকা। কলাতলীর ‘জ’ ভাস্কর্য মোড় থেকে মেরিন ড্রাইভের ইনানীর তারকা হোটেল রয়েল টিউলিপ সী পার্ল পর্যন্ত এ সাজের আওতায় আসে। নৌবাহিনীর প্রতিনিধি দলের সম্মেলন আসা অতিথি এবং রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানাতে নির্মাণ করা হয় প্রায় দু’ডজন ওয়েলকাম গেইট। রাষ্ট্রপতিকে বরণে হেলিপ্যাড প্রস্তুতি ও অর্ভ্যথনা জানাতে রয়েল টিউলিপের সামনে সমুদ্র পাড়ে তৈরি করা হয় মঞ্চ। নৌকায় ও রয়েল টিউলপের সামনে উড়ছে লাল সবুজের পতাকাসহ আগাত দেশের নিশানা। জোরদার করা হয়েছে নিরাপাত্তা ব্যবস্থা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত ২৫ আগস্টের পর থেকে ৬ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এসব বাস্তুচ্যুত মানুষ আঘাতপ্রাপ্ত, ক্ষুধার্ত এবং কেউ কেউ বন্দুকের গুলি, চাকু, আগুন ও স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। আর এর আগে বিভিন্ন সময় চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। সব মিলিয়ে বর্তমানে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাক বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।