স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অাসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, টেকনাফে আনসার ব্যারাক থেকে লুন্ঠিত এগার অস্ত্র দু:সাহসিক অভিযানে উদ্ধার করে র্যাব দেশকে একটি বড় ধরণের দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা করেছে। প্রধানমন্ত্রী মানুষকে ভালবাসেন, মানবতাকে সম্মান করেন। তাই বনজসম্পদ ধ্বংস ও পরিবেশ এবং আইনশৃংখলা বিনষ্ট করছে জেনেও মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে স্বসম্মানে নিজ দেশে তাদের ফিরিয়ে দেয়ার। মানবিকতা ও শৃংখলা বজায় রাখতেই রোহিঙ্গাদের ঠেঙ্গারচরে স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে। তবে মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করেই রোহিঙ্গাদের ঠেঙ্গারচর পাঠানো হবে।
কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের নিরাপত্তায় থাকা আনসার ক্যাম্প থেকে লুট হওয়া বাকি ৬ অস্ত্র উদ্ধারস্থল মিয়ানমার সীমান্তের নাইক্ষ্যংছড়ি তুমব্রু পশ্চিমকুল গহীন পাহাড়ী এলাকায় প্রেসব্রিফিং কালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন।
চলমান পরিবহণ ধর্মঘট অযুক্তিক দাবি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, একটি বিচারিক ঘটনায় স্বাক্ষ্য প্রমাণে ফাঁসি ও যাবজ্জীবনের রায় হয়েছে। রায়ের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নিতে পারতো পরিবহণ শ্রমিকরা। কিন্তু শ্রমিকরা অযৌক্তিক আন্দোলনের পথ বেছে নিয়ে পুলিশ ক্যাম্পে হামলা করে। এটা চরম অন্যায়। আইনপ্রয়োগকারি সংস্থা চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে।
বুধবার বিকেল পৌনে তিনটায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রেস ব্রিফিং শুরু করেন। এসময় র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমদ, আনসারের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন, উখিয়া উপজেলা নির্বাহি কর্মকতা মো. মঈন উদ্দিন, থানার ওসি আবুল খায়েরসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। লুণ্ঠিত সকল অস্ত্র উদ্ধার হওয়ায় প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন মন্ত্রী।
র্যাব কক্সবাজার ক্যাম্পের ইনচার্জ লে. কমান্ডার আশিকুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং এলাকায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র লুটের ঘটনার মূল হুতা রোহিঙ্গা ডাকাত নুরুল আলমকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে নিয়েই র্যাব সদস্যরা অস্ত্র উদ্ধারে অভিযানে নামে। এবং বুধবার সকালে বাকি ৬টি অস্ত্র (এসএমজি এবং রাইফেল) উদ্ধার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৭)। অস্ত্র লুটের মূল নায়ক নুরুল আলম মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার মংডু থানার বাসিন্দা।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৩ মে ভোর রাতে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়ার মুচনী এলাকার নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার ক্যাম্পে সশস্ত্র হামলা চালায় এক দল দূর্বৃত্ত। এতে নিহত হন আনসার ক্যাম্পের কমান্ডার মো. আলী হোসেন। লুট করা হয় ১১ টি বিভিন্ন ধরণের আগ্নেয়াস্ত্র ও ৬৭০ টি গুলি।
এ ঘটনায় জড়িত হিসেবে প্রথম থেকে রোহিঙ্গাদের দায়ী করে আসছে র্যাব ও পুলিশসহ আইন-শৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা।
ঘটনার পরদিন অজ্ঞাত পরিচয় ৩০-৩৫ জনের বিরুদ্ধে আনসার ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার মো. আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ও পুলিশ।
সর্বশেষ গত ১০ জানুয়ারি ৩ জনকে আটক করে ১টি এসএমজি, ৬টি ম্যাগাজিন, ১টি চাইনিজ রাইফেল ও ২টি এম-টু চাইনিজ রাইফেল উদ্ধার করতে সক্ষম হয় র্যাব। বাকি অস্ত্রগুলো ৬টি অস্ত্র বুধবার উদ্ধার করতে পেরেছে র্যাবের চৌকষ দল।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।