এম.এ আজিজ রাসেল: শহরে হাসপাতাল সড়কের বেহালদশা সৃষ্টি হয়েছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের উঠে গেছে কার্পেটিং। এক হাত পর পর ছোট-বড় গর্তগুলো জনমনে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে যান চলাচলসহ কোমলমতি শিক্ষার্থী ও পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পর্যটকরা এখান থেকে চলাচল করার সময় বিরূপ মন্তব্য করছে পর্যটন শহর ও কক্সবাজার পৌরসভা নিয়ে। অনেকেই এই অবস্থার জন্য দায়ী করছেন পৌর মেয়রের প্রতি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গোলদিঘির পাড়, সরকারি বালক-বালিকা স্কুলের সম্মুখ, স্টেডিয়াম মোড়, প্রিপ্যার্যটরি স্কুল সড়ক, শেভরণ ও ডিজিটাল হাসপাতালের সামনের সড়ক পর্যন্ত চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম সড়কের ওপর তৈরি কালভার্ট ভেঙে তিনটি বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের চারপাশে সৃষ্টি হয়েছে অন্তত দুই শতাধিক ছোট-বড় গর্ত। এসব গর্তের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। এছাড়া হরহামেশাই লেগে থাকে তীব্র যানজট। এই সড়ক দিয়ে জরুরীভাবে কোন মুমূর্ষ রোগিকে নিয়ে গেলে অবস্থা আরো সংকটাপন্ন হয়ে যায়। সম্প্রতি ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে উঠে যায় এপ্রোচ। যার দরূন অবস্থা আরো ভয়াবহতায় রূপ নেয়। স্থানীয়রা সড়ক সংস্কারে নিকট দাবি জানিয়ে আসলেও নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে আছে পৌর কর্তৃপক্ষ। কিছু দিন আগে শহরের সড়ক-উপসড়কের সংস্কারের দাবিতেও মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে একাধিক স্বেচ্ছসেবী সংগঠন। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি।
স্থানীয় চা-দোকানি সুমন বলেন, প্রতিদিনই কালভার্টের ভাঙা অংশে রিকশা, টমটমের (ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক) চাকা আটকে দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনা এড়াতে গর্তের মধ্যে স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী বেশ কয়েকবার বাঁশের খুঁটির সঙ্গে লাল নিশানা টাঙিয়েছেন। কিন্তু তবুও সংস্কার করা হচ্ছে না।
মোহাজের পাড়ার সমাজ সেবক সালাহ উদ্দিন সেতু বলেন, এলাকা থেকে বের হওয়া দায় হয়ে পড়েছে। এই সড়ক কেন্দ্রীক সরকারি হাসপাতাল, সরকারি বালক-বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান, জেলা পরিষদ কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, কক্সবাজার আদালত ভবন ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় রয়েছে।
রয়েছে একাধিক প্রাইভেট হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিদিন হাজারো শিক্ষার্থী, পর্যটক ও নানা পেশার মানুষ এখান থেকে চলাচল করে থাকে। কিন্তু বর্তমানে সড়কের করুণদশায় অসহ্য যন্ত্রণা মাথায় নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে সবাইকে।
সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ পুঁ চ নু বলেন, হাসপাতালে প্রতিদিন অনেক রোগী আসে। ভঙ্গুর সড়ক দিয়ে চলাচলে রোগীদের কষ্ট আরো বেড়ে যায়। তাছাড়া ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা হাটতে গিয়ে গর্তে পড়ে আহত হচ্ছে প্রতিদিন। এই অবস্থায় বৃহত্তর স্বার্থে সড়কের সংস্কার জরুরী হয়ে পড়েছে।
জনদুর্ভোগ নিয়ে কক্সবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাহী সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আলহাজ্ব শফিকুর রহমান কোম্পানী বলেন, পর্যটন শহরের উন্নয়ন ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সরকার একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। কক্সবাজারকে বিশ্ব মাঝে আরো অপরূপভাবে বিকশিত করতে হাজারো কোটি টাকা ব্যয়ে এসব প্রকল্প করা হচ্ছে। কিন্তু পর্যটন শহরের গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক বর্তমানে পথচারীদের জন্য অভিশাপে পরিণত হয়েছে। এর চাইতে গ্রামের সড়কও অনেক ভালো। তাই পর্যটনের শ্রী বৃদ্ধিসহ দুর্ভোগ লাঘবে সড়কের সংস্কার করা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, ভারী বৃষ্টিপাতের জন্য শহরের অধিকাংশ সড়ক নাজুক হয়ে পড়েছে। এসব সড়ক সংস্কারে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক এলাকায় কাজ শুরু হয়েছে। বৃষ্টির জন্য সব সড়কের কাজ করা যাচ্ছে না। আবহাওয়া ভাল হলে সড়কের সংস্কার করা হবে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।