এই শুনানিতে মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের এক প্রশ্নের জবাবে নিশা দেশাই বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতির ব্যাপারে আমরা সজাগ রয়েছি। আশা করছি পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে শিগগিরই রাজনীতিকরা শান্তিপূর্ণ সমাধানে উপনীত হবেন।’
বাংলাদেশে গণতন্ত্র এগিয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রত্যাশিত উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখতে রাজনৈতিক স্থিতির বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের ফরেন অ্যাফেয়াসের সাব কমিটি ‘অন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ আয়োজিত শুনানিতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন নিশা দেশাই বিসওয়াল এবং ইউএস এইডের এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর সহকারী প্রশাসক জোনাথন স্টিভার্স।
সভাপতিত্ব করেন সাব-কমিটির চেয়ারম্যান কংগ্রেসম্যান ম্যাট সালমন। ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ উপদেষ্টা ও বিএনপির বৈদেশিক দূত জাহিদ এফ সরদার সাদী উক্ত শুনানির সময় উপস্থিত ছিলেন।
২১৭২ যার্বার্ন হাউজ অফিস ভবনে অনুষ্ঠিত শুনানিতে অংশ নেন সাব কমিটির সদস্য গ্রেস মেং, ক্যালিফোর্নিয়ার কংগ্রেসম্যান ব্র্যাড শারমেন, এমি বেরা, ও হাইয়োর স্টিভ শ্যাবট ও জেফ ডানকান।
বিসওয়াল তার বক্তব্যে লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানে যেসব মৌলিক অধিকার রয়েছে তার চর্চা করছিলেন মার্কিন নাগরিক অভিজিৎ। কিন্তু বাংলাদেশের চলমান পেক্ষাপোটে তার অভিমত ব্যক্ত করার সুযোগ দেওয়া হয় নাই।
তিনি আরো বলেন, অভিজিত হত্যায় জড়িতদের তদন্তে সহায়তা করছে এফবিআই। ঘাতকদের বিচারে সোপর্দ করতে যুক্তরাষ্ট্র বদ্ধপরিকর।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন লেখক অভিজিৎ রায়। এ সময় চাপাতির আঘাতে তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও আহত হন। চাপাতির কোপে একটি আঙুল হারানো বন্য যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গেছেন। মাথায়ও জখম রয়েছে তার। অভিজিৎ ও বন্যা দুজনই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
এই ঘটনার তদন্তে সহায়তা করতে এফবিআইয়ের একটি দল ঢাকায় এসে হামলার স্থান পরিদর্শন ও আলামত সংগ্রহ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের ফরেন অ্যাফেয়ার্সের সাব কমিটি ‘অন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ আয়োজিত শুনানিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। পূর্বেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে জিএসপি বাতিল করে যুক্তরাষ্ট্র। গণতন্ত্রের কাঠামো এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে আরো অবদান রাখতে পারে তা নিয়ে কথা বলেন মার্কিন কংগ্রেস সদস্যরা। ২০১৬ অর্থবছরে ইউএসএইড দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সহায়তার জন্য যে প্রস্তাব করেছে সে ব্যাপারে অনুসন্ধান চালাবে সাব কমিটি ‘অন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কিভাবে জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাতে কাজ করছে এবং এ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় মার্কিন স্বার্থ সংরক্ষিত হচ্ছে কি না টা চুল চেরা অনুসন্ধান করবে এই কমিটি।
একই সঙ্গে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানে প্রত্যাশা অনুযায়ী মানবাধিকার উন্নয়ন হচ্ছে কি না তাও পর্যালোচনা করে দেখবে যুক্তরাষ্ট্র।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।