নিজস্ব প্রতিবেদক:
সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিশু শ্রমের বিষয়টি উদ্বেগজনক বলে জানিয়ে শিশু শ্রম বিষয়ে বিদ্যমান আইন প্রয়োগের দাবী জানানো হয়েছে অনলাইনে অনুষ্ঠিত ২দিন ব্যাপী এক কমর্শালায়।
উইনরক ইন্টারন্যাশনালের সহযোগীতায় একলাবের আয়োজনে গত (২৮ ও ২৯ জুন) অনলাইনে অনুষ্টিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন সিভিল সোসাইটি অর্গানাজেশনের কর্মীরা অংশ গ্রহন করেন। কর্মশালায় বলা হয় কক্সবাজার শহরতলীর নাজিরার টেকের বিশ্বের বৃহত্তম শুঁটকি পল্লীতে কর্মরত তিন সহস্রাধিক শিশু মারাত্মক স্বাস্থ ঝুঁকিতে রয়েছে। শিশুশ্রম ছাড়াও তাদের ওকালতি স্তরের বিকাশ এবং বাধ্যতামুলক শিশুশ্রমকে সঠিকভাবে বোঝার জন্য সুশীল সমাজের দক্ষতা বৃদ্ধি এ আয়োজন করেন।
কর্মশালা থেকে শ্রমে থাকা শিশুদের কর্মঘন্টা বাড়ার পাশাপাশি তাদের কর্ম পরিবেশ আরো খারাপ হতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করে এবং স্থানীয় পর্যায়ে কভিড পরবর্তী পর্যায়ে গবেষনা কার্য়ক্রম পরিচালনা এবং শুটকি খাতে শিশুদের কাজকে সরকার ঘোষিত ঝুঁকিপুর্ন কাজের তালিকায় যুক্ত করার জন্য আহবান জানান।
ক্লাইম্ব প্রকল্প পরিচালক ও সভাপতি এ এইচ জামান খান বলেন, এ দেশের ব্যস্ততম ট্রাফিক সিগন্যাল থেকে শুরু করে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক কারখানা, গ্যারেজ, ওয়ার্কশপ, এমনকি শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণসহ সবখানেই ‘শিশুশ্রম দৃশ্যমান। দরিদ্র পিতা-মাতা স্বেচ্ছায় সংসার চালানোর জন্য নিজের শিশুকে শ্রমের দিকে ঠেলে দেন। অন্যদিকে শ্রমে নিয়োজিত শিশুরা সহজলভ্য, সাশ্রয়ী ও সহজেই নিয়ন্ত্রণ যোগ্য, তাই নিয়োগকর্তারা ঝুঁকিপূর্ণ ও ঝুঁকিহীন সবধরনের কাজে শিশুদের নিয়োগে অতি উৎসাহী। তিনি কভিড পরবর্তী সময়ে এ শ্রমে নিয়োজিত শিশুদের বর্তমান সুরক্ষা পরিস্থিতির সাথে অভ্যস্থ করা এবং তাদেরকে সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত করার প্রতি গুরুত্বআরোপ করেন।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদ উল্লাহ মারুফ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, ক্লাইম্ব প্রকল্প পরিচালক জনাব এইচ এম জামান খান, উইনরক ইন্টারন্যাশনাল এবং একলাবের নির্বাহী পরিচালক জনাব সৈয়দ তারিকুল ইসলাম।
প্রধান অতিথি তার বক্কব্যে তিনি-বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে শিশুশ্রম একটি স্বাভাবিক বিষয় হিসাবেই বিবেচিত সেজন্যই “শিশুশ্রমে কভিড-১৯ এর প্রভাব মোকাবিলায় সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে সম্বন্বিত উদ্যোগ নেওয়া জরুরী-“বলে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিএমআইএমবি প্রকল্পের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর মাহবুব উল আলম ও অ্যাডভোকেসি অফিসার মোঃ মোশারফ হোসেন অংশগ্রহণকারীদের নিবন্ধন করে অনুষ্ঠানের শুরু করেন। প্রশিক্ষণ অধিবেশনে অতিথির বক্তব্য দিয়ে উদ্বোধন করেন জেলা মহিলা বিষয়ক পরিচালক মিঃ সুব্রত বিশ্বস।
তিনি প্রশিক্ষণের অংশগ্রহণকারী সকলকে বার্তা বলেন, বর্তমান সরকার শিশু সুরক্ষার পাশাপাশি শিশুশ্রমের জন্যও কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছিল। এছাড়াও বাচ্চাদের বিরুদ্ধে কারো উপর যদি অন্যায় হয় তবে আপনি সরাসরি স্থানীয় থানায় গিয়ে অভিযোগটি জানাতে পারেন। আপনি আমাদের টোলমুক্ত জাতীয় শিশু সহায়তা লাইন ১০৯৮ বা ১০৯ থেকে সহায়তা নিতে পারেন।
বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য রেখে সঞ্চালনা করেন, ক্লাইম্ব প্রকল্পের সিভিক এনগেজম্যান্ট এন্ড ক্যাপাসিটি ডেভেলপম্যান্ট স্পেশাললিষ্ট তানভির শরীফ, মনিটরিং এন্ড ইভুলেশন স্পেশাললিষ্ট খায়রুল ইসলাম। এতে অংশগ্রহন করেন, অর্নব, ব্র্যাক, প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, পালস, কোডেক, ইপসা, নোংগর, স্কাস. রাইটস যশোর,ওর্য়াল্ড ভিশন বাংলাদেশ, ডি এসকে, মুক্তি কক্সবাজার, এক্সপাউরালসহ বিভিন্ন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ।
উল্লেখ্য, শুঁটকি খাতের শিশুশ্রম পরিস্থিতি পর্যালোচনা পুর্বক গ্রহনযোগ্য কর্ম পরিবেশ তৈরী এবং এই খাতের শিশুশ্রমকে সরকার ঘোষিত ঝুঁকিপুর্ণ শিশুশ্রমের তালিকায় যুক্ত করার লক্ষ্যে ক্লাইম্ব কাজ করছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।