২৪ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২১ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি   ●  মেরিন ড্রাইভে ইয়াবাসহ নারী আটক   ●  সড়ক দখল করে নৈরাজ্য সৃষ্টি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়ার অভিযোগে কক্সবাজারে আ.লীগের ৯১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

শীর্ষ জঙ্গি সোহেল মাহফুজ বাংলাদেশে!

tmp_27250-1481256742-1170398355

গুলশান হামলার গ্রেনেড সরবরাহকারী শীর্ষ জঙ্গি নেতা সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা নসরুল্লাহ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। দীর্ঘদিন ভারতে আত্মগোপনে থাকার পর এই জঙ্গি নভেম্বর মাসে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। উত্তরাঞ্চলের চাঁপাইবনাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে তিনি বাংলাদেশে ঢুকে পড়েন। ঢাকার কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে দিল্লি। সম্প্রতি র‌্যাব ও পুলিশের পৃথক দুটি দল ভারত সফর করে। সফরকারী দলের কাছে পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দারা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, সোহেল মাহফুজ ঢাকায় ফিরে গেছেন। তারা সম্ভাব্য সীমান্ত পয়েন্ট হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার কথাও বলেছেন। র‌্যাব ও পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
দায়িত্বশীল এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, সোহেল মাহফুজ দুর্ধর্ষ একজন জঙ্গি। বাংলাদেশে এই জঙ্গির প্রবেশের বিষয়ে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) একটি টিম ঢাকার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। এনআইএ’র তিন কর্মকর্তা জঙ্গি সংক্রান্ত বিষয়ে পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ভারতে জামাই ফারুক নামে যে জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তার কাছ থেকেও সোহেল মাহফুজ সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। গ্রেফতারের পর তিনি স্বীকার করেছেন, ভারতে পালিয়ে থাকা সোহেল মাহফুজ বাংলাদেশে প্রবেশ করতে বেশ কিছুদিন ধরেই চেষ্টা চালান। আর তার সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুই ব্যক্তির গভীর সখ্য ছিল। এদের মধ্যে একজন হুন্ডি ব্যবসা করেন। অপরজন অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। একজনের নাম মিজান।
জানা গেছে, গত মাসে পুলিশ ও র‌্যাবের দুটি পৃথক দল ভারত সফর করে। তারা জঙ্গি ইস্যু নিয়ে এনআইএ, এসটিএফ ও সিআইডি কলকাতার সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। এসব বৈঠকের পর পুলিশ ও র‌্যাবের দুটি দলই জামাই ফারুককে পৃথক পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ময়মনসিংহের ত্রিশালে জঙ্গি ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনার হোতা জামাই ফারুক ঢাকার গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি গুলশান হামলার গ্রেনেড সরবরাহকারী সোহেল মাহফুজ সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন।
ঢাকার গোয়েন্দা দলের সদস্যদের কাছে এনআইএ’র কর্মকর্তারা জানান, অক্টোবর থেকেই ভারত ত্যাগের চেষ্টা অব্যাহত রাখেন সোহেল মাহফুজ। এ জন্য তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থান নেন। পরে সুযোগ বুঝে চাঁপাইনবাবগঞ্জ হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। তবে তাকে ধরতে এনআইএ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তবর্তী এলাকা পর্যন্ত এসেছিল। কিন্তু তার আগে সোহেল বাংলাদেশে ঢুকে যান।
সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, সোহেল মাহফুজ বাংলাদেশে অবস্থানের তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পর একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তাকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছে। বৃহস্পতিবারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সাভার ও আশুলিয়ায় দুটি সম্ভাব্য স্থানে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ভারত থেকে এই জঙ্গি সাভার ও আশুলিয়ায় পরিচিত দু’জনের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। এ ছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকায় যাদের সঙ্গে সোহেল নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন, তাদের একজন ইতিমধ্যে গোয়েন্দা নজরে আছে। তার কাছ থেকে সোহেলের অবস্থান নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন গোয়েন্দারা।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম প্রতিবেদককে বলেন, সোহেল মাহফুজকে ধরতে অভিযান চলছে। এ জন্য ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশ জঙ্গি দমনের অংশ হিসেবে তথ্য বিনিময় করছে। তিনি বলেন, গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় গ্রেনেড সরবরাহ করেছিলেন সোহেল। নিষিদ্ধ সংগঠন জেএমবির প্রতিষ্ঠাকালীন শূরা সদস্য সোহেল মাহফুজ বছর দুই আগে নতুন জেএমবিতে যোগ দেন। দীর্ঘদিন তিনি ভারতে পালিয়ে ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে র‌্যাবের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, সোহেল মাহফুজ ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছেন এমন তথ্য তারা পেয়েছেন। তিনি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন এ বিষয়ে দিল্লির পক্ষেও তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এই জঙ্গিকে ধরতে পারলে গুলশান হামলা সম্পর্কে আরো তথ্য জানা যাবে। এই কর্মকর্তা বলেন, সোহেল মাহফুজ বর্তমানে নিউ জেএমবির অপারেশনাল কমান্ডারের দায়িত্ব নিয়েছেন। জেএমবির এ নেতার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। ছাত্রজীবনে সোহেল মাহফুজ শিবিরের সদস্য ছিলেন। বোমা তৈরি করতে গিয়ে তার বাম হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তিনি এক হাত দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র চালাতে পারেন।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।