১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসার কারণেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। শেখ হাসিনা আসার কারণেই বঙ্গবন্ধুর খুনিদের শাস্তি হয়েছে। তিনি ফিরে এসে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কারণেই আজ দেশ উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার পথে আছে। শেখ হাসিনার হাতে আওয়ামী লীগের পতাকা তুলে দিয়ে দলের নেতা-কর্মীরা ভুল করেননি—এটা আজ প্রমাণিত।
শেখ হাসিনার ৩৭তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় দলটির নেতারা এভাবেই দিবসটিকে স্মরণ করলেন। ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৮১ সালের এই দিনে শেখ হাসিনা ছয় বছর বিদেশে কাটিয়ে দেশে ফেরেন। এর আগে তাঁকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
এই দিনের কথা স্মরণ করে দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমরা ঐক্যের প্রতীক হিসেবে শেখ হাসিনার হাতে আওয়ামী লীগের পতাকা তুলে দিয়েছিলাম। আজ আমরা গর্ব করতে পারি যে, আমরা সেদিন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মর্যাদা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু বিদেশে সফর করলে এবং আন্তর্জাতিক কোনো সম্মেলনে যোগ দিতে গেলে তিনি (বঙ্গবন্ধু) সবার আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হতেন। শেখ হাসিনাও এখন সবার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনা ছাড়া বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার হতো না। তিনি না থাকলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও হতো না—এটা প্রমাণিত হয়েছে। শেখ হাসিনা আলোর পথযাত্রী।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশকে স্বাধীন করে বঙ্গবন্ধু এ দেশে রাজনৈতিক ধারা (লিগ্যাসি) সৃষ্টি করে গেছেন। তাঁর মৃত্যু হবে না। শেখ হাসিনাও দেশে উন্নয়ন ও অগ্রগতির একটি ধারা সৃষ্টি করেছেন। তাঁরও মৃত্যু হবে না।
দলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে গ্রেনেডের প্রধান লক্ষ্য ছিলেন শেখ হাসিনা। এখনো সেই গ্রেনেড তাঁর পিছু তাড়া করছে। এই গ্রেনেড হামলা যারা করেছিল, তখন তারা ক্ষমতায় ছিল। এখন তারা বিরোধী দলে। তিনি বলেন, ১৯৭৫, ২০০৪ সাল আর ২০১৭ সাল এক নয়। এখন আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। শেখ হাসিনার কিছু হলে সারা বাংলায় আগুন জ্বলবে।
অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন বলেন, শেখ হাসিনার মতো চমৎকার, সৎ ও ধার্মিক নারী তিনি দেখেননি। বাবা, মা, ভাইসহ পরিবারের সব হারিয়েও তিনি মানুষের জন্য কাঁদেন। দেশের কথা ভাবেন। এই শক্তি শুধু তাঁরই আছে।
দৈনিক সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার বলেন, সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের তথ্য সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ নেতাদের। তিনি বলেন, গণমাধ্যম রক্ষণশীলতায় ভুগছে। সরকারের পক্ষে লিখলে চলবে না—এই দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে। খারাপ হলে খারাপ তুলে ধরতে হবে। আর ভালো হলে সেটাও বলতে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, তিনি ২২ বছর পরবাসী ছিলেন। এই পরবাসের যে নির্যাতন, তা খুবই কঠিন। শেখ হাসিনাও সেই পরবাসের নির্যাতন ভোগ করেছেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক বলেন, শেখ হাসিনা অর্থনীতির সব ভবিষ্যদ্বাণী ও অনুমান মিথ্যা প্রমাণ করেছেন। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদের পরিচালনায় আরও বক্তৃতা করেন মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আবদুস সোবহান গোলাপ, এ কে এম রহমত উল্লাহ, নুজহাত চৌধুরী প্রমুখ।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।