২৬ নভেম্বর, ২০২৪ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

সংসদে বাল্য বিবাহ আইন পাস

নারীদের ক্ষেত্রে ‘বিশেষ প্রেক্ষাপটের’ বিধান রেখে এবং নারী ও পুরুষের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স যথাক্রমে ২১ এবং ১৮ বছর নির্ধারণ করে বাল্য বিবাহ আইন পাস হয়েছে।

সোমবার জাতীয় সংসদে বাল্য বিবাহ নিরোধ বিল-২০১৭ পাস হয়। খবর বাসস’র।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন। পরে কণ্ঠভোটে বিলটি পাস হয়।

জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম, সেলিম উদ্দিন ও বেগম রওশন আরা মান্নান বিলের ওপর জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাব আনলেও তা কণ্ঠ ভোটে নাকচ হয়ে যায়।

বিলে বাল্যবিয়ে বন্ধে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা এবং স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধির সাধারণ ক্ষমতা নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, উপজেলা প্রাথমিক বা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি কোনো ব্যক্তির লিখিত বা মৌখিক আবেদন অথবা অন্য কোনো মাধ্যমে বাল্য বিয়ের সংবাদ পেলে তিনি উক্ত বিয়ে বন্ধ করবেন। অথবা বিধিমালার দ্বারা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

বিলে স্ব-উদ্যোগে বা কোনও অভিযোগের ভিত্তিতে অথবা অন্য কোনও মাধ্যমে তথ্যের ভিত্তিতে নিশ্চিত হয়ে আদালত কর্তৃক কোনও বাল্য বিয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিলে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গকারীকে ৬ মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত এবং অনাদায়ে আরও ১ মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান করা হয়েছে।

বিলে বাল্য বিয়ের ক্ষেত্রে মিথ্যা অভিযোগজনিত অপরাধে অনধিক ৬ মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত এবং অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ১ মাস কারাদণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান করা হয়েছে।

বিলে বাল্য বিয়ে করলে প্রাপ্ত বয়স্ক নারী বা পুরুষ, যিনি দায়ী হবেন তাকে অনধিক ২ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ১ লাখ টাকা অর্থ দণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত এবং অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৩ মাস কারাদণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান করা হয়েছে।

তবে অপ্রাপ্ত বয়স্ক নারী বা পুরুষের ক্ষেত্রে অনধিক ১৫ দিনের আটকাদেশ বা অনধিক ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় ধরনের শাস্তিযোগ্য করার বিধান করা হয়েছে।

বিলে বাল্য বিয়ে সংশ্লিষ্ট পিতা-মাতাসহ অন্যান্য ব্যক্তির ক্ষেত্রে বাল্য বিয়ের জন্য অনধিক ২ বছর ও অন্যূন ৬ মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত এবং অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৩ মাস কারাদণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান করা হয়েছে।

বিলে বাল্য বিয়ে সম্পাদন বা পরিচালনাকারীর ক্ষেত্রে অনধিক ২ বছর ও অন্যূন ৬ মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত এবং অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৩ মাস কারাদণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান করা হয়েছে।

বিলে বাল্য বিয়ে নিবন্ধকের ক্ষেত্রে লাইসেন্স বাতিল, তাকে অনধিক ২ বছর ও অন্যূন ৬ মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত এবং অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৩ মাস কারাদণ্ডের বিধান করা হয়েছে।

এ বিলের অন্যান্য বিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, কোনও বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্ত বয়স্ক কোনও নারীর সর্বোত্তম স্বার্থে, আদালতের নির্দেশ এবং পিতা-মাতার সম্মতিক্রমে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণক্রমে বিবাহ সম্পাদিত হলে তা এ আইনের অধীন অপরাধ বলে গণ্য হবে না বলে বিলে বিশেষ বিধান করা হয়েছে।

এছাড়া বিলে বাল্যবিয়ে বন্ধে উদ্যোগী হতে শর্তে বাল্য বিয়ের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি, বয়সের প্রমাণের দলিল, ক্ষতিপূরণ প্রদান, অপরাধের আমলযোগ্যতা, জামিন যোগ্যতা এবং অ-আপোষ যোগ্যতা, বিচার পদ্ধতি, সরেজমিনে তদন্ত, মোবাইল কোর্ট আইন-২০০৯-এর প্রয়োগ, অপরাধ গ্রহণ ও আমলের সময়সীমাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিধান করা হয়েছে।

এছাড়া বিলে বিধিমালা দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি বাল্য বিয়ে প্রতিরোধের জন্য জাতীয়, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিরোধ কমিটি গঠন ও এর কার্যাবলী নির্ধারণের বিধান করা হয়েছে।

বিধিমালায় স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা এবং স্থানীয় পর্যায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তির সমন্বয়ে এ কমিটি গঠনের বিধান করা হয়েছে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।