পদ্মা সেতু প্রকল্প সম্পর্কে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগে বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলার দাবি উঠেছে সংসদে। রবিবার জাতীয় সংসদে একাধিক সিনিয়র মন্ত্রীসহ সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যরা অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারকে বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করা দাবি জানান। এ সময় কোনও কোনও সংসদ সদস্য নিজেরাও মামলার বাদী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
বিরোধী দলের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ এ অনির্ধারিত আলোচনার সূত্রপাত করেন। বিষয়টি নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা সংসদে আলোচনা হয়। এতে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সরকার দলের সিনিয়র সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. দীপু মনি, আবদুল মান্নান, জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল, জাতীয় পার্টির জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু বক্তব্য রাখেন।
বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুললে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন পদত্যাগ করেন। পরে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। তবে এই প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ খারিজ করে শুক্রবার কানাডার আদালত বলেছেন, ‘এই মামলায় কোনও প্রমাণ হাজির করা হয়নি। প্রমাণ হিসেবে যেগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে সেগুলো অনুমানভিত্তিক।’
বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের কারণে রাষ্ট্রের মর্যদাহানি হয়েছে। তাই রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা উচিত।’ রাষ্ট্রের মর্যাদা পুনরুদ্ধারে রাষ্ট্রীয়ভাবে মামলা করতে হবে। তিনি সরকারকে বাদী হয়ে বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করার পরামর্শ দেন।
জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রীকে মোশাররফ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলার বাদী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘একটা জাতি শেয়ার মার্কেট নয়, ইট পাথরের স্থাপনা নয়। অথচ বিশ্বব্যাংক একটি জাতিকে অপমান করেছে। তাদের নামের আগে বিশ্ব কেটে দিলে ভালো হয়। বিশ্ব শব্দের মাজেজা তারা ধরে রাখতে পারেননি। বাঙালি অষ্টম বৃহত্তম জাতি। অন্যায়ভাবে একটি জাতিকে অপমান করার সাজা কী হতে পারে, তা আমি ব্যাখ্যা করতে পারব না। এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘আমি মন্ত্রী থাকার সময় মার্কিন কূটনীতিকেরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেছিলেন, ইউনুসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরানো হলে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করবে না।’
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।