২৭ নভেম্বর, ২০২৪ | ১২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু ঈদের পরই

আসন্ন ঈদুল ফিতরের পরই আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঈদের পরপরই জুলাই মাসে সংসদ নির্বাচন সম্পর্কিত আইন-বিধির সংশোধনীর পরিকল্পনা, আগস্টে প্রস্তাবিত আইন-বিধির খসড়া তৈরি, নভেম্বরে ভেটিংয়ের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ এবং ডিসেম্বরে আইন-বিধি চূড়ান্ত করা হবে। এদিকে আগস্ট মাসে ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের কাজও শুরু করবে কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আইন-বিধিসহ নানা বিষয়ে সংলাপ আয়োজন করা হবে জুলাইয়ে। পাশাপাশি ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু করা হবে সেপ্টেম্বরে। আর অক্টোবরে নতুন রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধিত হওয়ার সুযোগ দিতে আবেদন আহ্বান ও তাদের কার্যক্রম যাচাই-বাছাই করা হবে। একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসির খসড়া রোডম্যাপে এসব পরিকল্পনা রাখা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, এই খসড়া রোডম্যাপ নিয়ে আগামীকাল রোববার (১৪ মে) বৈঠকে বসবে ইসি কমিশন। নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠেয় ওই বৈঠকে রোডম্যাপ চূড়ান্ত করা হতে পারে। এরপরই রোডম্যাপ বাস্তবায়নে প্রস্তুতি শুরু করবে ইসি।
দশম সংসদ নির্বাচনের পর ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি শপথগ্রহণ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট। বিদ্যমান আইনের আলোকে ২০১৯ সালের ১২ জানুয়ারির আগেই একাদশ সংসদ নির্বাচন করতে হবে। তফসিল দিতে হবে এরও কমপক্ষে তিন মাস আগে। সে হিসাবে মাঝে সময় রয়েছে মাত্র দেড় বছর। এ সময়ের মধ্যে আগামী নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি শেষ করতে হবে কমিশনকে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে করা এই রোডম্যাপে ২৩টি এজেন্ডা নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই রোডম্যাপ অনুযায়ী নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দু’দফা বৈঠক করবে ইসি। এ ছাড়া আংশিক ডিজিটাল ভোটিং মেশিন (ডিভিএম) চালুরও পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের। ইসি সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ এ বিষয়ে বলেন, আগামী ১৪ মে নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে কমিশনের বৈঠক করার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে এটি চূড়ান্ত হলে এজেন্ডাগুলো বাস্তবায়নে কাজ শুরু করবে ইসি। এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান তিনি। তবে ১১ মে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, ডিভিএম বা ইভিএম চালুর ব্যাপরে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ করা হবে। রাজনৈতিক দলগুলো সবাই রাজি থাকলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইসি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, রোডম্যাপে আইন-বিধি সংশোধন ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। তাই এটি প্রথমেই রাখা হয়েছে। রমজানের ঈদের পরই চলতি বছরের জুলাই মাসে সংসদ নির্বাচন সম্পর্কিত আইন-বিধির সংশোধনীর পরিকল্পনা ও আগস্টে প্রস্তাবিত আইন-বিধির খসড়া তৈরি করা হবে। জুলাইয়ে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা অনুষ্ঠান, নভেম্বরে আইন-বিধি সংশোধন সম্পন্ন করে আইন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ, ডিসেম্বরে আইন-বিধি চূড়ান্ত করা হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, চলতি বছরের আগস্টে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা শেষে চূড়ান্ত করা হবে। আগামী অক্টোবরে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের আবেদন আহ্বান করা হবে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নতুন রাজনৈতিক দলের আবেদন নিষ্পত্তি করে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন তালিকা প্রকাশ করা হবে।
রোডম্যাপে একাদশ সংসদ নির্বাচনে আংশিকভাবে ডিজিটাল ভোটিং মেশিন ব্যবহারের পরিকল্পনা রাখা হয়েছে। এ জন্য আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডিভিএম তৈরি করা, সময়সূচি ঘোষণার ৩০ দিন পূর্বে এটি ব্যবহারের উপযোগিতা সংক্রান্ত প্রচারণা চালানো, সময়সূচি ঘোষণার ১০ দিন পূর্বে মকভোটিংয়ের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে। রোডম্যাপে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি গ্রহণ করার পরিকল্পনাও রয়েছে। আগামী বছরের জানুয়ারিতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও খসড়া প্রকাশ করার কথা বলা হয়েছে।
২০১৮ সালের জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের বিভিন্ন ফরম প্যাকেট মুদ্রণের জন্য মুদ্রণ অধিদফতরের সঙ্গে সভা করবে ইসি। জুলাইয়ে মুদ্রণ শেষ করা এবং অক্টোবরের মধ্যে মনোনয়নপত্র দাখিল সংশ্লিষ্ট এবং প্রাথমিক পর্যায়ের বিভিন্ন ফরম, প্যাকেট ও অন্যান্য দ্রব্যাদি মাঠপর্যায়ে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে নির্বাচনী সামগ্রীও সংযুক্ত। এ ছাড়া ২০১৮ সালের জানুয়ারির মধ্যে পরিপত্রের মাধ্যমে ব্যালট বাক্স ক্রয় সংক্রান্ত প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করে ভোটগ্রহণের কমপক্ষে ৩০ দিন আগে সব ব্যালট বাক্স ব্যবহার উপযোগী করা হবে। ২০১৮ সালের জুন মাসের মধ্যে ভোটকেন্দ্র হিসেবে সম্ভাব্য স্থাপনা/প্রতিষ্ঠানের মেরামত ও সংস্কারের লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেয়া এবং সময়সূচি ঘোষণার ২৫ দিন আগে ভোটকেন্দ্রের গেজেট প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট সবার কাছে পাঠানো হবে।
নির্বাচনের প্রস্তুতি ও পরিচালনার জন্য সময়সূচি ঘোষণার ৩০ দিন আগে জনবলের সংখ্যা নির্ধারণ, সময়সূচি ঘোষণার ১৫ দিন পূর্বে তালিকা সংগ্রহের পরিকল্পনা, ১০ দিন আগে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার তালিকা চূড়ান্ত করে নিয়োগ শেষ করা হবে। নির্বাচনী সময়সূচি ঘোষণার ২৫ দিন পূর্বে ভোটগ্রহণের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ ও নির্বাচনের বিষয়ে সার্বিক ধারণা নেয়ার জন্য প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আবারো বৈঠক করার পরিকল্পনা রাখা হয়েছে রোডম্যাপে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।