১৭ মার্চ, ২০২৫ | ৩ চৈত্র, ১৪৩১ | ১৬ রমজান, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মিরসরাই প্রেসক্লাবের ইফতার ও সুধী সমাবেশ   ●  বন কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকির ভিডিও ভাইরাল, নিরাপত্তা চেয়ে জিডি   ●  টেকনাফে ১০০০ জেলে পরিবারকে সহায়তা করছে কোস্ট ফাউন্ডেশন   ●  আল-নুর ইন্টান্যাশনাল মাদ্রাসা’র বই বিতরনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন   ●  টেকনাফে গহীন পাহাড়ে বন্যহাতির রহস্যজনক মৃত্যু!   ●  কক্সবাজার জেলা প্রশাসনে ‘হাসিনার ভূত’ .নৈশভোটের মাস্টারমাইন্ড ইয়ামিন বহাল তবিয়তে   ●  কক্সবাজার সদর হাসপাতালে যোগদান করলেন ডা. আরিফা মেহের রুমী   ●     ●  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ওয়াসিমের কবর জিয়ারত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক দল   ●  চকরিয়ায় দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ৩ জনকে আটক

সাংসদ বদির মুক্তির দাবীতে জামায়াতের বোবা কান্না!

bodi mp ukhiya
উখিয়া টেকনাফের সাংসদ আবদুর রহমান বদিকে নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়তে শুরু করেছে আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীরা। “শ্যাম রাখি নাকি কুল রাখি” অবস্থায় পড়েছে উখিয়া-টেকনাফ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও বদির পক্ষের আওয়ামীলীগের লোকজন বিভিন্ন জনসভায় নিরব আওয়ামীলীগ নেতাদের হুমকি প্রদান করায় ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
উখিয়া-টেকনাফে সুবিধাবাদী কিছু আওয়ামীলীগ নেতা ছাড়া ত্যাগী নেতাকর্মীরা বদির মুক্তি আন্দোলনে মাঠে নেই বলেই চলে। একাধিক আওয়ামীলীগ ত্যাগী নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, সাংসদ আবদুর রহমান বদি জন্ম মুলত বিএনপি পরিবারের। তার পিতা মরহুম এজাহার মিয়া কোম্পানী বিএনপির রাজনীতির সাথে দলের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত। তিনি বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী হিসাবে একাধিকবার টেকনাফ সদর ইউপির চেয়ারম্যান ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিল। শুধু তাই নয়, জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরীকে বিএনপির প্রার্থী হিসাবে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত করার ক্ষেত্রে সব সময়ই মরহুম এজাহার মিয়া কোম্পানীর ভুমিকা ছিলো গুরুত্বপূর্ণ। মরহুম এজাহার মিয়া কোম্পানীর প্রথম পুত্র আবদুর রহমান বদি ১৯৯৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারীর সংসদ নির্বাচনে হঠাৎ করে বিএনপির মনোনয়ন লাভ করে চমক সৃষ্টি করেন। তখন বিএনপির প্রবীন নেতা সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরী নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে তদবির শুরু করে। যাতে আবদুর রহমান বদি দলীয় মনোনয়ন বাতিল করে তাকে দেওয়ার জন্য। শাহজাহান চৌধুরী উক্ত তদবিরের ফলে দলীয় হাই ফোরাম আবদুর রহমান বদিকে বাদ দিয়ে পুন:রায় শাহজাহান চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন প্রদান করেন। বিএনপির হাই ফোরাম কর্তৃক মনোনয়ন দিয়ে আবার কেড়ে নেওয়ার ক্ষোভে আবদুর রহমান বদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করে তৎকালীন ধানের শীষের প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরীর বিরুদ্ধে। উক্ত নির্বাচনে শাহজাহান চৌধুরীর কাছে পরাজিত হন বদি। উল্লেখ্য উক্ত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ গ্রহণ করেননি। পরে আবদুর রহমান বদি বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আবদুর রহমান বদি প্রথম বারে মতো আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন লাভ করেন। সেই নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিএনপির প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী পরাজিত করে প্রথম বারের মত উখিয়া-টেকনাফ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয় বদি। এরপর থেকে শুরু হয় উখিয়া টেকনাফে আবদুর রহমান বদির রাজত্ব। একের পর এক জন্ম দিতে থাকে বির্তকৃত কর্মকান্ড। যার ফলে বিভিন্ন সময়ে আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে ২২টি মামলা হয়। মামলা গুলো রাজনৈতিক মামলা হিসাবে প্রত্যহার করে নেন বর্তমান সরকার। ১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনে শাহজাহান চৌধুরীর কর্তৃক বিএনপির দল দলীয় মনোনয়ন কেড়ে নেওয়ার আবদুর রহমান বদি মনে প্রতিশোধের আগুন জ্বলতে থাকে ধাও ধাও করে। উক্ত প্রতিশোধ নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ মনে করে এরই মধ্যে সচুতর বদি বিয়ে করেন জাতীয় পাটির নেতা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও শাহজাহান চৌধূরীর পরিবারের চরম প্রতিপক্ষ নুরুল ইসলাম চৌধুরীর প্রকাশ ঠান্ডা মিয়ার চৌধুরীর মেয়েকে। উল্লেখ্য সাবেক উপজেলার চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম চৌধুরী পরিবার শাহজাহান চৌধুরী পরিবারের চির রাজনৈতিক শুত্রু ছিল। বদি এমপি থাকাকালীন সময়ে ইয়াবা পাচার, জঙ্গী গোষ্ঠিকে মদদদান,মানব পাচার, সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের মারধর,দলীয় নেতা কর্মীদের নাজেহার, বিএনপি-জামায়াত নেতাদের প্রতি নমনীয় মনোভাব ও রাজনৈতিক সুযোগ সুবিধা দেওয়া ও নারী কেলেংকারীসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু বদির ক্ষমতা ও অর্থের কারনে তার কিছুই হয়নি এতদিন। সর্বশেষ ২০১৪ সালে অনুষ্টিত সংসদ নির্বাচনে আবদুর রহমান বদি আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসাবে ২য় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয় স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহা ইয়াহিয়াকে পরাজিত করে। উক্ত নির্বাচনের পর দায়ের করা হিসাবে তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদুক কর্তৃক মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলায় গত ২ নভেম্বর আদালত সাংসদ বদিকে ৩ বছরের সাজা প্রদান ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে জেলহাজতে প্রেরন করে। সাংসদ বদিকে আদালত কতৃক জেল হাজতে পাঠানোর পর তার কাছ থেকে সুবিধা আদায়কারী কিছু আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জামায়াতের গুঠিকয়েক নেতাকর্মী বদির মুক্তির দাবীতে মিছিল মিটিং করলেও উখিয়া-টেকনাফ আওয়ামীলীগের সিংহভাগ ত্যাগী ও শীর্ষ পর্যায়ের নেতা কর্মী নিরব ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে। তাদের দাবী সাংসদ বদি নামে আওয়ামী লীগের সাংসদ,কাজে তিনি আওয়ামীলীগ বিদ্বেষী ও বির্তকিত ব্যক্তি। সাংসদ বদির পক্ষে টেকনাফে পরিবারের লোকজন ও উখিয়ায় শাশুড় পরিবারের লোকজন তার মুক্তির দাবীতে মিছিল মিটিং করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা চালাচ্ছে, দলীয় বেশীরভাগ নেতা কর্মীরা নিরব ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে। এদিকে বদির মুক্তির দাবীতে অনুষ্টিত মিছিল মিটিং অংশ না নেওয়া আওয়ামীলীগে নেতা কর্মীদের আগামীতে দেখে নেওয়ার হুমকী প্রদান করে যাচ্ছে সভার বক্তারা। অন্য দিকে মরিচ্যা বাজার ও উখিয়া স্টেশনে অনুষ্ঠিত আওয়ামীলীগের জনসভায় জামায়াত নেতাদের বক্তব্য রাখা সহ অন্যান্য বিষয়ে বিবক্ত হয়ে পড়েছে উখিয়া টেকনাফ আওয়ামীলীগ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীগণ। এসব দেখে মনে হচ্ছে বদির জন্য জামায়াতের বোবা কান্নার রহস্য কি? সাংসদ বদিকে নিয়ে উখিয়া-টেকনাফ আওয়ামীলীগের মধ্যে বিবক্তি ব্যাপক আকার ধারন করা সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনিতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের বৃহত্তর ছাত্র রাজনীতি সংগঠন ছাত্রলীগ সংগঠন জেলা কমিটি থেকে শুরু করে দু’উপজেলায় একে বারে নিরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের গুটি কয়েক নেতাকর্মী সভা সমাবেশে গেলেও অনেকেই নিরব রয়েছে বদির মুক্তির আন্দোলনে।
##

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।