শফিক আজাদ,(চীপ রিপোর্টার): তখন বিকেল সাড়ে ৩টা সাগরে প্রচন্ড ঝড়ো হাওয়া, সমুদ্র উত্তাল, ঢেউয়ের গর্জনে এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় ট্টলার থাকা রোহিঙ্গা যাত্রীদের মাঝে। নিজে বাচাঁর স্বপ্ন ফেলে দিলেও চিন্তা করছিলাম ৭মাসের শিশু সন্তান হোসাইনকে নিয়ে। এমন কল্পনা করতে না করতে হঠাৎ প্রকট শব্দ কানে আসে। ততক্ষণে দেখা যায় ট্টলারের নিচ থেকে পানি উঠতেছে। পাশাপাশি ঢেউয়ের পানি উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে মাথার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। মুহুর্তের মধ্যে ডুবে যায় ট্টলারটি। ট্টলারের মাঝি ও মাঝি অন্যান্য লোকেরা ট্টলারে থাকা পানির বোল(বয়া) হিসেবে ব্যবহার করছে দেখে আমি তাদের ধরতে চাইলে ছুড়ে যায় আমার একমাত্র শিশু সন্তান মোহাম্মদ হোসাইন। শুক্রবার সকালে উখিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই কথা গুলো বলছিলেন ট্টলার থেকে জীবিত উদ্ধার সন্তান হারা মহিলা রাশেদা বেগম (২৩)। সে আরো বলেন, আমার নিখোঁজ সন্তানের চেহারাটি এখনো দেখিনি। সে জীবিত আছে না কি মারা গেছে তাও জানিনা। তখন এ প্রতিবেদক কয়েকটি শিশুর লাশের ছবি দেখালে তৎমধ্যে সে তার মোহাম্মদ হোসেনের পরিচয় ছবি দেখতে পান। এসময় তার আহাজারী পুরো হাসপাতালে ভারী হয়ে উঠে। তার মা ফিরোজা খাতুন(৪২) বোন শাহেদা’র মৃত দেহ উদ্ধার করা হলেও আরেক বোন আয়েশা বেগম (৯) এখনো নিখোঁজ রয়েছে বলে জানান। সে বলেন, ট্টলারের মাঝি’র খামখেয়ালিপনা কারনে ট্টলার ডুবি’র ঘটনা ঘটে। রাশেদা বাকরুদ্ধ অবস্থায় আরো বলেন, আমরা শতাধিক রোহিঙ্গা বুধবার রাত ৮টার দিকে মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে বাংলাদেশের শাহপরীরদ্বীপের উদ্দেশ্যে যাত্রা দিই। কিন্তু ট্টলারের আমাদেরকে কক্সবাজারের দিকে নিয়ে আসারপথে এ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ট্টলারটি।
এদিকে সাগরে রোহিঙ্গা বোঝাই ট্টলারডুবির ঘটনায় মৃত উদ্ধার ২১জন রোহিঙ্গা নারী,পুরুষ,শিশুর নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয় উপকূলে ইনানী মাদ্রাসার মাঠে। জানাযা শেষে স্থানীয় গ্রামবাসির সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসন নিহতদের লাশ স্থানীয় কবরস্তানে দাফন সম্পন্ন করেছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।