২৪ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২১ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি   ●  মেরিন ড্রাইভে ইয়াবাসহ নারী আটক   ●  সড়ক দখল করে নৈরাজ্য সৃষ্টি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়ার অভিযোগে কক্সবাজারে আ.লীগের ৯১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

সাগরে ভাসছে কয়েক হাজার অবৈধ অভিবাসী

মালয়েশিয়া সীমান্তের থাইল্যান্ডের জঙ্গলে অবৈধ অভিবাসীদের গণকবরের সন্ধান ও জীবিত উদ্ধার খবরে বিশ্বব্যাপী টাল মাটাল অবস্থার সৃষ্টি হলেও বাংলাদেশের উপকূল নিয়ে সমূদ্র পথে অবৈধ ভাবে মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান প্রতিরোধ না থাকায় মানবপাচার থেমে নেই। নতুন ভাবে রোববার ও সোমবার সকালে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া উপকূল থেকে সাগরে ভাসমান প্রায় ২ হাজারের অধিক অভিবাসীদের উদ্ধারের ঘটনায় সর্বত্র উদ্বেগ উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। বিশ্ব গণমাধ্যমে বরাত দিয়ে জানা গেছে, ইন্দোনেশিয়া, অষ্ট্রেলিয়া উপকূল ও মালেক্কা প্রণালীতে প্রায় ৭ হাজার অবৈধ অভিবাসী ভাসমান ভাবে মানবেতর দিন যাপন করছে।
মালয়েশিয়া ও মিয়ানমার থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, থাইল্যান্ডে সংখলা প্রদেশের মালয়েশিয়া সীমান্তের কাছাকাছি জঙ্গলে বিভিন্ন স্থানে একাধিক বন্দি শিবির থেকে ইতিমধ্যে আড়াই শতাধিক অভুক্ত অভিবাসীদের জীবিত এবং একই সাথে একাধিক গনকবর থেকে ৩২টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার প্রাপ্তদের প্রায় সকলে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে নাগরিক বলে জানা গেছে। এদিকে ইন্দোনেশিয়া নিয়োজিত আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থা বা আইওএম এর ডেপুটি চীফ অব মিশন স্টিভ হ্যামিল্টন জানিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের পুনতাংয়ের উদ্দেশ্যে অবৈধ অভিবাসীদের বোঝাই ২টি ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে ৫ শতাধিক অভিবাসী যাচ্ছিল। তৎমধ্যে একটি নৌকার মধ্যে ৪৩০ জন এবং অন্যটিতে ৭০ জন অভিবাসী রয়েছে। এসব অবৈধ অভিবাসীদের প্রায় অধিকাংশ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম। আরো একটি নৌকা থেকে বাংলাদেশ, মিয়ানমার নাগরিক ছাড়াও জার্মান, চীন, রাশিয়া সহ বিভিন্ন দেশের শতাধিক নাগরিককে ইন্দোনেশিয়া পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলে সে দেশের কোষ্টগার্ড ও পুলিশ উদ্ধার ও আটক করে। উদ্ধার প্রাপ্ত অভিবাসীরা দীর্ঘদিন সাগরে অভুক্ত থাকার পর নানা অসুখে ও পুষ্টিহীনতায় ভোগছিল।
আর্ন্তজাতিক বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার বরাত দিয়ে জানা গেছে, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, অষ্ট্রেলিয়া ও ভারতের আন্দামান-নিকোবর দ্বীপ পুঞ্জের কাছাকাছি অন্তত ৭ হাজারের অধিক অভিবাসী সাগরে ভাসমান অবস্থায় চরম ঝুকিতে রয়েছে। থাইল্যান্ড সীমান্তে ব্যাপক ধরপাকড়, উদ্ধার অভিযানের প্রেক্ষিতে মানবপাচারকারী দালালরা এসব অভিবাসীদের সাগরে ভাসমান রেখে পালিয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ প্রেক্ষিতে মানবপাচারকারী চক্র অবৈধ অভিবাসীদের ইন্দোনেশিয়ার মালেক্কা প্রণালী হয়ে অষ্ট্রেলিয়ায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে সংশি¬ষ্ট সূত্রে জানা গেছে। অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের মানবপাচারকারী চক্র দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর ধরে বাংলাদেশে উপকূল ব্যবহার করে অন্তত ৩ লক্ষাধিক বাংলাদেশী ও মিয়ানমান নাগরিককে পাচার করেছে। সম্প্রতি জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন বা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে গত বছরের তুলানায় চলতি বছরের প্রথম ৩ মাসে সমূদ্র পথে মানবপাচার আশংকা জনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
জানুয়ারী থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ উপকূল থেকে ২৫ হাজারের মত অভিবাসী পাচার হয়ে গেছে। তৎমধ্যে অন্তত ৩ শতাধিক অভিবাসীর সাগরে সলিল সমাধি ঘটেছে বলে সূত্র জানিয়েছে। এদিকে উখিয়া ও টেকনাফে অবস্থিত ২টি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে শরণার্থী ও অবৈধ অভিবাসীদের বিভিন্ন খাতে সাহায্য সহযোগিতার জন্য আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থা বা আইওএম গত ডিসেম্বর থেকে দায়িত্ব নিয়েছে। স্থানীয় লোকজনদের অভিযোগ উখিয়ার কুতুপালং ও টেকনাফের নয়াপাড়া শরণার্থী শিবির ও সংলগ্ন অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের স্বাস্থ্য, সেনিটেশন, পানীয় জল, পুষ্টি সহ বিভিন্ন মানবিক সহায়তার নামে আইওএম কাজ করার সুবাধে এ সময়ের মধ্যে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে মিয়ানমার থেকে অন্তত অর্ধলক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে অবস্থানরত বৈধ-অবৈধ শরণার্থীদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির খবরে এবং আইওএম এর এক শ্রেণীর স্বার্থন্বেষী মহলের ইন্দনে ও উস্কানিতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ৪ মাসে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকালে দায়িত্বশীল বিজিবি সদস্যরা ২২ শ’এর মত অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাকে আটক পূর্বক মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছে বলে বিজিবি সূত্রে জানিয়েছে। মূলত মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশকারী সিংহ ভাগ রোহিঙ্গা দালালদের মাধ্যমে সমুদ্র পথে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এধরণের অসংখ্য মানুষ উলে¬খিত সমূদ্র উপকূল এলাকায় জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে ঝুকি নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। এসব ব্যাপারে আইওএম এর কক্সবাজার অফিসের একাধিক ফোন নাম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।