ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হচ্ছে মানুষের রুচির। মানুষ সব কিছুর ক্ষেত্রে অনলাইনমুখী হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের ক্ষেত্রেও অনলাইন সংবাদপত্রের চাহিদা বেড়েছে। সামনের দিনগুলোতে অনলাইন সংবাদমাধ্যমও আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। তবে অনলাইনের দায়িত্বশীল হওয়ার সময় এসেছে। যারা সেই ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারবে না তারা টিকে থাকার লড়াইয়ে পরাজিত হবে। বাংলা ট্রিবিউনের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘অনলাইন সাংবাদিকতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
আজ ১৩ মে প্রতিষ্ঠানটির নিজ কার্যালেয়ে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।আলোচনায় বিষয়ের ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন বাংলা ট্রিবিউনের প্রধান প্রতিবেদক উদিসা ইসলাম।সঞ্চালনায় ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির হেড অব নিউজ হারুন উর রশীদ। সেমিনারে উদিসা ইসলাম তার ধারণাপত্র পাঠ করেন। এরপর বক্তারা আলোচনায় অংশ নেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শফিউল আলম ভূঁইয়া বলেন, সাংবাদিকতা আর্দশ সব জায়গায়, শুধু প্লাটফর্ম ভিন্ন। কিন্তু প্রতিযোগিতার কারণে অনেক ভুল তথ্য প্রকাশ হয়। কোনও তথ্য পেলেই প্রকাশ করার আগে যাচাই করা জরুরি।নানাবিধ কারণে নীতিমালা থাকা জরুরি।
দৈনিক প্রথম আলোর বিদেশ সংস্করণের সম্পাদক সেলিম খান বলেন,সাংবাদিকতার মৌলিক তত্ত্ব সব জায়গায় এক, তবে মাধ্যমের ভিন্ন। উপস্থাপনাগত পার্থক্য থাকলেও মৌলিক জায়গায় এক। মানবজাতির সামনে নতুন নতুন সৃষ্টি আসছে, বিষয় হচ্ছে আমরা কিভাবে কাজে লাগাব। সংবাদমাধ্যম হতে গেলে কিছু বৈশিষ্ট্য লাগে, অন্যতম হচ্ছে বিশ্বাসযোগ্যতা।
ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট আরিফ জেবতিক বলেন, অনলাইন একটি বিশাল পরিসর। এখানে তিন ধরনের দায়বদ্ধতা আমি দেখি, প্রতিষ্ঠানের দায়বদ্ধতা, রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা, কমিউনিটির দায়বদ্ধতা। তিনি অনলাইনের নীতিমালা ও সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ এবং সংবাদমাধ্যমের লাইসেন্স থাকা উচিত বলে দাবি করেন।
বাংলানিউজ২৪.কমের হেড অব নিউজ মাহমুদ মেনন খান বলেন, সাংবাদিকদের কোয়ালিটি নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। বাংলাদেশের মানুষ এখনও অনলাইন মিডিয়ার ধারণা বিষয়ে এখনও পরিস্কার হয়নি। ফলে মূল ধারার সঙ্গে একটি নাম স্বর্বস্ব অনলাইনের মিলিয়ে ফেলেন।
গোলাম মোর্তজা বলেন, এখন প্রচুর অনলাইন রয়েছে। প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়েও আমি অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক পেয়েছি। এগুলো ভাবনার বিষয়।
বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোরের হেড অব নিউজ নাসিরুদ্দিন খোকন বলেন, অনলাইন সাংবাদিকতাটা এখনও নতুন। আর নতুন যে কোনও কিছুতেই ভুল ত্রুটি থাকে। ট্রায়াল অ্যান্ড এররের মতো। এটি নিয়ে এত দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কিছুই নেই। আস্তে আস্তে সময়ের সঙ্গে নির্দিষ্ট গতির সঙ্গে পাঠক নিজেরাই সঠিকটা খুঁজে নেবে। আমরা নিজেরাই বিশ্বাসযোগ্যতার ওপর জোর দেই। পাঠকরাও আমাদের সেভাবে গ্রহণ করে নেবে। যেহেতু এটি একটি পেশা, তাই এখানে দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।
নাট্য ব্যক্তিত্ব ও বাংলা ট্রিবিউনের হেড অব মার্কেটিং বন্যা মির্জা দায়বদ্ধতার পাশাপাশি গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি সাংবাদিকতার বাইরের মানুষ হওয়া সত্ত্বেও সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত। এখানে এসেই আমার চোখে গ্রহণযোগ্যতা ও সংবাদের গুরুত্ব চোখে পড়েছে। আর একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, বিনোদনের চেয়েও মূল ধারার সংবাদই অধিক গুরুত্ব পেয়ে এসেছে বরাবর।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।