কক্সবজারের অজপাড়া গ্রাম পেকুয়ায় জন্ম নেয়া বি.এন.পির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমদ দীর্ঘ ২০ দিন ধরে নিখোঁজ থাকায় তার নির্বাচনী এলাকার একটি পৌরসভা, দুউপজেলার ২৫ ইউনিয়নের পাড়া মহল্লায় চলছে খতমে কোরান, তাহলিল, রোজা পালন, ছদকা দান খয়রাত আর মিসকিন খাওয়ানো সহ নানা ভাবে প্রার্থনা। আশা তাদের প্রিয় সন্তানটি আবার তাদের মাঝে ফিরে আসবে। বি.এন.পির এ কেন্দ্রীয় নেতা চলমান রাজনৈতিক সংকটে ২০দলের মুখপত্র হিসেবে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় রাজধানী ঢাকার উত্তরার একটি ফ্ল্যাট থেকে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়েগেছে বলে বি.এন.পি ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবী করা হলেও সরকারের পক্ষ থেকে বার বার বলে দেয়া হচ্ছে বি.এন.পি নেতা সালাহউদ্দিনকে সরকারের কোন বাহিনী আটক করেনি এবং তিনি কোথায় আছেন এখনও তারা তা জানেননা। সালাহউদ্দিন আহমদ নিখোজ হওয়ার পর চকরিয়া পেকুয়ায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ র্যাব বিজিবি মোতায়েন ও গণগ্রেফতারে বি.এন.পি-জামায়াতের নেতাকর্মী এলাকাছাড়া হয়ে যায়। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে সালাহউদ্দিনের কোন প্রকার সন্ধান না পাওয়ায় তার নির্বাচনী এলাকা চকরিয়া-পেকুয়া তথা পুরো কক্সবাজারের বি.এন.পি পরিবারের পাশাপাশি সাধারণ লোকজনের মাঝে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বেড়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক বোদ্ধামহলের ধারণা সালাহউদ্দিনের অবর্তমানে কক্সবাজারের উন্নয়ন ও বিএন.পির রাজনীতি থমকে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ মসজিদ সহ ধর্মীয় ্উপাসনালয়ে সালাহউদ্দিনের জন্যে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করে যাচ্ছে। এক সময়ের আওয়ামীলীগ অধ্যূষিত ও উন্নয়ন বঞ্চিত এলাকা চকরিয়া পেকুয়া সংসদীয় আসন থেকে ১৯৯৬ সালে এম.পি নির্বাচিত হয়ে সাবেক এ আমলা উন্নয়ন যাত্রা শুরু করেন। এর পুর্বে তিনি ১৯৯১ সালে তৎকালীন প্রধান মন্ত্রী বেগম জিয়ার এপিএস নিযুক্ত হয়েই মূলত চকরিয়া পেকুয়া তথা কক্সবাজারের উন্নয়নের জন্যে ্একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করে এগুতে থাকেন। সর্বশেষ কক্সবাজারের ৫৬বছরের ইতিহাসে প্রথম মন্ত্রী পরিষদের সদস্য হিসেবে ২০০১সালে যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীর শপথ নিয়ে কক্সবাজারের রাজনৈতিক ইতিহাসকে যেমনি সমৃদ্ধ করেন তেমনি উন্নয়নের মাষ্টারপ্ল্যান তৈরী করে অবকাঠামো ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের রোড়ম্যাপ সমাপ্ত করে কক্সবাজারকে আধুনিক ও বিশ্বমানের পর্যটন নগরীর দ্বারপ্রান্তে উপনিত করেন। মহেশখালীর সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্র বন্দরের গোড়াপত্তন,আনোয়ারা বাঁশখালী পেকুয়া চকরিয়া হয়ে বাঁকখালী টু কক্সবাজা সংযোগ আঞ্চলিক মহাসড়ক(সমুদ্র বন্দর কানেকটিং সড়ক) নির্মাণ অসংখ্য ব্রীজ কালভার্ট নির্মাণ, ২০০২ সালের ২৭এপ্রিল পেকুয়া উপজেলা প্রতিষ্ঠা, পেকুয়া থানা, হাসপাতাল, চকরিয়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠা সহ চকরিয়া পেকুয়ার অলিগলিগুলোকে পাকা রাস্তায় রুপান্তিত করে অজপাড়া গ্রামকে নগর জীবনের মান দিয়ে বি.এন.পির জন্যে অতীব সাংগঠনিক দূর্বল এ অঞ্চলকে বি.এন.পির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত করেন। প্রধান মন্ত্রীর এপিএস থাকাকালীন পেকুয়ায় দুটি কলেজ ও একটি বালিকা বিদ্যালয় ও সরকারী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে অবহেলিত পেকুয়ার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করেন। এভাবে তার হাত দিয়ে মাতামুহুরী নদীতে রাবারড্যাম স্থাপন করে কৃষি নির্ভর এসমাজে নিরবি”্ছন্নি চাষাবাদের ব্যবস্থা সহ অসংখ্য জনকল্যানমুলক কাজ করে এতদাঞ্চলের মানুষের জীবন যাত্রার মান বৃদ্ধিতে তিনি কাজ করায় তার জনপ্রিয়তা ছিল আকাশ চুম্বী। সরকারী পরিসংখ্যান মতে ২০০১ সালের বি.এনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে পুরো কক্সবাজারে প্রায় ১হাজার ৬শ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। তার পরিকল্পনার গভীর সমুদ্র বন্দর বিদ্যূত উৎপাদন কেন্দ্র, সাগর অববাহিকতায় শিল্পজোন, লবণ ও মৎসকে আধুনিক শিল্পেরূপদান, আনোয়ার থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সাগর বাধকে মেরিন ড্রাইভ সড়কের আওয়াতায় রূপায়নের পাশাপাশি পুরো উপক’লকে পর্যটনায়ন, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, বিমান বন্দর, অনেক প্রকল্প পরিকল্পনা তার অবর্তমানে থমকে যাওয়ার আশংকা করছে সাগর তীরবর্তী মানুষ। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে চকরিয়া-পেকুয়ার মসজিদে মসজিদে সালাহউদ্দিনের জন্যে প্রার্থনা চলছে। তার পরিবারের মতোই এঅঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষ তার জন্যে উদ্বেগ প্রকাশ করে তার ফিরে আসার প্রহর গুণছে। এদিকে দীর্ঘদিন পর্যন্ত সালাহউদ্দিন আহমদের কোন সন্ধান না পাওয়ায় তার একমাত্র ভাই নাছির উদ্দিন আহমদ অনেকটা বাকরুদ্ধ। তিনি সরকারের কাছে আকুল মিনতি জানিয়েছেন তার ভাই বি.এন.পির রাজনীতি করলেও এলাকায় সার্বজনীন উন্নয়ন করেছেন, বিরোধী রাজনীতির সূত্রে তার ভাইকে বিবেচনা না করে মানবিক কারণে যেন সরকার তার ভাইকে অনুসন্ধান করে তাদের মাঝে ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেন। প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা পেকুয়া সদর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান এডভোকেট কামাল হোছেন বলেন, সালাহউদ্দিন আহমদ রাজনীতি ও উন্নয়ন প্রতিভার মডেল, তাকে সমুদয় রাজনীতির উর্ধ্বে বিবেচনা করে আন্তরিক অনুসন্ধানে কক্সবাজারবাসীকে ফিরিয়েদিন। পেকুয়া উপজেলা পরিষদের দুবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু বলেন, উন্নয়ন উৎপাদনের ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতির উদ্বীপ্ত স্বাক্ষর বি.এন.পির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমদ, তাকে অক্ষত অবস্থায় আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হবে। চকরিয়া পৌরসভার মেয়র বি.এন.পি নেতা নুরুল ইসলাম হায়দার বলেন, সালাহউদ্দিন ভাইয়ে অবর্তমানে কক্সবাজার জেলাবাসী অভিভাবকহীন হয়েগেছে। ক্ষমতাসীন সরকারের মদদে হোক, আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা বা অন্য যে কোন ভাবে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর এখনো সন্ধানহীন সহ্যের নয়, দয়া করে সরকারকে সালাহউদ্দিন আহমদের অবস্থান নিশ্চিত করার দাবী করেন। পেকুয়া উপজেলা জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ আবদুল কায়ুম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী নিখোঁজ থাকায় সাধারণ মানুষের মতো তারও আশংকা হচ্ছে তিনি কি অবস্থায় আছেন। তার সুস্থ ফিরে আসার প্রতীক্ষায় আল্লাহর কাছে দোয়া করছি। লবণচাষী গোলাম মোস্তফা বলেন, আমরা রাজনীতি বুঝিনা এঅঞ্চলে সালাহউদ্দিন অকল্পনীয় উন্নয়ন করেছেন তাকে যেন সরকার আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা নেয় সে আহবান করছি। কলেজ ছাত্রী চৌচানের আকুতি সালাহউদ্দিনের মতো একজন নেতার কারণে এঅঞ্চলে কলেজ হয়েছে বলে বাবা মায়ের সাথে থেকে উচ্চশিক্ষা নিতে পারছি সে নেতার কি বিপদ আজ অনেকদিন ধরে নিখোজ আল্লাহ যেন তাকে অক্ষত অবস্থায় আমাদের মাঝে ফিরে দেন। রিক্সা চালক নেজামউদ্দিনের বিশ্বাস যিনি এত উন্নয়ন করেছেন কেউ তার ক্ষতি করতে পারেনা তিনি অবশ্যই সুস্থ অবস্থায় ফিরে আসবেন। স্থানীয় সাংবাদিক সুজন বলেন, সালাহউদ্দিন আহমদ অবহেলিত এলাকায় অকল্পনীয় উন্নয়ন করে নাগরিক সেবা প্রতিষ্ঠা করেছেন, পরিকলিপত উন্নয়নের সমাপ্তির জন্যে তাকে দলমতের উর্ধ্বে ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে সন্ধান করা প্রয়োজন। এভাবে চকরিয়া পেকুয়া সহ কক্সবাজারের লাখো নারী পুরুষের আকুতি সরকার যেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে জন সম্মুখে উপস্থাপন করে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।