২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

সিসি ক্যামেরার আওতার বাইরে জেলা প্রশাসন ও আদালতের বেশির ভাগ এলাকা

ccc
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কার্যালয় এবং আদালত প্রাঙ্গনের বেশির ভাগ এলাকা এখনো সিসি ক্যামেরার আওতার বাইরে রয়ে গেছে। এতে নিরাপত্তা ঝুকি রয়ে গেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে প্রথমত নিরাপত্তা পরে অনিয়ম দুর্নীতি রোধ, কাজে গতি আনা সহ বেশ কয়েক টি উদ্যোগের কথা বিবেচনায় নিলেও সে বিষয়ে সফলতা নিয়ে জনমনে যথেস্ট সন্দেহ রয়েছে। এছাড়া এ সব লাগানো সিসি ক্যামেরার সক্ষমতা নিয়ে ও প্রশ্ন আছে সচেতন মহলের মাঝে। আইনজীবি ভবন এখনো সিসি ক্যামেরার আওতায় না আসাকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন অনেক আইনজীবি। তবে সিসি ক্যামেরা লাগানোর পরিধি আরো বাড়িয়ে ভবিষ্যতে পুরু এলাকা সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তর এবং বিশেষ করে বীচ এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার পরিকল্পনার কথা জানালেন জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের আইসিটি বিভাগের সহকারী প্রোগ্রামার ছুরুত আলম আকাশ জানান কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে ৪ টি সিসি ক্যামরা লাগানো আছে এর মধ্যে একটি জেলা প্রশাসক চেম্বারের সামনে আরেক টি ৩ তলায় রাজস্ব শাখায়, অন্যটি ফ্রন্ট ডেক্স এর সামনে আরেক টি জেলা রেকর্ড রুমে। ২০১৪ সালের প্রথম দিকে এ সব ক্যামেরা লাগানো হয়। বর্তমানে ৪ টি সিসি ক্যামরাই সচল আছে। আমরা জেলা আইসিটি রুমে থেকে এগুলো পর্যবেক্ষন করি। এছাড়া প্রতিটি সিসি ক্যামেরা জেলা প্রশাসক মহোদয় সরাসরি তত্তাবধান করেন। এসময় জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘুরে দেখা যায় ৪ টি স্থানে সিসি ক্যামেরা লাগানো থাকলেও আরো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ন স্থান সিসি ক্যামেরার আওতার বাইরে রয়ে গেছে বিশেষ করে রাজস্ব শাখার বিপরীত দিকের গলি, দুতলায় বেশির ভাগ স্থান। এছাড়া কার্যালয়ের বাইরে একটি বড় স্থানতো আছেই।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাধারন শাখার এক কর্মচারী বলেন প্রতিটি দপ্তরের সিসি ক্যামরা বাধ্যতা মূলক। আমাদের অফিসে সিসি ক্যামরা থাকলেও সেটা তুলনামূলক কম বলে আমাদের ধারনা সেটা আরো বাড়ানো দরকার। তাছাড়া সিসি ক্যামরার প্রয়োজনিয়তা বেশি ছিল জেলা প্রশাসক মহোদয়ের গাড়ী পার্ক করার স্থানে আর সামনের রাস্তাতে সেখানে দু পাশে অবৈধ দোকানদার গুলোর কারনে সত্যি অফিস নিরাপত্তা ঝুকিতে থাকে। এছাড়া আমরা দেখি প্রতিদিন সেখানে চোর, ছিনতাইকারী, পকেটমার সহ অনেক উশৃংখল লোকজনের আনাগোনা থাকে। সেখানেই সিসি ক্যামরার বেশি দরকার ছিল।
এদিকে কোর্ট পুলিশের ও আছে একটি সিসি ক্যামরা। কয়েদি আনা নেওয়ার স্থানে বসানো হয়েছে এটি। তবে সেটা মনিটরিং করা নিয়ে সবার মাঝে সন্দেহ আছে। এদিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতেও নতুন ভাবে বসানো হয়েছে ৬ টি সিসি ক্যামরা। মাত্র মাসখানেক আগে বসানো এ সব ক্যামরা বসানো হয়েছে জেলা ও দায়রা জজ এজলাসে ঢুকার সামনে। বাকী গুলো নীচ তলা দু তলার আসা যাওয়ার রাস্তায়। এতে করে পুরো আদালত প্রাঙ্গনের ভেতরে নিরাপত্তা অনেকটা নিশ্চিত করা গেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এ ব্যাপারে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস এম আব্বাস উদ্দিন বলেন সিসি ক্যামরার আওতায় আনার মধ্য দিয়ে শুধু যে নিরাপত্তার বিষয় তা নয় আরো নানান ধরনের বিষয়ও আমরা নিশ্চিত করতে পারবো। এখানে কেউ সন্দেহ জনক ভাবে ঘুরা ঘুরি করলেও তাকে আমরা সনাক্ত করতে পারবো। এছাড়া সাধারন মানুষ যাতে কোন ভাবে প্রতারনা বা হয়রানীর শিকার না হয় সেদিকেও আমরা নজর রাখতে পারবো। আমি আশা করি এখন ভেতরে হলেও পর্যায়ক্রমে বাইরেও সিসি ক্যামরা দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
এ সময় মামলা সংক্রান্ত কাজে আসা রামু আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন সিসি ক্যামরা লাগিয়েছে সেটা খুবই ভাল কথা তবে এখানে নজরদারীটা হচ্ছে আসল, শুধু নিরাপত্তা নয় সাধারন মানুষের যাতে ভেতরে বাইরে হয়রানী বন্ধ হয় সে বিষয়ে খেলায় রাখা উচিত। এদিকে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের খাস কামরার সামনেও একটি সিসি ক্যামেরা দেখা গেছে। তবে সদর কোর্টের সামনে সিসি ক্যামরা বেশি দরকারী বলে মনে করেন অনেকে। এ ব্যাপারে জেলা আইনজীবি সহকারী সমিতির সাবেক সভাপতি মনিরুল আলম বলেন অনেক সময় আমরা দেখি কোর্ট প্রাঙ্গনের বাইরে আসামী বা বাদী হামলা এবং অপহরনের শিকার হয়। তাই বাইরে যদি সিসি ক্যামরা থাকতো তাহলে আদালত এ সব বিষয়ে নজরে আনতে পারতো। এ ব্যাপারে এপিপি এড. তাপস রক্ষিত বলেন অন্যের কথা নয় আগে নিজের কথা বলি জেলা আইনজীবি সমিতি অফিস হিসাবে এখানে বহু আগে সিসি ক্যামরা থাকা দরকার ছিল। আর এ সব সিসি ক্যামরার সক্ষমতা নিয়ে ও অনেকের মাঝে সন্দেহ আছে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা আইনজীবি সমিতির সাধারন সম্পাদক আ.জ.ম মঈন উদ্দিন বলেন সিসি ক্যামরা এখন প্রয়োজনীতা নয় জরুরী চাহিদা। বিশেষ করে আদালত প্রাঙ্গনের বাইরে এটা আরো বেশি দরকার। সম্প্রতি আমরা দেখছি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এজলাসে উঠার মাত্র ২০ গজের মধ্যে দু পাশে ঝুপড়ি দোকান এটা কোন ভাবেই কাম্য নয়। কারন এ রাস্তা দিয়ে দৈনিক হত্যা মামলার আসামি সহ জঙ্গি, এমনকি দূর্ধর্ষ সন্ত্রাসীদের আনা নেওয়া করা হয়। এতে নিরাপত্তা ঝুকি বেশি থাকে। আর সেখানে ২ জন মহিলা পুলিশ সদস্য বসিয়ে রাখা হয় তাদের দায়িত্ব পালন নিয়েও অনেক প্রশ্ন রয়েছে। সুতরাং সিসি ক্যামরা খুবই জরুরী। আর আমাদের আইনজীবি সমিতি ভবনে খুব শীঘ্রই সিসি ক্যামরার আওতায় আনা হবে।
এদিকে ভবিষ্যতে সিসি ক্যামরার পরিধি আরো বাড়িয়ে এক পর্যায়ে সব সরকারি দপ্তরে এবং বীচ এলাকায় সিসি ক্যামরার আওতায় আনার পরিকল্পনার কথা জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইটিসি সাইফুল ইসলাম মজুমদার। এক প্রশ্নের জবারে তিনি দৈনিক কক্সবাজারকে বলেন খুব শীঘ্রই আমরা একটি চিঠি দিয়ে দেব যাবে সব সরকারি গুরুত্বপূর্ন দপ্তরে সিসি ক্যামরা বসানো হয়। একই সাথে বেশির ভাগ জনবহুল এলাকা গুলোতেই সিসি ক্যামরা স্থাপনা করা হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক কাজী আবদুর রহমান বলেন, সময় এখন প্রযুক্তির তাই কোন ক্রমেই প্রযুক্তির বাইরে থাকা যাবে না। আমাদের আলাদা এ বিষয়ে মনিটরিং সেল আছে এবং খুব দ্রুত এ বিষয়ে আরো ভাল কিছু দেখা যাবে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।