টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে সুমী আক্তার (১৫) নামে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে স্থানীয় সন্ত্রাসী রণি মিয়া ধর্ষণের পর হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার মহেলা রাবেয়া সিরাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্জন কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সুমী আক্তার মহেলা গ্রামের মো. রফিক মিয়ার মেয়ে।
স্কুলের প্রতিবেশী ও কয়েকজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করে জানায়, বৃহস্পতিবার মহেলা রাবেয়া সিরাজ উচ্চ বিদ্যালয়ে স্কুল কেবিনেট কাউন্সিল নির্বাচন চলছিল। ভোটের কারণে স্কুলের অধিকাংশ কক্ষ খালি ছিল। সুমী স্কুলে গিয়ে ওই নির্বাচনে ভোট দিয়ে ফেরার সময় স্থানীয় বখাটে রণি মিয়া (২৬) তাকে ডেকে নিয়ে মুখ বেঁধে বেদম মারপিট ও ধর্ষণ করে।
মুমূর্ষু অবস্থায় স্থানীয়রা সুমীকে ভ্যানে উঠিয়ে হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে সুমী মারা যায়। পরে তাকে বাড়িতে এনে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার চালানো হয়।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি সন্ত্রাসী রণির ভয়ে নাম প্রকাশ না করে জানায়, সুমীকে ছাড়াও স্থানীয় কয়েকটি মেয়েকে রণি ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে এলাকায় একাধিকবার গ্রাম্য সালিশও হয়েছে।
নিহত সুমীর বাবা মো. রফিক মিয়া জানান, সুমী সকালে ভোট দিতে স্কুলে যায়। পরে ভ্যানচালক সুমীর মরদেহ বাড়িতে রেখে চলে যায়। পরে জানতে পারেন তার মেয়ে গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিল।
তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, প্রতিবেশী প্রভাবশালী আ. সামাদ মিয়ার বখাটে ছেলে সন্ত্রাসী রণি মিয়া তাদেরকে জিম্মি করে রেখেছিল। সুমীকে জিম্মি করে ইতোপূর্বে কয়েকবার ধর্ষণ করে এবং সে দৃশ্য ভিডিও করে রাখে। ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে বারবার ধর্ষণ করেছে। রণির ডাকে না যাওয়ায় একাধিকবার সুমীকে মারধর করেছে।
মহেলা রাবেয়া সিরাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার সারাদিন স্টুডেন্ট কাউন্সিল নির্বাচন চলেছে। ওই নির্বাচনে ব্যস্ত থাকায় অন্য কোনো বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তবে রণির অপকর্ম নিয়ে ইতোপূর্বে সালিশ হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মো. আখেরুজ্জামান জানান, ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রণি মিয়া পলাতক রয়েছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।