কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির সংলগ্ন মধুরছড়া ও মাছকারিয়ার দূর্গম পাহাড়ে অবৈধভাবে অর্ধশতাধিক স্থাপনা নির্মাণের জায়গাটি উপজেলা প্রশাসন গতকাল সোমবার সকাল ১১ টার দিকে পরিদর্শন করেছেন। এসময় উখিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হিল্লে¬াল বিশ্বাস, উখিয়া থানার সহকারী পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন মজুমদার, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি, থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খান সহ বিভিন্নস্তরের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
অবৈধভাবে ঘর নির্মাণের তদন্তে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা মাঠে নেমেছেন বলে সংশি¬ষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনা নিয়ে উখিয়া বনরেঞ্জের বিট কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন সরকার বাদী হয়ে ১০ এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাত ৫০/৬০ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়া একই ঘটনায় আরো ৪টি বন আইনে মামলা রুজু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, অনেকেরই সন্দেহ, বিদেশী অর্থায়নে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ প্রসারের লক্ষ্যেই সরকারী বন ভূমি দখল করে স্বশস্ত্র পাহারায় রোহিঙ্গা শিবিরের পাশেই এ অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হতে পারে।
বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ মার্চ সকাল ১১টার দিকে ১০০/১৫০ জন গ্রামবাসী উয়ালা মৌজার ১০নাম্বার সিটের ৮৯০১ দাগাদির আন্দরে প্রায় ১০ একর বনভূমি দখল করে হাসপাতাল, পাকা মসজিদ ও এতিমখানাসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে। ইতোপূর্বে বনবিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারী ও আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে গেলে স্বশস্ত্র শতাধিক সন্ত্রাসীদের বাঁধার মূখে কয়েকবার ফিরে আসতে বাধ্য হয় বলে পুলিশের বিশ্বস্থ একটি সূত্র জানিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সংশ্লি¬ষ্ট আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা অবৈধ তড়িঘড়ি করে স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরকে অবহিত করেছেন বলে প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার স্বর্তে জানান।
সূত্রটি জানায়, উখিয়া বিএনপির স্থানীয় কর্মী ও আনসার সদস্য আবুল কাশেম, নির্মাণ শ্রমিক নেতা ও তার ভাই মফিজ উদ্দিন বিদেশী একটি অর্থ যোগানদাতা সংস্থা থেকে কোটি কোটি টাকা এনে এসব স্থাপনা নির্মিত হচ্ছে বলে মধুর ছড়া এলাকার লোকজনের অভিযোগ।
উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, আমি অসুস্থ থাকায় ঘটনাটি আমার উর্ধ্বতনদের জানিয়েছি। রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী অবৈধ স্থাপনা গুলো ভূমিহীনদের জন্য নির্মিত হয়েছে বলে দাবী করেন এবং এ গুলো নিয়ে উল্টো রাজনৈতিক ভাবে আমার সুনাম ক্ষুন্নের অপচেষ্টায় নেমেছে প্রতিপক্ষ।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বন সংরক্ষক আব্দুল আউয়াল সরকার বলেন, ঘটনায় এ পর্যন্ত বনবিভাগ ৪টি মামলা রুজু করেছে। অপর মামলাটি বিট কর্মকর্তা বাদী হয়ে উখিয়া থানায় দায়ের করেন। যার নং-১২, তাং-০৫/০৪/২০১৫ইং।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিল্লে¬াল বিশ্বাস বলেন, ঘটনাস্থল পর্যাবেক্ষণ করে তা দ্রুত উচ্ছেদ করতে জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়েছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।