২০ এপ্রিল, ২০২৫ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩২ | ২১ শাওয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার   ●  পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি’১৮ ব্যাচের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন   ●  উখিয়া সমাজসেবা কর্মচারীর নামে বিধবা ভাতা’র টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ   ●  ‘পটভূমি পরিবর্তনের জন্য সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য’ – সরওয়ার জাহান চৌধুরী

হারিছ চৌধুরী কোথায়

চারদলীয় জোট সরকারের আমলে আলোচিত-সমালোচিত ব্যক্তি ছিলেন আবুল হারিছ চৌধুরী। দোর্দণ্ড প্রতাপশালী এই রাজনীতিবিদ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব এবং আলোচিত হাওয়া ভবনের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে অসীম ক্ষমতাধর এক নেতায় পরিণত হয়েছিলেন। কিন্তু চারদলীয় জোট সরকারের পতনঘণ্টা বাজার পর উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সেনা সমর্থিত সরকার ক্ষমতায় আসায় পতিত হাওয়া ভবন ছেড়ে নিজেই হাওয়া হয়ে যান হারিছ চৌধুরী। ২০০৭ সালের ২৯ জানুয়ারি সিলেট বিএনপির অন্যতম প্রভাবশালী এই নেতা সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে তার মামাবাড়ি করিমগঞ্জে পাড়ি জমান। এরপর ভারত থেকে যুক্তরাজ্য ও ইরানে কিছু দিন অবস্থান করার পর মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র হয়ে ফের যুক্তরাজ্যে ফিরে যান। এরকম তথ্যই পাওয়া গিয়েছিল তার স্বজনদের কাছ থেকে। কিন্তু বর্তমানে তিনি কোথায় আছেন সে খবর জানে না কেউই। এমনকি সিলেটে থাকা তার স্বজনরাও বলতে পারছেন না হারিছ চৌধুরী কোথায় আছেন। গত ১০ মার্চ বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহউদ্দিন ‘নিখোঁজ’ হওয়ার পর গত মঙ্গলবার ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে তার খোঁজ মিলেছে। এরপর থেকে হারিছ চৌধুরীর উধাও রহস্য ফের আলোচনায় এসেছে। সূত্র জানায়, ভারত থেকে যুক্তরাজ্য, পরবর্তীতে ইরান থেকে মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র হয়ে সর্বশেষ যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর হারিছ চৌধুরী ভারত ছাড়া অন্য কোথাও গমন করেননি। ভারতের করিমগঞ্জে হারিছ চৌধুরীর মামাবাড়ি হওয়ায় এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশিদের আনাগোনা বেশি থাকায় তিনি করিমগঞ্জেই বেশি সময় অবস্থান করেন। যুক্তরাজ্য থেকে করিমগঞ্জ এবং করিমগঞ্জ থেকে যুক্তরাজ্যে আসা-যাওয়া করেই এখন দিন কাটছে তার। তার মামাবাড়ির লোকজন করিমগঞ্জের প্রভাবশালী মুসলিম পরিবার হওয়ায় সেখানে গা-ঢাকা দিয়ে থাকাটা হারিছ চৌধুরীর জন্য অনেকটাই সহজ। ভারতের করিমগঞ্জে অবস্থানকালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এবং নিজের আত্মীয়স্বজন ও শুভাকাক্সক্ষীদের সঙ্গে হারিছ চৌধুরী যোগাযোগ রাখেন বলেও জানায় সূত্রটি। দেশজুড়ে জোর গুঞ্জন রয়েছে, সালাহউদ্দিন সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাড়ি জমিয়েছেন। আর জকিগঞ্জ সীমান্তের ওপারেই ভারতের করিমগঞ্জের অবস্থান। যে কারণে হারিছ চৌধুরী এবং সালাহউদ্দিনের মধ্যে কোনো যোগসূত্র রয়েছে কিনা, এ বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে। সালাহউদ্দিন করিমগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতে গিয়ে থাকলে করিমগঞ্জে হারিছ চৌধুরীর সঙ্গে তার দেখা হয়েছে কিনা এ বিষয়টি নিয়েও রয়েছে জোর গুঞ্জন। তবে সালাহউদ্দিনকে যেখানে পাওয়া গেছে, জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে করিমগঞ্জ হয়ে সেই শিলং প্রায় ২৩০ কিলোমিটার দূরে। অন্যদিকে সিলেটের তামাবিল সীমান্ত থেকে শিলংয়ের দূরত্ব মাত্র ৬৫ কিলোমিটার।

কোথায় আছেন হারিছ চৌধুরী : ভারতের করিমগঞ্জ হয়ে যুক্তরাজ্য, সেখান থেকে ইরান ঘুরে মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র হয়ে ফের যুক্তরাজ্য যান হারিছ চৌধুরী। কিন্তু বর্তমানে কোথায় আছেন তিনি? এ বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কেউ কিছু না বললেও তিনি তার নানাবাড়ি করিমগঞ্জেই অবস্থান করছেন বলে জানায় একটি সূত্র। বর্তমানে হারিছ চৌধুরী দাড়ি রেখেছেন এবং তার শারীরিক গঠন অনেকটাই বদলে যাওয়ায় তিনি নির্বিঘ্নে সেখানে অবস্থান করছেন বলে জানায় সূত্রটি। তবে দেশে থাকা আত্মীয়স্বজনকে নিজের অবস্থান সম্পর্কে কিছুই জানান না হারিছ চৌধুরী।পালিয়ে যান যেভাবে : চারদলীয় জোট সরকারের মেয়াদ শেষে পতন ঘটে হাওয়া ভবনের। রাজনীতিও হয়ে পড়ে ঘোলাটে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতাসীন হয়ে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে শুরু করে অ্যাকশন। দুদকের শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের তালিকায় নাম ওঠে হারিছ চৌধুরীর। বাধ্য হয়ে আত্মগোপনে চলে যান তিনি। কিছু দিন হবিগঞ্জে আত্মগোপনে থাকার পর সিলেট আসেন। ২০০৭ সালের ২৯ জানুয়ারি সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে তার নানাবাড়ি ভারতের করিমগঞ্জে চলে যান হারিছ চৌধুরী। এর কিছু দিন পর তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও বস্তাভর্তি টাকা পাঠানো হয় তার কাছে। সেখান থেকে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান তিনি। তারপর বড় ভাই আবদুল মুকিত চৌধুরীর কাছে ইরানে চলে যান। পরে মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ঘুরে ফের ফিরে যান যুক্তরাজ্যে। এখন কোথায় তিনি। এ কথা জানে না তার আত্মীয়স্বজন। সেই ২০০৭ সাল থেকে আট বছর তিনি নিজেকে লোকচক্ষু থেকে লুকিয়ে রেখেছেন।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।