মহেশখালীর মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ১৪’শ ১৪ এককর জমির ভূঁয়া চিংড়ি প্রজেক্ট দেখিয়ে ২৩ কোটি টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে লুটপাট করা মামলায় মাতারবাড়ীর রাঘব বোয়ালরা ধরাশায়ী বলে জানা গেছে। কক্সবাজার ২জন চট্টগ্রামে একজন আটক হওয়ায় মাতারবাড়ী রাঘব বোয়ালদের মাঝে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, গত ০৭.১২. ২০১৪ সালের দিকে মাতারবাড়ীর কৃতি সন্তান কাইছার চৌধুরী বাদী হয়ে কক্সবাজার জর্জ আদালতে ভূয়া চিংড়ি প্রজেক্ট দেখিয়ে ২৩ কোটি টাকার লুটপাটের অভিযোগ এনে তৎকালীন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনসহ মাতারবাড়ী প্রভাবশালী চক্রটির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। মামলাটি বিজ্ঞ আদালত আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। দুনীর্তি দমন কমিশন (দুদক) মামলাটি দির্ঘদিন তদন্তে শেষে গত ২৮.০৩ ২১০ ইং আদালতে র্চাজশিট দাখিল করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে আদালতে চাজশিট দাখিল করায় প্রচার পেলে মাতারবাড়ীর সেসব সুবিধাভোগী রাঘব বোয়াল’রা আতংকে রয়েছে বলে প্রচার পায় এলাকায়। ইতোমধ্যে গ্রেফতার এড়াতে বিভিন্ন জায়গায় তারা দৌঁড় ঝাপও শুরু করেছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে খবর এসেছে।
অপরদিকে ২০টি মামলাকে এক মামলা করার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক চট্টগ্রাম-২ এর উপ-পরিচালক ছৈয়দ আহমদ বলেন, মহেশখালীর কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতায় অধিগ্রহণকরা জমির বিপরীতে ২৩৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয়। এর মাঝে ২৫টি অস্থিত্তহীন চিংড়ি ঘের দেখিয়ে ৪৬ কোটি ২৪ লাখ ৩ হাজার ৩২০ টাকা ক্ষতিপূরণ নিজেদের করায়ত্বে নেয় কক্সবাজার ভূমি অধিহন শাখার উচ্চমান সহকারি আবুল কাশেম মজুমদারের নেতৃত্বে ৩৬ জনের একটি সিন্ডিকেট। এ থেকে কৌশলে তারা ১৯ কোটি ৮২ লাখ ৮ হাজার ৩১৫ টাকা উত্তোলনও করে ফেলে। বাকি টাকার জন্য ইস্যুকরা হয়েছিল আরো ৫টি চেক। এরই মধ্যে নালিশ আসলে ৫টি চেকের আওতায় নির্ধারিত ক্ষতিপূরণের বাকি টাকা আটকে দেয়া হয়।
তিনি আরো জানান, প্রাথমিক তদন্তে এটি প্রমাণ হলে নিজেরা বাঁচতে তৎকালীন ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা (এলএও) মাহবুবুর রহমান ক্ষতিপূরণ তুলে নেয়া ঘের মালিক দাবিদারদের বিরুদ্ধে সরকারি টাকা আদায়ে ২০ টি মামলা দায়ের করে। এটি তদন্ত করতে গিয়ে ২০টি মামলাকে একটি মামলায় একিভূত করা হয় (নম্বর-১৯, ৭/১২/২০১৪)। পূর্ণ তদন্তে উল্লেখিত ২৫ চিংড়ি ঘেরের কোন অস্থিত্বই পাওয়া যায়নি। তাই ঘেরের বিষয়টি প্রথম উপস্থাপনকারি হিসেবে আটক উচ্চমান সহকারি আবুল কাশে মজুমদারকে মূল হোতা হিসেবে গণ্য করা হয়। এসব কাগজ তৈরীতে জড়িত আইনজীবিসহ ৩৬জনকে অভিযুক্ত হিসেবে পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে অভিযোগপত্র দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মাঝে সোমবার কক্সবাজার থেকে জেলা প্রশাসক এলএ শাখার উচ্চমান সহকারী আবুল কাশেম মজুমদার ও এড: নুর মো: সিকদারকে এবং চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের সাবেক সার্ভেয়ার ফখরুল আটক করেছে দুদক।
মহেশখালীর মাতারবাড়ী কাইছার চৌধুরী দায়ের করা ২৩ কোটি টাকা লুটপাটের মামলা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে মহেশখালী উপজেলা নিবার্হী অফিসার আবুল কালাম বলেন, এ ব্যাপারে আমার জানা নেই, তবে কোন নোটিশ আসলে জানতে পারব।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আবুল কাশেম অভিযুক্ত হওয়ার পর পরই বহিস্কৃত। অনৈতিক ভাবে সরকারি টাকা আত্মসাত কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তাই অভিযুক্ত সবার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।