গৃহকর্মীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে স্বামীকে তালাক দিয়েছেন কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হেলেনাজ তাহেরা। এতে করে দীর্ঘ ২৫ বছরের দাম্পত্যজীবনের সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে তাদের। গত ২৫ মে কক্সবাজার নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে হাজির হয়ে স্বামী আবুল হাশেমকে তালাক প্রদানের হলফনামায় স্বাক্ষর করে দাম্পত্য বিচ্ছেদ ঘটান হেলেনাজ তাহেরা। গত ২২ জুন তালাকের হলফনামা পৌঁছে কক্সবাজার পৌরসভায়। পৌর মেয়র সচিবকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নোট দেন।
কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র সরওয়ার কামাল বলেন, এ ধরনের ডিভোর্সের কাগজ পেলে স্বাভাবিকভাবেই আমরা দু’পক্ষকে ডেকে সমঝোতার চেষ্টা করি। কিন্তু হেলেনাজ তাহেরার বিষয়টি আমি যতদূর জেনেছি তাদের মধ্যে বুঝাপড়া হয়ে গেছে। এ কারণে কাউকে আর নোটিশ দেয়া হয়নি।
তালাক হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৯১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মহেশখালীর মাতারবাড়ী ইউনিয়নের মৌলানা আক্তার হোসেনের মেয়ে হেলেনাজ তাহেরার সাথে ৬৯২ রেজিঃযুক্ত নিকাহ নামা মূলে কক্সবাজার পৌরসভার চাউল বাজার এলাকার মৃত দানু মিয়ার ছেলে আবুল হাশেমের ইসলামী শরিয়ত মতে বিবাহ হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের সংসারে ২ কন্যা ও ২ ছেলে সন্তান রয়েছে। দীর্ঘ দাম্পত্য জীবন সুখে কাটলেও ২০১৪ সালের দিকে এসে হঠাৎ পরিবারে অশান্তি শুরু হয়।
ওই বছরের ২৭ অক্টোবর রাত ২ টার দিকে স্বামী আবুল হাশেমকে বাসার কাজের মেয়ের সাথে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত অবস্থায় হাতে নাতে ধরেন ভাইস চেয়ারম্যান হেলেনাজ তাহেরা। এ ঘটনায় লজ্জিত হওয়ার পরিবর্তে স্বামী তাকে বিভিন্ন ভাষায় গালাগাল করে। ৬/৭ বছর ধরে এ সম্পর্ক চলছে উল্লেখ করে পারলে নালিশ দিতে বলে। এরপর থেকেই মদপান করে রাতে বাড়ি ফিরে কারণে অকারণে তার উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে টানা ১০ দিন তালাবদ্ধ ঘরে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালায়। অনেক সহ্য করে এবং বুঝিয়েও কাজ না হওয়ায় স্বামীর ববর্র নির্যাতনে নিজের প্রাণহানী ঘটার আশঙ্কায় ২০১৫ সালের ২৫ মে নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে স্বামীকে তালাক দেন হেলেনাজ তাহেরা।
এ ব্যাপারে জানতে কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হেলেনাজ তাহেরাকে ফোন করে ও নানাভাবে খোঁজ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। ফলে তার বক্তব্য প্রকাশ করা যায়নি।
তালাকের বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল হাশেম বলেন, এটি আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি মাত্র। আমাদের মধ্যে সমঝোতা হয়ে গেছে। আমার স্ত্রী এখন আমার বাড়িতেই রয়েছে। পৌরসভায় তালাকের হলফনামা পৌঁছার বিষয় জানতে চাইলে তিনি এটিকে তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে অবহিত করেন।
অপরদিকে, হেলেনাজ তাহেরা বাড়িতে থাকার কথা বলা হলেও তার সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি হেলেনাজ তাহেরার সাথে কথা বলার ব্যবস্থা করতে পারেননি।
সূত্র জাগো নিউজ
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।