২৭ নভেম্বর, ২০২৪ | ১২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

৩শ’ আসনে জাপার প্রার্থী বাছাই শেষ পর্যায়ে

আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে এককভাবে লড়তে ৩শ’ আসনে আগাম প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছে জাতীয় পার্টি। ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৫০ নতুন প্রার্থীর একটি খসড়া তালিকা করেছেন দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। বাকি আসনগুলোর খসড়া তালিকার কাজ চলছে— এমন তথ্য মানবকণ্ঠকে জানিয়েছেন জাপার প্রভাবশালী এক প্রেসিডিয়াম সদস্য। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই নেতা বলেন, বাছাই তালিকায় দেখা গেছে, দলের চেয়ারম্যান লালমনিরহাট-১, রংপুর-৩ ও ঢাকা-১৭ আসন থেকে নির্বাচন করবেন।
এ ব্যাপারে দলের মহাসচিব এবিএম রহুল আমিন হাওলাদার মানবকণ্ঠকে বলেন, জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আগাম প্রার্থী ঠিক করতে বিভাগওয়ারী কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। শিগগিরই এ ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে তিনি জানান।
পার্টির চেয়ারম্যানের এক উপদেষ্টা বলেন, আগামী নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তবে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে প্রার্থীদের তালিকা। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার কাছাকাছি বা সময়-সুযোগ দেখে পার্টির চেয়ারম্যান প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করবেন। প্রার্থী তালিকা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে হলেও শিগগিরই এরশাদ তালিকা প্রকাশ না করার প্রতি ইঙ্গিত দেন বলেও জানান চেয়ারম্যানের এই উপদেষ্টা।
এদিকে জাপার নতুন খসড়া তালিকায় বর্তমান ৩৩ এমপির মধ্যে কয়েকটি আসনে প্রার্থী পরিবর্তন হতে পারে— এমন তথ্য জানান এরশাদের এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি। তিনি বলেন, নির্বাচন ঘনিয়ে আসার আগেই দলীয় ইনভেস্টিগেশন করার পর অনেকের ভাগ্য পরিবর্তন হতে পারে, আবার অনেকের কপাল পুড়তে পারে। তিনি আরো জানান, নতুন করে পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে রংপুর বা লালমনিরহাটের যে কোনো একটি আসনে প্রার্থী দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পার্টির চেয়ারম্যান। এ ছাড়া সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত নারী এমপিরাও আগামী নির্বাচনের সরাসরি প্রার্থী হতে পারেন বলে তিনি জানান।
দশম সংসদ নির্বাচনে ২৯৯ প্রার্থীর মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রায় ৬০টি আসনে পরিবর্তন হতে পারে— এমন তথ্য জানান দলটির এক কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, পার্টির মধ্যে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির জন্য এ কৌশল। দলটির একটি সূত্র জানায়, পরিবর্তিত এলাকাগুলোতে জাপার নেতারা সাংগঠনিক ব্যর্থতার পাশাপাশি নেতায় নেতায় দ্বন্দ্ব জড়িয়ে পড়েন। ফলে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে অন্তঃকলহ লেগে আছে। সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দ্বন্দ্ব নিরসন করার জন্য এসব আসনে নতুন প্রার্থী দেবে জাপা।
অপরদিকে ১ জানুয়ারি পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশে এরশাদ বলেন, জাতীয় পার্টির নির্বাচনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এককভাবে নির্বাচন করে আমরা সবচেয়ে ভালো ফল করেছি। কিন্তু জোটগতভাবে নির্বাচন করে আসনের দিক থেকেও যেমন আমরা কম পেয়েছি, আবার দলগতভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তবে, পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হয়েছে বলে অনেক সময় ক্ষতি জেনেও তা মেনে নিতে হয়েছে। এবার আমি সুস্পষ্টভাবে জানাতে চাই, আর আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে চাই না। আগামী নির্বাচনে দলের তৃণমূল পর্যায় থেকে মতামত নিয়ে প্রত্যেক আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মনোনীত করতে চাই। আপনারা নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে উপযুক্ত প্রার্থী মনোনীত করে আমার কাছে প্রস্তাব পাঠাবেন।
রংপুরে এরশাদ বলেছিলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি কোনো জোটে যাবে না। এককভাবে অংশ নেবে। তিনশ’ আসনেই প্রার্থী দেবে। নেতাকর্মীদের সেভাবেই প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান এরশাদ। তিনি আরো বলেন, জাতীয় পার্টি মহাজোটে নেই, আছে বিরোধী দলে।
এ ব্যাপারে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুর সবুর আসুদ বলেন, এককভাবে নির্বাচনের জন্য সব সময় জাতীয় পার্টি প্রস্তুত। তিনি বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্দেশের পর শীর্ষ নেতারা এখন এলাকামুখী কাজ করছেন। অন্যদিকে আগামী নির্বাচনে প্রায় ৫০টি আসনে জাপার প্রার্থী পরিবর্তন হতে পারে। বেশ কয়েকটি জেলার নেতারা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দলে যোগদান করার পর ওইসব এলাকায় প্রার্থী পরিবর্তন হচ্ছে। পার্টির কেন্দ্রীয় কয়েক নেতা ও মফস্বলের একাধিক জেলা নেতার দলত্যাগ বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেন, যারা দল ত্যাগ করে গেছেন, তারা নিজেদের কপাল পুড়েছেন। পার্টির কিছুই হবে না। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে জেগে উঠেছে জাতীয় পার্টি। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে হবে দেশের টার্নিং পয়েন্ট।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।