২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি   ●  মেরিন ড্রাইভে ইয়াবাসহ নারী আটক   ●  সড়ক দখল করে নৈরাজ্য সৃষ্টি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়ার অভিযোগে কক্সবাজারে আ.লীগের ৯১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা   ●  রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক চোরা চালানের গডফাদার ফরিদ ফের সক্রিয়   ●  কক্সবাজার সমবায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে কবির, আফসেল ও রাশেলকে প্রতিনিধি মনোনয়ন।

৫০ হাজার মানুষের জীবন-জীবিকার স্বার্থে সেন্টমার্টিনের জেটি সংস্কারের দাবি

বিশেষ প্রতিবেদক:

দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। আর এই দ্বীপটির প্রতি আকর্ষণ বেশি পর্যটকদের। কিন্তু এই দ্বীপে পর্যটকদের নিরাপদ অবতরণের একমাত্র জেটি এখন চুড়ান্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিধ্বস্ত এই জেটি যেন সেন্টমাটিনবাসী ও পর্যটকদের জন্য মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে।

সামনের পর্যটন মৌসুম শুরুর আগে এই জেটি সংস্কার করা না গেলে পর্যটক ও দ্বীপবাসির জীবন ও জীবিকা ঝুঁকির মুখে পড়বে।

‘পদক্ষেপ বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন বাঁচাতে বিধ্বস্ত জেটিটি অবিলম্বে সংস্কারের দাবি তুলেছে। তাদের মতে, সংস্কার না হলে পর্যটনখাতে জড়িত অন্তত ৫০ হাজার লোকের জীবন-জীবিকা ও কর্মসংস্থান ঝুঁকিতে পড়বে।

আগামি ১৫ অক্টোবরের মধ্যে জেটির মেরামত করা না গেলে পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি সরকার বিপুল রাজস্ব হারাবে বলেও দাবি করেছেন সংগঠনটির সভাপতি ও পর্যটন ব্যবসায়ী তোফায়েল আহমদ।

 

শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে পদক্ষেপ বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা সভাপতি তোফায়েল আহমদ এমন মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক পারাপারে ৭-৮টি জাহাজ, ২০০-৩০০ বাস মিনিবাস, ১০০ মাইক্রোবাস, ২০০ ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান, ৪০০ ট্যুরিস্ট গাইড এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ ৫০ হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা পর্যটন ব্যবসাকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয়। এ সব কর্মকাণ্ডের মাধ্যম একমাত্র সেন্টমার্টিন জেটি। কিন্তু অনেকদিন ধরে জেটিটির সংস্কার নেই।

তাঁর মতে, দ্বীপের প্রবেশদ্বার জেটি ছাড়া দ্বীপ যেন এক্কেবারে অচল।

পর্যটন উদ্যোক্তা তোফায়েল আহমেদ বলেন, গেল কয়েকটি বছরে বয়ে যাওয়া ঘুর্ণিঝড়-জ্বলোচ্ছ্বাসের তান্ডবে সেন্টমার্টিন জেটির অনেকাংশ ভেঙে পড়েছে। নষ্ট হয়ে গেছে পল্টুন। সর্বশেষ গত ২৭ মে ঘুর্ণিঝড় ‘ইয়াসে’র প্রভাবে জেটিটি আরেক দফা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমনকি জেটির পাশে ট্রলার ভিড়ানোর অংশ পর্যন্ত ভেঙে গেছে। যে কারণে অনেকটা চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

তার মতে, দ্বীপকে ঘিরে পর্যটন ব্যবসায়ীরা দীর্ঘ দেয়াদি বিনিয়োগ করেছেন। তারা আজ দিশেহারা।

তিনি বলেন, দ্বীপের কোন মানুষ অসুস্থ হলে জেটি ব্যবহার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য টেকনাফে যাওয়া কঠিন। দ্বীপবাসী তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য আনা-নেয়া করতে পারেন না। জেটির কারণে দ্বীপের লোকজন মারাত্মক ক্ষতি ও ভোগান্তির শিকার।

তার দাবি, এই পরিস্থিতিতে জেটি পারাপার কোনভাবেই সম্ভব নয়। এই খাতে সম্পৃক্ত প্রায় ৫০ হাজার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির শিকার হবে।

 

কক্সবাজার শহরের একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দ্বীপের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন পদক্ষেপ বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা সভাপতি তোফায়েল আহমেদ।

তিনি বলেন, কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের বিরাট একটা অংশ সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যান। তাদের জন্য দ্বীপে গড়ে ওঠেছে দুই শতাধিক হোটেল, মোটেল ও গেস্টহাউজ। রয়েছে শতাধিক রেস্তোরাঁ। বর্তমানে দ্বীপবাসীর একমাত্র আয়ের উৎস পর্যটন। তাই পর্যটনকে পুঁজি করে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্রচুর বিনিয়োগ রয়েছে।

তোফায়েলের মতে, বছরে মাত্র ৫ মাসের ব্যবসার আয়ের টাকায় ১২ মাস চলে দ্বীপের বাসিন্দারা। জেটিটি দ্রুত সময়ে সংস্কার না করলে বন্ধ হয়ে যাবে আয়ের উৎস। রাজস্ব বঞ্চিত হবে সরকার।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কক্সবাজার জেলা পরিষদ প্রতিবছর প্রায় এক কোটি টাকায় এই জেটি ইজারা দেয়। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তরের দোহাই দিয়ে জেটি পূণঃনির্মাণ কিংবা সংস্কার করছে না। এতে দিনে দিনে খসে পড়ছে পুরনো সেই জেটি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, পরিবেশ বিবেচনা করলে পর্যটন এগিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। পরিবেশ ও পর্যটন সমঝোতা করতে চলতে হবে।

 

তিনি সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, যারা দিনে গিয়ে দিনে ফেরেন এমন পর্যটকদের নিয়ন্ত্রণ করা ঠিক হবে না। তবে দ্বীপে যাত্রীযাপন সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন পদক্ষেপ বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা শাখার উপদেষ্টা এমএ হাসিব বাদল, এসএম কিবরিয়া খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম তোহা, সহ-সভাপতি ইফতিকার আহমদ চৌধুরী, এসএ কাজল, নুরুল আলম রনি ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. আল আমীন বিশ্বাস তুষার।

পর্যটন ব্যবসায়ী ও ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে সাহাব উদ্দিন জনি, জামাল উদ্দিন, জনি ভুইয়া, ফোরকান জুয়েল এবং বিভিন্ন পর্যটনসেবী প্রতিষ্ঠানের ট্যুর গাইডরা উপস্থিত ছিলেন।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।