নিবন্ধনের জন্য ৮ হাজারের বেশি অনলাইন নিউজ পোর্টাল সরকারের কাছে আবেদন করেছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। সোমবার ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কার্য-অধিবেশন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ডিসি সম্মেলনে নিউ মিডিয়া এবং এর চ্যালেঞ্জের প্রসঙ্গ এসেছে, অনলাইন মিডিয়ার ক্ষেত্রে শৃঙ্খলার বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে সমস্ত অনলাইনগুলোকে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনার জন্য দরখাস্ত আহ্বান করেছি। আজকে (সোমবার) দরখাস্ত করার শেষ দিন। এ পর্যন্ত আমাদের কাছে আট হাজারের বেশি দরখাস্ত জমা পড়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা এগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যেগুলোর আসলে প্রয়োজন আছে, যেগুলো অনলাইন হিসেবে সত্যিকার অর্থে কাজ করতে পারবে বা করার সক্ষমতা রাখে বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে দরখাস্ত করা হয়নি সেগুলোকে আমরা রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনব। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই করে রেজিস্ট্রশন দেওয়া হবে। আমরা আশা করছি যখন এই রেজিস্ট্রেশনটা হবে সেখানে একটি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে।
নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ করতে কত দিন লাগবে- এ প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, আট হাজার তো, যাচাই-বাছাই করতে একটু সময় লাগবে। যত দ্রুত সম্ভব, যেগুলো সত্যিকার অর্থে অনলাইন হিসেবে কাজ করে তাদেরকে সহসাই এই রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনব। যেগুলোর ব্যাপারে ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন আছে সেগুলোকে তো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে।
অনলাইন গণমাধ্যমগুলো নিবন্ধনের জন্য গত ৩০ জুন পর্যন্ত আবেদন জমা দেওয়ার সময় বেঁধে দেয় তথ্য মন্ত্রণালয়। পরে আরও ১৫ দিন সময় বাড়ানো হয়।
ডিসিদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, “নিউ মিডিয়ার যে চ্যালেঞ্জ, সোশাল মিডিয়ার যে চ্যালেঞ্জ, সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে, এটি শুধু বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ নয়, এটি সমগ্র পৃথিবীতেই একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
তিনি আরো বলেন, এটি ইউরোপে চ্যালেঞ্জ, নর্থ আমেরিকসহ সব দেশেই এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা এই চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়েই যাচ্ছি। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলেছিলাম,… আইসিটির সঙ্গে আমরা সঠিক সময়ে যুক্ত হতে পেরেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল জনগণ পাচ্ছে। আজকে সোশাল মিডিয়ার ব্যাপক বিস্তৃতি, এটি যেমন মানুষের জন্য সুযোগকে অবারিত করেছে একই সাথে অনেক চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে দাঁড় করিয়েছে সেগুলো সমন্বিতভাবে আমাদেরকে মোকাবেলা করতে হবে। এই সুযোগটিকেও আমাদের অবারিত রাখতে হবে।
জেলায় জেলায় তথ্য ভবন নির্মাণ এবং ভবনের সঙ্গে মিলনায়তন রাখার ডিসিদের দাবির বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এলক্ষ্যে আমরা ২৭ জেলায় কমপ্লেক্স নির্মাণের প্রকল্প নিয়েছি, আমরা সব জেলায় করতে চাই। এজন্য ডিসিদের সব জেলায় স্থান নির্বাচন করতে বলেছি।
ক্যাবল নেটওয়ার্ক পরিচালনার আইন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমরা কয়েক দিন আগ থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছি। টেলিভিশন চ্যানেলের ক্রম নির্ধারণের ক্ষেত্রে আগে একটি বিশৃঙ্খলা ছিল। বাংলাদেশের চ্যানেলের মধ্যে হঠাৎ বিদেশি চ্যানেল ঢুকে যেতো। ক্যাবল নেটওয়ার্ক যারা পরিচালনা করেন তাদের সঙ্গে সম্পর্ক বা অন্যকোনো বিষয়ের আলোকে সেখানে সিরিয়াল নির্ধারণ করা হতো। এখন সেখানে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিদেশি চ্যানেলে বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচারে আগেও জরিমানার নির্দেশনা ছিল, আজকেও দিয়েছি।
আইসিটি অ্যাক্ট নিয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কিনা- প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বলেন, আইসিটি অ্যাক্ট হচ্ছে একজন সাংবাদিক, একজন গৃহিনী, একজন দিনমজুর, সরকারি কিংবা বেসরকারি চাকরিজীবীর নিরাপত্তার জন্য। অর্থাৎ প্রত্যেকটি মানুষের ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। এটি যাতে অপব্যবহার না হয় সেজন্য আমরা সেখানে আলোচনা করেছি।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।