উত্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি মহাসড়কে ২৪ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন ডাকা ধর্মঘটে সকাল থেকে যানচলাচল বন্ধ ছিল। মঙ্গলবার(২৯ নবেম্বর) ভোর ৬টা থেকে বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ৯ দফা দাবিতে টার্মিনাল নির্মাণ, পুলিশী হয়রানি বন্ধসহ এই কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছে সংগঠনটি। পরিবহণ ধর্মঘটের কারনে শহরের চাকুরীজিবী লোকজনের সীমাহিন দুর্ভোগে পড়েছে। ধর্মঘটের কারনে অনেকেই দুরদুরান্তে কর্মস্থলে যোগ দিতে পারেনি।
সকাল থেকে উত্তর চট্টগ্রাম সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ ছিল।এতে উত্তর চট্টগ্রামের জীবন যাত্রা অচল হয়ে পড়ে। খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি সড়কে কোনো যানচলাচল করতে দেখা যায়নি। পরিবহন শ্রমিক লোকজন রাস্তায় ব্যারিকেট দিয়ে ধরনের যানচলাচল বন্ধ করে দেয়। তবে এম্বুলেন্স,সংবাদপত্র,স্কুল বাস ও জরুরী পরিবহণ গুলো চলাচল করছে।
পরিবহণ শ্রমিক নেতারা বলছেন তাদের দাবী মেনে না নিলে ধর্মঘট তাদের কর্মসুচী অনুযায়ী চলবে।
গত সোমবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির কথা জানান সংগঠনের নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফেডারেশনের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মো. মুছা।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের এসব সমস্যা সমাধানে সময় হাতে রেখে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দেয়াসহ নিয়মতান্ত্রিকভাবে দাবি জানানো হয়েছে। তারপরও সরকার এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ায় বাধ্য হয়ে আমরা ধর্মঘট কর্মসূচির ঘোষণা করছি।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসলেও উত্তর জেলার জন্য বাস- কোচ টার্মিনাল হয়নি। বন্দর এলাকায় ট্রাক টার্মিনালও নির্মিত হয়নি। মহানগরীতে যত্রতত্র অবৈধ পার্কিং হয়, পুলিশের পকেট ভরে কিন্তু পার্কিং টার্মিনাল হয় না।
তিনি আরও বলেন, অটোরিকশা মালিকসহ প্রশাসনের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তাদের ষড়যন্ত্রে হাজার হাজার শ্রমিক এখন বেকার। চার হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
ধর্মঘট আহ্বানকারী সংগঠনের দাবির মধ্যে আছে, বাস, ট্রাক, প্রাইম মুভার ও ট্রেইলারের জন্য টার্মিনাল নির্মাণ, অটোরিকশা ও অটোটেম্পুর জন্য পার্কিং স্পট, আনরেজিস্ট্রার্ড সিএনজিচালিত অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন প্রদান ও মালিকের জমা ৬’শ টাকা নির্ধারণ, ভুয়া সংগঠনের নামে সন্ত্রাসী কায়দায় পরিবহন শ্রমিক সংগঠন দখলদারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, বিআরটিএ ও যুগ্ম শ্রম পরিচালকের দপ্তরের দুর্নীতি-হয়রানি-অব্যবস্থাপনা বন্ধ, পরিবহন শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দিয়ে কল্যাণ তহবিলের টাকা পাওয়া নিশ্চিত করা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সভাপতি হাজী রুহুল আমিন, ফেডারেশনের আঞ্চলিক কমিটির কার্যকরী সভাপতি রবিউল মাওলা, আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অলি আহমদ, আন্দোলন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান আবদুস সবুর, সদস্য সচিব হুমায়ুন কবিরসহ অন্যান্যরা ।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১৬ই নভেম্বর পুলিশি হয়রানি বন্ধ, দৈনিক জমা নির্ধারণসহ ৮ দফা দাবিতে ২৯ শে নভেম্বর ভোর থেকে বৃহত্তর চট্টগ্রামে ২৪ ঘণ্টা অটোরিকশা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলো চট্টগ্রাম অটোরিকশা অটোটেম্পু শ্রমিক ইউনিয়ন নামের একটি সংগঠন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।