২৭ নভেম্বর, ২০২৪ | ১২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমার নাগরিকদের চিহ্নিত করা হচ্ছে,৬কমিটি

বাংলাদেশে বিধিবহির্ভূতভাবে অনুপ্রবেশকারী ‘মিয়ানমার’ নাগরিকদের চিহ্নিত করতে যাচ্ছে সরকার। এজন্য ৬টি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব কমিটি বিভাগীয়, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কাজ করবে। বিভাগীয় পর্যায়ের কমিটিতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারকে সভাপতি করে ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্যদিকে জেলা পর্যায়ের কমিটিতে জেলা প্রশাসক (ডিসি)-কে সভাপতি করে ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত ২৬শে জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জেলা ম্যাজিস্ট্রেসি পরিবীক্ষণ অধিশাখা থেকে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমার নাগরিকদের চিহ্নিতকরণ সংক্রান্ত বিভাগীয় কমিটিতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, বিজিবির রিজিয়ন কমান্ডার, উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক, শরণার্থী ও প্রত্যাবাসন কমিশনার, ডিজিএফআইয়ের বিভাগীয় অফিস প্রধান, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জোনাল কমান্ডার, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও বান্দরবান পার্বত্য জেলার ডিসি, আনসার ও ভিডিপির পরিচালক এবং আঞ্চলিক বন সংরক্ষককে সদস্য করা হয়েছে। এ কমিটিতে সদস্য সচিব করা হয়েছে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক)-কে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এসব কমিটি প্রয়োজনে যেকোনো কর্মকর্তা/ জনপ্রতিনিধি/ গণ্যমান্য ব্যক্তিকে সদস্য হিসেবে কো-অপ্ট করতে পারবে। উচ্চপর্যায়ের এ কমিটি চার ধরনের কাজ করবে। তারা অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমার নাগরিকদের চিহ্নিতকরণ সংক্রান্ত জেলা কমিটিকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দেবে। পাশাপাশি জেলা কমিটির কার্যপরিধিভুক্ত যেকোনো বিষয় আলোচনা এবং কমিটির কার্যক্রম সম্পর্কিত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/ বিভাগ/দপ্তরে পাঠাবে। এছাড়া এ কমিটি প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সরকারের কাছে সুপারিশ দিতে পারবে এবং বিশেষ প্রয়োজন ও অবস্থা অনুযায়ী কমিটির সভা আহ্বান করতে পারবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে- কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও বান্দরবান পার্বত্য জেলার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ডিসিকে সভাপতি করে এ কমিটিতে পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, বিজিবির সেক্টর কমান্ডারের প্রতিনিধি/ কমান্ডিং অফিসার, ডিজিএফআইয়ের প্রতিনিধি, এনএসআইয়ের যুগ্ম/ উপ- পরিচালক, আনসার ও ভিডিপির জেলা কমাড্যান্ট, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা, কোস্ট গার্ডের স্টেশন কমান্ডার, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তাকে সদস্য করা হয়েছে। এ কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)-কে। এ কমিটিকে ১১ ধরনের কার্যপরিধি ঠিক করে দেয়া হয়েছে। কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, সবস্তরের প্রতিনিধি নিয়ে মিয়ানমার নাগরিকদের অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ করতে সমন্বিত ও যথাযথ ব্যবস্থা নেবে এ কমিটি। এছাড়া জনসাধারণ ও গোয়েন্দাদের দিয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমার নাগরিক চিহ্নিত এবং জনগণের সহযোগিতায় তারা যাতে মূল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে যেতে না পারে তার প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেবে এ কমিটি। অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমার নাগরিকদের মানবিক সহায়তা দিতে প্রয়োজনীয় খাদ্য ও স্থায়ী ক্যাম্পের আশপাশে প্রচলিত মেইক শিফট ক্যাম্পের মতো অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপনের কাজ করবে এ কমিটি। এছাড়া অবৈধ মিয়ানমার নাগরিকদের তালিকা তৈরি করতে কর্তৃপক্ষকে সহায়তা এবং চিহ্নিতরা নির্ধারিত এলাকার বাইরে যেতে চাইলে আইন প্রয়োগ করে তাদের গ্রেপ্তার বা ক্যাম্প এলাকায় পুশ করার ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে মিয়ানমার থেকে বিধিবহির্ভূত ভাবে আসা রেজিস্টার্ড ও আন-রেজিস্টার্ড মিয়ানমারের শরণার্থীদের পর্যায়ক্রমে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার ঠ্যাঙ্গার চরে স্থানান্তরের সহায়তা করবে এ কমিটি। উপজেলা, পৌরসভা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি সম্পর্কে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও বান্দরবান পার্বত্য জেলার জন্য গঠিত কমিটির সভায় আলোচনা করে সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটি গঠন করতে হবে। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যথাক্রমে জেলা ও উপজেলা কমিটির সভায় উপদেষ্টা হিসেবে অংশ নেবেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা কমিটির সভাপতি, মেয়র সংশ্লিষ্ট পৌরসভা কমিটির সভাপতি, ওয়ার্ড কমিশনার সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি এবং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি হবেন। জেলা কমিটি উপজেলা, পৌরসভা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটিগুলোর কার্যক্রম পরীক্ষা করবে। এসব কমিটি গঠনের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের মংডু এলাকায় সাম্প্রতিক সময়ে সৃষ্ট অস্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে মিয়ানমারের প্রায় ৬৫ হাজার রাখাইন মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত নাগরিক বিধিবহির্ভূত ভাবে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ-উখিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। মিয়ানমারের ওইসব নাগরিকরা কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন অঞ্চল বিশেষত টেকনাফ এবং উখিয়ার নয়াপাড়া, লেদা ও কুতুপালংয়ের নিবন্ধিত ক্যাম্পে শরণার্থী হিসেবে অবস্থান করছে। এদের মধ্যে কিছু শরণার্থী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাংলাদেশের মূল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমারের নাগরিক অবৈধভাবে প্রবেশ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাদের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, সংক্রামক ব্যাধির বিস্তার, স্থানীয় জনগণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে গত ৫ই জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকের ভিত্তিতেই কমিটিগুলো গঠন করা হয়েছে।মানবজমিন

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।