২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি

আগামীকাল পবিত্র ঈদুল আজহা

ঈদুল ফিতরের মতো নতুন চাঁদ দেখতে হবে না। দিনক্ষণ আগেই ঠিক। আগামীকাল সোমবার পালিত হবে মুসলমানদের সর্ববৃহৎ দুটি ধর্মীয় উৎসবের একটি ঈদুল আজহা। এই দিনে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় পশু জবাই করে কোরবানি
দেবেন সামর্থ্যবান মুসলমানরা। এরই মধ্যে কোরবানির পশু কিনে ফেলেছেন অনেকে। যারা কেনেননি তারা আজ রবিবার শেষ দিনে হাট থেকে পশু কিনবেন। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে গ্রামের বাড়িতে ছুটছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। বাণীতে রাষ্ট্রপতি কোরবানির মর্ম অনুধাবন করে সমাজে শান্তি ও কল্যাণের পথ রচনা করতে সবাইকে সংযম ও ত্যাগের মানসিকতায় উজ্জীবিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অপর এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পবিত্র ঈদুল আজহার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজের মাধ্যমে বৈষম্যহীন, সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। বাণীতে তিনি বলেন, শান্তি, সহমর্মিতা, ত্যাগ ও ভ্রাতৃত্ববোধের শিক্ষা দেয় ঈদুল আজহা। তাই আসুন, আমরা সবাই পবিত্র ঈদুল আজহার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনকল্যাণমুখী কাজে অংশ নিয়ে বৈষম্যহীন, সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলি।
এ ছাড়া দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার সভাপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রধানরা।
হিজরি সাল অনুযায়ী, জিলহজ মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আজহা পালিত হয়। কাল হিজরি ১৪৪০ সালের জিলহজ মাসের ১০ তারিখ। ঈদুল আজহা আমাদের দেশের মানুষের কাছে ‘কোরবানির ঈদ’ বা বকরা ঈদ নামেও পরিচিত। কোরবানির পশু কেনা, তার যতœ-পরিচর্যাতেই ঈদের মূল প্রস্তুতি ও আনন্দ। এরই মধ্যে সারা দেশে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। রাজধানীতে ট্রাকে করে কোরবানির গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া আনা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। লোকজন রাজধানীর গাবতলী, নয়াবাজার, আফতাবনগর, কমলাপুরসহ বিভিন্ন স্থায়ী-অস্থায়ী হাট থেকে কোরবানিযোগ্য পশু কিনছেন।
রাজধানীর বিভিন্ন বাসাবাড়ির গ্যারেজ দখল করেছে গরু। অনেকে ফুটপাতে বা রাস্তায় শামিয়ানা টানিয়ে কোরবানির পশু রাখছেন। গবাদি পশুর খাদ্য বিক্রি হচ্ছে রাজধানীর অলিগলিতে। কাঁঠালপাতা, খড় ভুসি সবই পাওয়া যাচ্ছে রাজধানীর সর্বত্র। গরু আনা-নেওয়া, গরু কাটা, চামড়া ছাড়ানো, দা-বঁটিতে শান দেওয়ার লোক থেকে শুরু করে মৌসুমি ব্যবসায়ী ও কসাইরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে রাজধানীতে ভিড় জমিয়েছেন।
ঈদের দিনে দুই রাকাত নামাজ পড়া ওয়াজিব। নামাজের জন্য প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ ময়দান, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরের সব ঈদগাহ। ঈদের দিন বৃষ্টি থাকলে নামাজ আদায় হবে বিভিন্ন মসজিদে।
হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর অনুসরণ করেই সারা বিশ্বের মুসলমানরা ১০ জিলহজ কোরবানি দিয়ে থাকেন। হজরত ইবরাহিম (আ.) স্বপ্নে তার প্রিয় বস্তু কোরবানিতে আল্লাহর নির্দেশ পেয়েছিলেন। পরপর দুবার তিনি পশু কোরবানি করেন। তৃতীয়বার একই নির্দেশ পেয়ে তিনি অনুধাবন করেন পুত্র ইসমাইলের চেয়ে প্রিয় তার কিছু নেই। আল্লাহ তাকেই কোরবানি করতে নির্দেশ দিচ্ছেন। হজরত ইবরাহিম (আ.) প্রাণপ্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে আল্লাহর নির্দেশ জানালেন। শিশু ইসমাইল (আ.) নির্ভয় চিত্তে সম্মতি দিয়ে বাবাকে আল্লাহতায়ালার নির্দেশ পালন করতে বলেন। কোরবানি করতে উদ্যত হজরত ইবরাহিম (আ.) পুত্র¯েœহে যেন হৃদয় দুর্বল না হয়ে পড়ে, সে জন্য চোখ বেঁধে নিয়ে পুত্রের গলায় ছুরি চালিয়েছিলেন। আল্লাহতায়ালার অপার কুদরতে এ সময় হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়। এর পর থেকে ইবরাহিম (আ.)-এর উম্মতরা কোরবানি করে আসছেন।
কোরবানি দেওয়া আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য ওয়াজিব। যাদের ওপর যাকাত ফরজ, তাদের ওপর কোরবানিও ওয়াজিব। ১০ জিলহজ পবিত্র ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হলেও পরের দুই দিন, অর্থাৎ ১১ ও ১২ জিলহজেও কোরবানি দেওয়া যায়। সাধারণত উট, দুম্বা, গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া কোরবানি করা হয়।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।