১৯ এপ্রিল, ২০২৫ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩২ | ২০ শাওয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার   ●  পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি’১৮ ব্যাচের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন   ●  উখিয়া সমাজসেবা কর্মচারীর নামে বিধবা ভাতা’র টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ   ●  ‘পটভূমি পরিবর্তনের জন্য সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য’ – সরওয়ার জাহান চৌধুরী

আন্দোলনে শতাধিক প্রাণের বিনিময়ে কী পেল বিএনপি

আন্দোলনে শতাধিক প্রাণের বিনিময়ে কী পেল বিএনপি

‍দীর্ঘ তিন মাস নিজ কার্যালয়ে ‘অবরুদ্ধ’ অবস্থানের পর রবিবার গুলশানে ভাড়া বাসা ফিরোজায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এর আগে সকালে তিনি জিয়া চ্যারিটেবল ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান।

খালেদা জিয়ার বাসায় ফেরার ঘটনাকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার আভাস বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে তাদের মনে প্রশ্নও আছে, দীর্ঘ এ আন্দোলনে বিএনপি কী পেল?

দলের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার বাসায় ফিরে যাওয়ার ঘটনাকে আন্দোলনের ভিন্ন কৌশল বলেই মনে করছেন। দাবি আদায়ের ব্যাপারে সরকারের প্রতি নমনীয় হওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলেও জানিয়েছেন তারা।

তবে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খালেদা জিয়ার বাসায় ফিরে যাওয়ার পেছনে নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে। তিনি বুঝেশুনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখানে সরকারকে ছাড় দেওয়ার কোনো ব্যাপার নয়। কর্মসূচি অব্যাহত আছে, চলবে। দলীয় চেয়ারপারসন সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক। সিটি নির্বাচনও বিএনপির আন্দোলনের অংশ হতে পারে। এখনই ফলাফল নির্ধারণের সময় আসেনি। চলমান আন্দোলন সফল হবেই। আপাতদৃষ্টিতে অনেক কিছুই মনে হতে পারে।

দলটির নেতারা মনে করেন, ২০ দলের জোটের আন্দোলন দমাতে তড়িঘড়ি করে তিন সিটির নির্বাচন করার পরিকল্পনা করে ক্ষমতাসীনরা। বিএনপি নির্বাচনে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ায় সরকার নড়েচড়ে বসে। বিএনপির প্রার্থীদের নানাভাবে হয়রানির চেষ্টা করছে। তবে তাদের দাবি, ইতোমধ্যে সরকার বুঝতে পেরেছে বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় থাকা যায় না। ফলে গতকাল (শনিবার) বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় খুলে দিয়েছে। সিটি নির্বাচনের পর সরকার জাতীয় নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে। দলের যুগ্ম-মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলুও এমনটিই ইঙ্গিত দিলেন।

গত ৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় ২০ দলীয় জোটের পক্ষে গণমাধ্যমে পাঠনোএক বিবৃতিতে বুলু বলেন, ‘সরকার ও নির্বাচন কমিশনের উচিত আসন্ন তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সকল প্রার্থীর সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি সিটি করপোরেশন নির্বাচন সমাপ্তির পর অবিলম্বে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থার অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে জাতিকে ভয়াবহ অনিশ্চয়তার হাত থেকে রক্ষা করা। নির্বাচনে নেতিবাচক পন্থা গ্রহণ করা হলে ভবিষ্যতে উদ্ভূত যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশন তথা সরকার এর দায় থেকে অব্যাহতি পাবে না।’

একতরফা জাতীয় নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে গত ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালনের ঘোষণা দেয় বিএনপি। এর এক দিন আগে ৩ জানুয়ারি রাতে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া। পরে ৫ জানুয়ারি লাগাতার অবরোধের ঘোষণা দেন তিনি। এর পর থেকে তিনি কার্যালয়ে অবস্থান নেন। ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতেও তিনি কার্যালয় ত্যাগ করেননি। এমন কী ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে এবং ২৬ মার্চ স্মৃতিসৌধে যাননি খালেদা জিয়া। বলা হয়েছিল, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের আন্দোলন যৌক্তিক পরিণতিতে সফল না হওয়া পর্যন্ত কার্যালয় ছাড়ছেন না তিনি।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের চলমান আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের হাতে এ পর্যন্ত শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬৩ জন নিজেদের নেতাকর্মী বলে দাবি করেছে বিএনপি। এ ছাড়া আহত হয়েছেন দলের ছয় হাজার নেতাকর্মী, নিখোঁজ রয়েছেন ৫১ জন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্ট ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার কাছে বিএনপির পাঠানো প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

শতাধিক মানুষ নিহত, বহু নেতাকর্মী আহত, অনেকেই নিখোঁজ; তার পরও আন্দোলন থেকে সরে আসেনি বিএনপি। সিটি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলে তিন সিটিতে হরতাল শিথিল করা হয়। তবে অবরোধ অব্যাহত থাকে। এর মধ্যে মামলার হাজিরার তারিখ থাকায় আদালত হয়ে বাসায় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। হঠাৎ করে খালেদা জিয়ার বাসায় ফেরার ঘটনায় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

দীর্ঘ তিন মাস (৯২ দিন) গুলশান-২ এর ৮৬ নম্বর রোডে নিজ রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থানের পর রবিবার সকালে জিয়া চ্যারিটেবল ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসায় মাঠে স্থাপিত ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালত দুদকের করা ওই দুটি মামলায় খালেদা জিয়াকে জামিন দেন। জামিন শেষে খালেদা জিয়া আগের অবস্থান গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে না গিয়ে সরাসরি তার গুলশানের বাসায় (ফিরোজা) চলে যান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) ঘরে ফিরে যাওয়ার পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই, এটা আন্দোলনেরই ভিন্ন দিক।’

জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, “সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা ইতোমধ্যেই ঢাকা ও চট্টগ্রামে হরতালসহ আন্দোলনের কর্মসূচি থেকে ‘রিলাক্সড মুডে’ চলে গেছি। নির্বাচনকেই গুরুত্ব দিচ্ছি। চেয়ারপারসনের ঘরে ফেরা তাই আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না। তবে সবকিছু নির্ভর করছে সরকারের সঠিক পদক্ষেপের ওপর।”

শিগগিরই স্থায়ী কমিটি সঙ্গে খালেদার বৈঠক : চলমান আন্দোলন ও সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সঙ্গে বৈঠক করবেন খালেদা জিয়া। শিগগিরই এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা এ ব্যাপারে দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘ম্যাডাম দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। তবে এখনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি। হয়তো দু-এক দিনের মধ্যেই তিনি বসতে পারেন।’

– See more at: http://www.thereport24.com/article/97988/index.html#sthash.uYUqYhjH.dpuf

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।