২৩ নভেম্বর, ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি   ●  মেরিন ড্রাইভে ইয়াবাসহ নারী আটক   ●  সড়ক দখল করে নৈরাজ্য সৃষ্টি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়ার অভিযোগে কক্সবাজারে আ.লীগের ৯১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

‘আবরার’ হত্যাকারীদের ছেড়ে দেওয়া হোক

আবরার ফরহাদ হত্যার আসামিদের ফাঁসি হোক সবাই চাইছে। আমার ভাই কিনবা ছেলে হলে হয়তো নিজ হাতে শাস্তি তুলে নিতে চাইতাম। চিৎকার করে বলতাম আমি নিজ হাতে তাদের ফাঁসি দিতে চাই। টুকরো টুকরো করে ফেলতে চাই, তাদের অঙ্গ প্রতঙ্গ ক্ষতবিক্ষত করে মৃত্যু দেখতে চাই।

আমি আবরার পরিবার হলে হয়তো কথা গুলো বিশ্বাস যোগ্যতা পেতো কিন্তু এখন বললে সেটার বিশ্বাস যোগ্যতা খুব একটা পাবে না। কথায় আছে, যার ব্যথা নাকি সেই নিজেই বুঝে কথাটা ঠিক নয়। আবরার মৃত্যুর ব্যথায় পুরো বাংলাদেশ কাঁদছে! বরাবরই বাংলাদেশে নিত্যনতুন ঘটনা ঘটছে তবে এতো পীড়া আমাকে কোন ঘটানা দেইনি। তবে এটা স্পষ্ট, ছেলেগুলো এই কাজ নতুন করেনি আগেও করেছে, শুধু কেউ মারা যায়নি বলে বাংলাদেশ জানেনি সেদিন জানলো।

তেমনি স্পষ্ট অভিযুক্তরা আবরার’কে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে মারেনি! আবরার মতোই প্রতিটা ছেলে মেধাবী আর ভদ্র। প্রতিজনই এক একটা গ্রামের উজ্জ্বল মুখ। পারিবারিক ভাবে তারা কেউই খুব উন্নত/ধনী নয়। শুধু মেধা’র জোরেই তারা ঢাকাতে এসেছে, বুয়েটের মতো শিক্ষাঙ্গনে সবার স্থান হয়েছে। সঙ্গ, লোভ, নেশা, রাজনৈতিক যে কারণেই হোক তারা হইতো তাদের ভিত ভুলে গিয়েছিলো বলেই হয়তো এতো ভয়ঙ্কর, নৃশংস হয়ে উঠেছে।

আর আমরা পুরো বাংলাদেশ কষ্টের তাড়নাই ভয়ঙ্কর আর নৃশংস হয়ে উঠেছি! নৃশংস হত্যার বিচার আমার সহজে উলঙ্গ ভাবে নৃশংসতাই চাই। নৃশংসতার বিচার নৃশংসতা হলে কি হবে? আবরার মতো আরও কিছু মেধাবি ছাত্র হারাবে বাংলাদেশ। অভিযুক্তদের পরিবার আবরার পরিবারের মতোই নিঃসঙ্গ, কষ্টে ধুকে ধুকে মরবে। অভিযুক্তদের বাবা-মা কষ্ট, লজ্জা, ঘৃণা, অনুতপ্ত হয়ে জীবন কাটাবে।

আচ্ছা তাতে অভিযুক্তদের কি হলো? – সারাজীবন জেল, নয়তো ফাঁসি। এমন বিচার দেখে তবে কি পুরো সমাজ বদলে যাবে? না যাবেনা, গেলে হয়তো আজ আবরার মৃত্যু হতো না। এদের বিচার একটু অন্য ভাবে হোক। তাদের আইনের তত্ত্বাবধানে রেখে মুক্ত করা হোক। প্রধানমন্ত্রী আবরার পরিবারকে অর্থ না দিয়ে অভিযুক্তদের আজীবনের ইনকাম আবরার পরিবারকে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। এভাবে শাস্তি নয়তো হোক আরও অন্যভাবে তবে এদের মৃত্যু বা আজীবন জেল না হোক, এটাই কাম্য!

জানি, টাকা দিয়ে যেমন ছেলে হারানোর ব্যথা দূর করা সম্ভব নয়। ঠিক তেমনি ছেলে গুলোর শাস্ত্রী মৃত্যুদণ্ড হলেও আবরার শূণ্য স্থান পুরন হবে না, কষ্টও দূর হবে না বরং আরও কিছু পরিবারের নতুন কষ্টের জন্য দিবে। অভিযুক্তদের কর্মের শাস্ত্রী তাদের দেওয়া হোক পরিবারকে নয়। যে পরিবার থেকে তারা এসেছে তাতে বোঝা যায় তাদের ভিত খুব দূর্বল নয়, তারাও মানুষ ছিলেন। ছাড়া পেলে হয়তো তারা তাদের নিজেদের শরীরের বসা মশা মারতেও ভয় পাবে।

সামাজিক কটুক্তি, অবহেলা পরিবারের তিরস্কারে তারা ভালো মানুষ হয়ে উঠবে নয়তো নিজেরাই আত্মহত্যা করবে। অভিযুক্তরা আবরার মতো শারীরিক কষ্ট নয় মানসিক কষ্ট পেয়ে মরুক! নৃশংসতার বিচার নৃশংসতা সমাজের সুফল বয়ে আনে না বরং ভয়হীন করে তুলে।

লেখক: রাশিদুল ইসলাম জুয়েল, সিঙ্গাপুর প্রবাসী সাংবাদিক

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।